গাজীপুরে মহানগরের কোনাবাড়ী এলাকায় আন্দোলনরত শ্রমিকদের দুই বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছে। স্বাভাবিক হয়েছে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যান চলাচল। আন্দোলনরত শ্রমিকরা বিভিন্ন অলিগলি ও কারখানার সামনে অবস্থান নিয়েছেন।
এ আগে মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সকাল ৭টা থেকে কোনাবাড়ী ও কাশিমপুর এলাকার বিভিন্ন গার্মেন্টস শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কোনাবাড়ী ফ্লাইওভার এলাকায় বিক্ষোভ করে মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। এ সময় শ্রমিকরা গাছের গুঁড়ি, টায়ার, বাঁশ ও কাঠে আগুন ধরিয়ে মহাসড়ক আটকে দেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন।
এ সময় পুলিশ টিয়ারশেল ছুড়লে শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে বেলা পৌনে ১১টার দিকে কোনাবাড়ী ফ্লাইওভারের পূর্ব পাশে সাইনবোর্ড এলাকায় দুটি আজমেরী পরিবহনের বাসে আগুন ধরিয়ে দেন তারা। এরপর মহাসড়কের নিয়ন্ত্রণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আসে। মহাসড়ক থেকে গাছের গুঁড়ি, টায়ার, বাঁশ সরিয়ে নেওয়া হলে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। পরে আন্দোলনরত শ্রমিকরা তাদের কারখানার সামনে ও বিভিন্ন অলিগলিতে অবস্থান নেন। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় থানা পুলিশ ও শিল্পপুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও বিজিবির একাধিক টিম টহল দিচ্ছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে জলকামান।
আন্দোলনরত শ্রমিক মামুন বলেন, আমাদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের জন্য আন্দোলন করছি। সব জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের চলতে কষ্ট হচ্ছে। আমরা কি মানুষ না? আমাদের চলতে কষ্ট হচ্ছে এটা আন্দোলন করে সরকার, কারখানা মালিককে জানাতে হচ্ছে। আমাদের আন্দোলন বিষয়ে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত না নিয়ে তারা আমাদের পুলিশ দিয়ে পেটাচ্ছে। বেতন না বাড়ানো পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (ডিবি অ্যান্ড মিডিয়া) ইব্রাহিম খান জানান, কোনাবাড়ী ফ্লাইওভারের সাইনবোর্ড এলাকায় আন্দোলনরত শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেন এবং দুটি বাসে আগুন দেন। পরে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, শ্রমিকদের শান্ত থাকার অনুরোধ করার পরও তারা উত্তেজিত হয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাদের সঙ্গে কথা বলে তারা মহাসড়ক না ছাড়ায় পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। পরে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। এখন পরিস্থিতি পুরোই স্বাভাবিক ও শান্ত আছে। শ্রমিকরা যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ও নাশকতা না করতে পারে সেজন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি নেওয়া আছে। র্যাব ও বিজিবিও কাজ করছে।