সরকারের পতন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ।
২০ দলীয় জোটের পক্ষে আজ শনিবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, যে রাজনৈতিক সমস্যা পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে জন্ম দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, সেই সংশোধনী বাতিল করে সমস্যার সমাধান তাকেই করতে হবে। গণআন্দোলনের তীব্রতা দেখে সরকার অতিমাত্রায় ভীত হয়ে গুম, খুন, অপহরণ, দমন-পীড়ন, হামলা-মামলা এবং গ্রেফতার নির্যাতন চালিয়ে শেষ রক্ষা পেতে চায়। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী দেয়-জনতার ন্যায্য আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচারী সরকারের পতন হয়েছে যুগে যুগে দেশে দেশে। এই স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের পতনও এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিনা ভোটের অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হুকুমে দলবাজ র্যাব, পুলিশ ও বিজিবির কতিপয় সেবাদাস কর্তা ব্যক্তিরা আন্দোলনরত বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের বিভিন্ন নৃশংস কায়দায় ক্রসফায়ারের মাধ্যমে হত্যা করে সমগ্র দেশকে বধ্যভুমিতে পরিণত করেছে। ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে রাজধানী ঢাকা পর্যন্ত সর্বত্র ওই সব দলবাজ পিশাচ কর্মকর্তা কর্মচারিদের তালিকা প্রনয়ন করছে। দেশ আজ ভয়ঙ্কর পুলিশী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। জাতিকে সেই পুলিশী রিমান্ড থেকে মুক্ত করার জন্য অবিরাম সংগ্রামের কোনো বিকল্প নাই।
তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠান করে আওয়ামী লীগই রাজনৈতিক ভুল করেছে এবং সেই ভুলের খেসারত আওয়ামী লীগ ও তার দোসরদেরকেই দিতে হবে, সেই দায় জনগণ নিবে না। বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট ও অন্যান্য সব গণতান্ত্রিক দল সেই প্রহসনের নির্বাচন বর্জন করে ঐতিহাসিক সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
সাংবিধানিক, গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আন্দোলনের সব দরজা বন্ধ করে দিয়ে সরকারই জনগণকে বাধ্য করেছে রাজপথে অবিরাম সংগ্রামে লিপ্ত হতে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অঘোষিত কারাগারে রুদ্ধ করে সরকারের গদি রক্ষার স্বপ্ন কোনোদিনই পূরণ হবে না। গণআন্দোলনের বিজয়ের মধ্য দিয়েই জনগণ তাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রীকে মুক্ত করবেই ইনশাআল্লাহ।
বিবৃতিতে সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, গতরাতে গাইবান্ধার তুলশীঘাটে যাত্রীবাহী বাসে বর্বরোচিত পেট্রলবোমা হামলার ঘটনায় ২০ দলীয় জোট নেতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাচ্ছি এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের গ্রেফতার করে বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। পেট্রলবোমা হামলায় নিহত বাসযাত্রীদের রুহের মাগফিরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আহতদের সুস্থতা কামনা করছি।
তিনি বলেন, বিএনপি ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট বরারবই বলে আসছে যে, এধরণের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে তারা আদৌ জড়িত নয়। বরং ২০ দলীয় জোটের গণতন্ত্র মুক্তি আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে সরকারই এ ধরণের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে বিরোধী দলের ওপর দায় চাপানো এবং নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমে তা প্রচার ও প্রকাশের অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এসব ঘটনায় সরকারের সংশ্লিষ্টতার তথ্য প্রমাণ গতকালের বিবৃতিতে ষ্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিএনপি নেতা বলেন, আওয়ামী রাজনীতির স্বৈরতান্ত্রিকতা ও একনায়কতান্ত্রিকতার ঐতিহ্যে লালিত সজীব ওয়াজেদ জয় গতকাল অস্ত্রের ভাষায় কথা বলে মুজিব বংশীয় রক্তের প্রতিধ্বণি করেছেন। রাজনীতির পাঠশালায় বাল্য শিক্ষা শ্রেণী অতিক্রম না করার আগেই ভাষণ দেয়া শুভ লক্ষণ নয়।
তিনি বলেন, যে রাজনৈতিক সমস্যা পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে জন্ম দিয়েছেন শেখ হাসিনা, সেই সংশোধনী বাতিল করে সমস্যার সমাধান তাকেই করতে হবে। গণআন্দোলনের তীব্রতা দেখে সরকার অতিমাত্রায় ভীত হয়ে গুম, খুন, অপহরণ, দমন-পীড়ন, হামলা-মামলা এবং গ্রেফতার নির্যাতন চালিয়ে শেষ রক্ষা পেতে চায়। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী দেয়-জনতার ন্যায্য আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচারী সরকারের পতন হয়েছে যুগে যুগে দেশে দেশে। এই স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের পতনও এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
বিবৃতিতে সালাহ উদ্দিন আহমেদ বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে গণতন্ত্র মুক্তি আন্দোলনের বিজয় না হওয়া পর্যন্ত চলমান অনির্দিষ্টকালের শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচির পাশাপাশি আগামীকাল রোববার সকাল ৬টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত দেশব্যাপী ৭২ ঘণ্টার সর্বাত্মক হরতাল শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীসহ দেশবাসীকে আহবান জানান।
তিনি বলেন, বিগত ২৪ ঘণ্টায় চলমান অবরোধ কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পুলিশের তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত ২০ দলীয় জোটের তিনজন নেতাকর্মীসহ দুর্বৃত্তদের পেট্রলবোমা নিক্ষেপে যে সব নিরীহ মানুষ নিহত হয়েছেন, খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে তাদের রুহুর মাগফিরাত এবং আহতদের সুস্থতা কামনা করছি। গণআন্দোলনে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেফতারকৃতদের নি:শর্ত মুক্তি দাবি করছি। পাশাপাশি জনগণের সেবক হয়ে জনগণের বিপক্ষ শক্তিতে পরিণত না হওয়ার জন্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি জোর আহবান জানাচ্ছি।