কাওরাইদে লেভেল ক্রসিং এর আর্তনাদ এখন আর্তচিৎকার!

Slider টপ নিউজ

গাজীপুরঃ চট্রগ্রামে একটি অরক্ষিত লেভেলক্রসিং এ ট্রেনের সাথে মাইক্রোবাসের ধাক্কা খেয়ে প্রাণ গেলো ১১ জন কোমলমতি শিক্ষার্থীর। এই ঘটনায় গেটম্যান কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিন্তু যেখানে লেভেলক্রসিং নাই সেখানে দূর্ঘটনা ঘটলে কে গ্রেফতার হবে। এমনি এক রেলক্রসিং এলাকার একটি গল্প নীচে বলা হল পাঠকের জন্য।

অরক্ষিত লেভেল ক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ হারানো মেধাবী ছাত্রী মুন্নী চলে যাওয়ার শোকাবহ ১১ বর্ষপূর্তি গেলো। ২০১০ সালে এই শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে যে শোকের আবহ তৈরি হয়েছিল তা আজও কাটেনি। স্থানীয় জনতার বিক্ষোভ-প্রতিবাদে সুরক্ষিত লেভেল ক্রসিংয়ের যে দাবি উঠে;প্রায় এক যুগ পেরুলেও তা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। আজও প্রতিদিন মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে পার হন হাজারো শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ।

১৯ মে ২০১০ সালের কাওরাইদ কেএন উচ্চ বিদ্যালয়ের (কালী নারায়ন উচ্চ বিদ্যালয়) মেধাবী ছাত্রী আমার সহপাঠী মুন্নী কাওরাইদ অরক্ষিত রেলক্রসিং পার হতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ হারায়। মুন্নীর এই মর্মান্তিক মৃত্যু মেনে নিতে পারেনি কেউ। তখন একটা চাপা ক্ষোভ নিয়ে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা কাওরাইদ রেলস্টেশনে নিয়ন্ত্রণকক্ষ ভাঙচুর ও ঢাকা-ময়মনসিংহ-জামালপুর রেলপথ প্রায় তিনঘণ্টা অবরোধ করে রেখেছিল।

নিহত মুন্নীর বাড়ি শ্রীপুরের কাওরাইদ ইউনিয়নের ধামলই গ্রামে। সকাল পৌনে ১০টার দিকে কাওরাইদ বাজার লেভেল ক্রসিং পার হওয়ার সময় ময়মনসিংহগামী তিস্তা এক্সপ্রেসের ধাক্কায় মুন্নীর মৃত্যু হয়। প্রতিবাদের সঙ্গে ছাত্র-জনতা অরক্ষিত রেলক্রসিং-এ সুরক্ষিত লেভেলে ক্রসিং নির্মাণ করার দাবি জানিয়ে রেললাইনের ওপর পরিত্যক্ত রেলের লাইন রেখে অবরোধ সৃষ্টি করেছিল।

বেলা ১২ টার দিকে শ্রীপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে আমার সাথে থাকা অধিকাংশ আন্দোলনকারী স্টেশনচত্বর ত্যাগ করে পালিয়ে গেলেও আমরা কয়েকজন বুক সেদিন চিতিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। কিন্তু পুলিশের লাঠিচার্জের মুখে টিকতে না পেরে রেলপথ অবরোধ ছেড়ে দিতে হয়। সেদিন গলা ছেড়ে বলেছিলাম লেভেল ক্রসিংয়ে কোনো গার্ড নেই, সিগন্যালের ব্যবস্থা নেই তাই মুন্নির মতো মেধাবী ছাত্রী মরেছে।

ভুক্তভোগীরা বলছেন বাংলাদেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অরক্ষিত কাওরাইদ রেলক্রসিং-এ অবিলম্বে লেভেল ক্রসিং নির্মাণ চাই। আজ আন্দোলনের ১২ বছর এখনো টনক নড়েনি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের। কতবার এই রেল ক্রসিং এর জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়েছি তার হিসাব নাই। আর কতবার রাস্তায় দাঁড়ালে এখানে একটা সুরক্ষিত লেভেল ক্রসিং নির্মাণ হবে? আর কত মুন্নি মারা গেলে সুরক্ষিত লেভেল ক্রসিং পাবে কাওরাইদবাসী? আর কত সময় গেলে এই গণদাবিতে ঘুম ভাঙবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *