ধর্ষন করেছে এসআই, অভিযোগ নেয় নি, ওসি। আত্মহত্যা করেছেন ধর্ষিতা নারী পুলিশ

Slider টপ নিউজ নারী ও শিশু
 5221f76b49d70-rape
ময়মনসিংহ; ‘আমার মরে যাওয়ার একমাত্র কারণ এসআই মোহাম্মদ মিজানুল ইসলাম আমাকে ধর্ষণ করেন। ১৭/০৩/১৭ ইং রাত ২.০০ ঘটিকায়। আমার অভিযোগ অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গ্রহণ করেন না।’

‘দিনলিপি’তে (ডায়েরি) এ রকম কথা লিখে গেছেন ময়মনসিংহের গৌরীপুর থানার কনস্টেবল হালিমা বেগম। এ কথা জানান হালিমার বাবা হেলাল উদ্দিন আকন্দ। তিনি গতকাল সোমবার দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে তিনি ‘হালিমার লেখা দিনলিপি’ (ডায়েরি) ও ওসির কাছে করা ধর্ষণের শিকার হওয়ার ‘লিখিত অভিযোগ’ গণমাধ্যমের কর্মীদের দেখান।

গৌরীপুর থানার ব্যারাকে ২ এপ্রিল নিজের কক্ষে শরীরে আগুন দেন হালিমা। ওই দিন সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ওই রাতেই এসআই মিজানুলকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়। ৪ এপ্রিল হালিমার বাবা বাদী হয়ে মিজানুলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করেন। মিজানুল বর্তমানে কারাগারে আছেন।

ওসির কাছে ‘লিখিত অভিযোগে’ হালিমা উল্লেখ করেন, মিজানুল তাঁকে নানা সময় কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। তাতে রাজি না হওয়ায় মিজানুল তাঁর ক্ষতি করার হুমকি দেন। ১৭ মার্চ দিবাগত রাত দুইটার দিকে মিজানুল হত্যার হুমকি দিয়ে ব্যারাকে হালিমাকে তাঁর কক্ষে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি একই থানার এসআই রিপন জানতেন। রিপন বিষয়টি চেপে যেতে বলেন। ওসির কাছে এ ঘটনায় অভিযোগ দিতে হালিমাকে পরামর্শ দেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে হালিমার বাবা হেলাল উদ্দিন আকন্দ বলেন, ‘আমার মেয়ের মৃত্যুর পর ৬ এপ্রিল গৌরীপুর থানার ব্যারাক থেকে তার ব্যবহৃত জিনিসপত্র নিই। সেখানে তার একটি ডায়েরি (দিনলিপি) পাওয়া যায়। তাতে হালিমা নিজের হাতে ওই সব কথা লিখে গেছে।’ তিনি বলেন, একে তো হালিমা নিজ ব্যারাকে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, তার ওপর সহকর্মীরা তাঁকে নিয়ে হাসাহাসি করেছেন—এত অপমান সহ্য করতে পারেননি হালিমা। মেয়ের প্রতি এই অন্যায়ের তিনি দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন।

এসআই রিপন সরকার বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানতাম না। এসব অভিযোগ বানোয়াট।’ ওসি দেলোয়ার আহম্মেদ বলেন, ‘হালিমার সঙ্গে মিজানুলের অনৈতিক সম্পর্কের গুঞ্জন শোনার পর হালিমার কাছে জানতে চেয়েছিলাম মিজানুল তাঁকে উত্ত্যক্ত করেন কি না। হালিমা তখন কোনো অভিযোগ করেননি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *