গাজীপুর: গাজীপুর মহানগরের টঙ্গীতে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) এর ভুয়া অফিস আবিস্কার হয়েছে। এই সংস্থায় বিভিন্ন পদে চাকুরী প্রদান, প্রশিক্ষন ও বদলী করা সহ একটি সরকারি অফিসের ১৮ ধরণের সরঞ্জাম উদ্ধার করে ছয় জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে ভুয়া চাকুরীরত দুই জন মহিলা ভিকটিমও উদ্ধার হয়েছে।
সোমবার(১৩ মে) বিকেলে গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের দক্ষিন বিভাগ সাংবাদিক সম্মেলন করে এই তথ্য জানায়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ থানার রনচন্ডি-উত্তরপাড়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মো: লিয়ন ইসলাম(২৫), একই গ্রামের মো: এবাইদুল হকের ছেলে মো: মোজাহিদুল ইসলাম পায়েল(২৩), একই থানার ঘনচন্ডি দক্ষিণ পাড়া গ্রামের রিয়াজুল ইসলামের মেয়ে রজিয়া সুলতানা(২২), একই থানার দক্ষিণ সোনাপুরী গ্রামের লিয়ন ইসলামের স্ত্রী রিপা আক্তার(৩৬), রাশিদুল ইসলামের মেয়ে রিখা মনি(১৭) ও লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা থানার দই খাওয়া গ্রামের মৃত আনসার আলীর ছেলে হুমায়ূন কবির প্রিন্স(৩৬) তারা সকলেই গাজীপুর মহানগরের টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন ভাদাম এলাকায় শহীদুল ইসলাম এর বাড়ীর ভাড়াটিয়া।
সাংবাদিক সম্মেলনে গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের(দক্ষিন) বিভাগের উপ- কমিশনার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খাঁন জানান, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) তথ্যের ভিত্তিতে গাজীপর মহানগর গোয়েন্দা (দক্ষিণ) বিভাগ এবং জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) যৌথ অভিযানে গাজীপর মহানগরের টঙ্গী পশ্চিম থানা এলাকার ভাদাম পশ্চিমপাড়া মোঃ শহীদ মিয়ার ৫তলা বিল্ডিংয়ের ফ্ল্যাটে অভিযান পরিচালনা করে উল্লিখিত ছয়জন আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করে যে, তারা জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) পরিচয়ে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া কাগজপত্র তৈরী করে চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নিরীহ মানুষের নিকট থেকে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রতারক চক্রের সদস্যরা ফেইসবকু আইডি ব্যবহার করে দেশের যুবক ছেলে মেয়েদের চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে ঘটনাস্থলে এনে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) হিসেবে প্রশিক্ষণ প্রদান করে এবং নিয়োগপত্র ও ভুয়া আইডি কার্ড প্রদানের মাধ্যমে বিভিন্ন জেলা থানায় পোষ্টিং, বদলী দিয়ে থাকে। তারা তাদেরকে প্রশিক্ষনকালীন সময়ে নিজেদের তৈরী বিধি মোতাবেক পদোন্নতি ও শাস্তি প্রদানও করে থাকে। ঘটনার শিকার মামলার ভিকটিম আফরোজ আশিক সিনথি (১৯) এবং কানিজ ফাতেমা (১৮) দ্বয়কে ঘটনাস্থল হতে উদ্ধার করা হয়েছে। তারা জানান, প্রতারক চক্রের সদস্যরা ভিকটিম তাদেরকে চাকুরি দেয়ার জন্য উক্ত ঘটনাস্থলে ৫/৬ মাস যাবৎ প্রশিক্ষণ প্রদান করে আসছে এবং ভিকটিমকে বিভিন্ন জেলায় পদোন্নতি প্রদান করে পোষ্টিং দেয়ার কথা জানায়। প্রতারক চক্রের সদস্যরা ভিকটিমদেরকে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের নিকট হতে ১৫-১৭ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। চাকুরী প্রার্থী এক গ্রুপকে ভুয়া পোস্টিং অর্ডার দিয়ে সব টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর ঘটনাস্থল থেকে প্রশিক্ষণ মডিউল,বই, প্রশিক্ষণ এয়ার পিস্তল, কম্পিউটার, ল্যাপটপ সহ বিভিন্ন সামগ্রী উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।