জ্বালানির দামবৃদ্ধি মোকাবিলায় জরুরি ব্যবস্থা ইউরোপের

Slider সারাবিশ্ব


জ্বালানির দামবৃদ্ধি মোকাবিলায় মরিয়া হয়ে উঠেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলো। ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে ক্রমবর্ধমান জ্বালানি মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যে জরুরি পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে।

ইউরোপে রাশিয়ার জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। আসছে শীতে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। তার আগে প্রস্তুতি হিসেবে জরুরি পদক্ষেপ নিচ্ছে ইউরোপীয় দেশগুলো।

জনগণ ও ব্যবসায়ীরা যাতে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে সেই লক্ষ্যে সাড়ে ছয় হাজার কোটি ডলার ব্যয় পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে জার্মানি।

আগামী মাসগুলোতে জ্বালানির দাম বেড়ে যেতে পারে, এমন আশঙ্কা থেকে রোববারই (৪ সেপ্টেম্বর) ধারাবাহিক পদক্ষেপের ঘোষণা দেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলজ।

ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ শুরুর পর জার্মানিতে জ্বালানির মূল্য বেড়েছে। এতে মূল্যস্ফীতির চাপে পড়েছে জনগণ। আসন্ন শীতে ঘর উষ্ণ রাখতে ব্যবহৃত গ্যাসের খরচ নিয়ে নতুন শঙ্কায় দেশটির মানুষ।

এমন পরিস্থিতিতে জনগণের ওপর থেকে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির চাপ কমাতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে ইউরোপের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশটি।

জার্মানির কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দপ্তরের হিসাবে আগস্টে দেশটির মূল্যস্ফীতি বেড়ে আট শতাংশে পৌঁছেছে। জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি এতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে। পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় মুদি পণ্যের দাম জুনে ১২ শতাংশ বৃদ্ধির পর আগস্টে বেড়েছে ১৬.৬ শতাংশ।

এই পরিস্থিতি থেকে জনগণকে স্বস্তি দিতে গত তিন মাসে গণপরিবহণে মাসে মাত্র ৯ ইউরোতে ভ্রমণের সুযোগ করে দেয় সরকার। পাশাপাশি বিভিন্ন পর্যায়ে কর ছাড়ও দেওয়া হয়।

রোববারের নতুন সিদ্ধান্তের পর চ্যান্সেলর ওলাফ শলজ সাংবাদিকদের বলেন, গণপরিবহণে স্বল্পমূল্যের টিকেট অব্যাহত রাখতে তার সরকার ১৫০ কোটি ইউরো ভর্তুকি দেবে।

জ্বালানি সরবরাহ কোম্পানিগুলো যাতে ক্রেতাদের কম খরচে তেল, গ্যাস ও কয়লা সরবরাহ করতে পারে এজন্য কর ছাড় দেওয়া হবে।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে চলতি বছর আরও দুইটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল সরকার। এর একটি ছিল পেট্রোলের ওপর করছাড় ও অন্যটি নয় ইউরোর টিকেটে গোটা জার্মানি ভ্রমণের সুযোগ।

এই দুই প্যাকেজেরই মেয়াদ শেষ হয়েছে আগস্টে। এমন অবস্থায় নতুন করে তৃতীয় প্যাকেজের ঘোষণা এল সরকারের কাছ থেকে।

ইতালিতে জ্বালানির মূল্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি থেকে কৃষিখামার ও জনগণের সুরক্ষায় সম্প্রতি ১ হাজার ৭০০ কোটি ডলার সহায়তা প্যাকেজ অনুমোদন করেছে সরকার।

চলতি বছরের মধ্যে এটা দেশটির দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা প্যাকেজ। এর আগে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পেট্রোলের দামের বিরূপ প্রভাব কমিয়ে আনতে জানুয়ারিতে সাড়ে তিন হাজার কোটি ডলার বাজেট বরাদ্দ ঘোষণা করা হয়।

একই পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে ফিনল্যান্ড ও সুইডেনও। রাশিয়া নর্ড স্ট্রিম ১ গ্যাস পাইপলাইন বন্ধ করে দেওয়ার পর সৃষ্ট সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবিলায় রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) কোটি কোটি ডলার সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে দেশ দুটির সরকার।

এক্ষেত্রে ফিনল্যান্ড প্রায় ১ হাজার কোটি ডলার আর সুইডেন ২ হাজার ৩২০ কোটি ডলার সহায়তা প্যাকেজের পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *