গাজীপুরের শ্রীপুরে যাত্রীবাহী তাকওয়া পরিবহন থেকে স্বামীকে ফেলে দিয়ে স্ত্রীকে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
রোববার (৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় গাজীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) এ এস এম শফিউল্লাহ তার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে একই দিন বিকেল সাড়ে ৪টায় গাজীপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তবে ভুক্তভোগী নারী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-৫ আলীফা বেগমের আদালতে এ ঘটনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার দরিপাড়া গ্রামের আলী আকবরের ছেলে রাকিব মোল্লা (২৩), নেত্রকোনা জেলা সদর উপজেলার গুপিরঝুপা গ্রামের মৃত সানোয়ার হোসেনের ছেলে সুমন খান (২০), ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার কাঁঠালকাচারি গ্রামের মৃত কফিল উদ্দিনের ছেলে মো. সজিব (২৩), একই জেলার হালুয়াঘাট উপজেলার বিলডোলা গ্রামের তুলা মিয়ার ছেলে মো. শাহীন মিয়া (১৯) এবং খুলনার রূপসা উপজেলার খান মোহাম্মদপুর এলাকার মৃত নূর আলমের ছেলে মো. সুমন হাসান (২২)।
জানা গেছে, নওগাঁ থেকে ভুক্তভোগী নারী তার স্বামীকে নিয়ে একতা পরিবহনে গত শনিবার ভোর তিনটার দিকে গাজীপুরের বোগড়া বাইপাস এলাকায় নামেন। পরে গত শনিবার রাত ৩টা ১০ মিনিটের দিকে ভালুকার স্কয়ার মাস্টার বাড়ি এলাকার ভাড়া বাসায় ফেরার জন্য তারা তাকওয়া পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। এ সময় বাসটি মাওনা ফ্লাইওভার পার হলে ভুক্তভোগী নারীর স্বামীকে মারধর করে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়। পরে বাসচালক, তার সহযোগীসহ পাঁচজন মিলে ভুক্তভোগী নারীকে ধর্ষণ করে। এরপর মোবাইল ফোন, ব্যাগ, নগদ ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে বাসটি ঘুরিয়ে গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তায় ভুক্তভোগীকে নামিয়ে দেওয়া হয়।
এসপি এ এস এম শফিউল্লাহ জানান, শনিবার (৬ আগস্ট) ভোরে ভুক্তভোগী নারীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে রাজেন্দ্রপুর চৌরাস্তা এলাকায় মহানগর পুলিশের একটি টহল দল তার কাছে যায়। এ সময় পুলিশকে তিনি পুরো ঘটনা জানান। টহল পুলিশ বিষয়টি জেলা পুলিশের জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) জানালে তিনি পুলিশ সুপারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের ঘটনা জানান। ঘটনা জানার পর তিনি তাৎক্ষণিকভাবে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (অপরাধ) নেতৃত্বে একাধিক পুলিশের দল পৃথকভাবে মহাসড়ক থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেন।
তিনি আরও জানান, তথ্যপ্রযুক্তি এবং অন্যান্য গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকা থেকে শনিবার দুপুরে বাসটি জব্দ করা হয়। এ সময় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গাজীপুরের শ্রীপুর থানাধীন কদমতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ধর্ষণে জড়িত অপর তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।