ইউক্রেনকে বিধস্ত করে ২৫ বছর পর ইউরোর সেমিফাইনালে ইংল্যান্ড

Slider খেলা

নক আউট পর্বে জার্মানিকে ২-০ গোলে হারিয়ে অনেক দুর যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিল ইংল্যান্ড। ইতালির রোমে কোয়ার্টার ফাইনালে সেই ধারাবাহিকতাটাই ধরে রেখেছে হ্যারি কেইনরা। ইউক্রেনকে ৪-০ গোলে বিধস্ত করে ২৫ বছর পর ইউরোর সেমিফাইনালে উঠেছে ইংল্যান্ড। জোড়া গোল করেছেন অধিনায়ক হ্যারি কেইন। একটি করে গোল করেছেন জর্ডান হেন্ডারসন ও হ্যারি ম্যাগুয়ার। চারটা গোলের তিনটিই এসেছে সেটপিস থেকে, হেডের মাধ্যমে।

সবশেষ ১৯৯৬ সালে সেমিফাইনাল খেলেছিল ইংল্যান্ড। সেবার সেমিতে টাইব্রেকারে ৬-৫ ব্যবধানে জার্মানির কাছে হেরেছিল তারা। এরপর গেল ২৫ বছরেও আর শেষ চারে জায়গা করে নিতে পারেনি থ্রি লায়ন্সরা।
অবশেষে সেই গেড়ো খুললো তাদের।

এদিন প্রথম থেকেই ইউক্রেনের ওপর চড়াও হয়ে বসে ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় রাউন্ডে সুইডেনের বিপক্ষে যেমন প্রত্যয়ী ইউক্রেনকে দেখা গিয়েছিল, এই ম্যাচে তাঁর ছিটেফোঁটাও দেখা যায়নি। ফলাফল যা হওয়ার তাই হয়েছে। প্রথম থেকেই শেভচেঙ্কোর শিষ্যদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছে ইংল্যান্ড।
শনিবার রাতে ইতালির রাজধানী রোমের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ম্যাচের ৪ মিনিটের মাথা লিড নেয় ইংল্যান্ড। এ সময় বামদিক থেকে রহিম স্টার্লিংয়ের ডিফেন্স চেড়া পাস বক্সের মধ্যে পেয়ে যান হ্যারি কেন। তার সামনে ছিলেন ইউক্রেনের গোলরক্ষক জিওর্জি বুসচান। হ্যারির নেওয়া শট তার বুকে লেগেও জালে জড়ায়।

এর মধ্য দিয়ে পর পর দুই ম্যাচে গোল পেলেন হ্যারি। আর এটা ছিল ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে ৫৯তম ম্যাচে তার ৩৬তম গোল। হ্যারির গোলে এগিয়ে থেকেই প্রথমার্ধের খেলা শেষ করে গ্যারেথ সাউথগেটের শিষ্যরা।

বিরতির পর পরই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন হ্যারি মাগুইর। ম্যাচের ৪৬তম মিনিটে বামদিকে ফ্রি কিক পায় ইংল্যান্ড। ফ্রি কিক থেকে উড়ে আসা বলে বক্সের মধ্যে লাফিয়ে উঠে হেড নেন মাগুইর। বল গোলরক্ষকের নাগালের বাইরে দিয়ে জালে আশ্রয় নেয়।

৫০ মিনিটের মাথায় নিজের জোড়া গোল পূর্ণ করেন অধিনায়ক হ্যারি কেন। এ সময় বামদিক থেকে লুক শ ক্রসে বল বাড়িয়ে দেন বক্সের মধ্যে। সেখানে হেড নেন হ্যারি। বল জালে জড়ায়। আর ইংল্যান্ড এগিয়ে যায় ৩-০ ব্যবধানে। এর মধ্য দিয়ে ইংল্যান্ডের প্রথম কোনো খেলোয়াড় হিসেবে ইউরোর নকআউট পর্বে জোড়া গোল করার নজির স্থাপন করেন হ্যারি।

৬১ মিনিটের মাথায় হ্যাটট্রিক পেয়েই গিয়েছিলেন হ্যারি। কিন্তু বক্সের বাইরে থেকে তার নেওয়া দুর্দান্ত একটি শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন ইউক্রেনের গোলরক্ষক বুসচান। অবশ্য এই কর্নার থেকে উড়ে আসা বলে হেড দিয়ে জালে জড়ান জর্ডান হেন্ডারসন। তাতে ইংল্যান্ড এগিয়ে যায় ৪-০ ব্যবধানে। ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে এটা ছিল হেন্ডারসনের প্রথম গোল।
বাকি সময়ে অবশ্য আর কোনো গোল পায়নি ইংল্যান্ড। অবশ্য জয়ের জন্য আর কোনো গোলের প্রয়োজনও হয়নি তাদের।

বড় টুর্নামেন্টের নক-আউটে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ৪ গোল করল ইংল্যান্ড। এর আগে ১৯৬৬ বিশ্বকাপের ফাইনালে তারা ৪-২ গোলে হারিয়েছিল জার্মানিকে। শুধু তাই নয়, এই প্রথম ইউরো কাপের কোনও নকআউট ম্যাচে ৪ গোল করে ইংলিশরা।

এর মধ্য দিয়ে চলতি ইউরোতে পাঁচ ম্যাচে মাঠে নেমে ৮ গোল করলো ইংল্যান্ড। পক্ষান্তরে একটি গোলও হজম করেনি তারা। সেমিফাইনালে আগামী মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ঘরের মাঠ ওয়েম্বলিতে তারা ডেনমার্কের মুখোমুখি হবে। এখন দেখার বিষয় রূপকথার জন্ম দিয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছানো ডেনমার্ককে থামিয়ে প্রথমবারের মতো ইউরোর ফাইনালে উঠতে পারে কিনা ইংলিশরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *