লকডাউন অমান্য করে নরসিংদী ও নবীগঞ্জে পশুর হাট

Slider জাতীয়


নরসিংদীর পুঠিয়ায় গরুর হাট ছবি: যমুনা টেলিভিশনকঠোর লকডাউনের মাঝে সরকারি বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করে জেলার সর্ববৃহৎ পশুর হাট বসেছে নরসিংদীর শিবপুরের পুটিয়া বাজারে। একই দিনে জমজমাট হাট বসেছিল হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায়। এসব হাটের বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন আগে থেকে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তবে সংবাদ আসার পর বিকালে নরসিংদীর হাটটি বন্ধ করার উদ্যোগ নেয় স্থানীয় প্রশাসন।

নরসিংদী জেলার স্থায়ী পশুর হাটে নিজ উদ্যোগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশু কেনাবেচার ব্যবস্থা করেন বলে জানিয়েছেন ইজারাদার। সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, আসন্ন কোরবানির ঈদকে ঘিরে গতকাল শনিবার জেলার সর্ববৃহৎ পশুর হাট নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার পুটিয়ায় বসেছে হাট। সপ্তাহিক শনিবার এই স্থায়ী পশুর হাট বসে। ঈদের দিন ঘনিয়ে আসায় পুটিয়া হাটে গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষ নিয়ে আসেন বিক্রেতারা।

স্থানীয় প্রশাসনের কোনো নির্দেশনা না থাকলেও করোনার সংক্রমণ এড়াতে পুটিয়া পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দূরত্ব না মেনেই চলে পশু কেনাবেচা। ক্রেতা-বিক্রেতাদের অনেকে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি সম্পর্কে জানলেও মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। অনেকেই স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা জেনেও মুখে পরেন না মাস্ক। কারও কারও মুখে মাস্ক দেখা গেলেও তা ঝুলছে থুঁতনিতে। হাটের ভেতরে দূরত্ব বজায় না রেখে ঘেঁষাঘেঁষি করেই চলছে পশু বেচাকেনার কাজ। স্বাস্থ্যবিধি না মানায় করোনা সংক্রমণ ঝুঁঁকিতে সচেতন অনেক মানুষ হাটে প্রবেশ করতে চাইছেন না।

গরু কিনতে আসা ক্রেতা মো. হিরণ বলেন, আমি মাস্ক পরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গরুর বাজারদর দেখতে এসেছি। কিন্তু এখানে স্বাস্থ্যবিধি অনেকেই মানছেন না, করোনা নিয়ে কারও ভয়ভীতি নেই। পশুর হাটে পুরোদমে বেচাকেনা শুরু হলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যাবে।
পুটিয়া বাজারে গরু বিক্রি করতে আসা শাহজাহান মিয়া বলেন, মাস্ক পরিধানের ইচ্ছা থাকলেও গরু বাজারের ভেতরে এসব নিয়ম মেনে চলা কঠিন কাজ। মানুষের ভিড়, বৃষ্টি-বাদল, পশুর যত্ন নেয়াসহ অনেক ব্যস্ত থাকতে হয়। করোনার ঝুঁঁকি জেনেও আমরা সব সময় স্বাস্থ্যবিধি মানতে পারি না। ছাগল বিক্রি করতে আসা এক কৃষক কামাল জানান, করোনার কথা জানলেও বেশিরভাগ মানুষই তো নিয়ম মানে না, মাস্ক পরে না। আমি একা পরলে আর কী হবে?

পুটিয়া পশুর হাটের ইজারাদার আরিফ সরকার বলেন, পুটিয়া পশুরহাট প্রতি সপ্তাহের শনিবার বসে। এ বছর সরকারে কাছ থেকে ৪ কোটি ২০ লাখ টাকায় বাজার লিজ নেয়া হয়েছে। করোনার ঝুঁঁকি সম্পর্কে হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদের সচেতন করতে মাইকিং করা হয়। এছাড়া করোনা সংক্রমণ এড়াতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য হাটে প্রবেশের সময় ক্রেতা বিক্রেতাদের হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করাসহ বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করা হয়। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পশু গত শুক্রবার থেকেই জমতে থাকে। তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়ার অবস্থা ছিল না।

এ ব্যাপারে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ কবিরুল ইসলাম খান বলেন, করোনা সংক্রমণ এড়াতে আমাদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো অনুমতি দেয়া হয়নি। তবে ইজারাদারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ জেলাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে পশু নিয়ে হাটে বিক্রেতা চলে এসেছে তাই তাদেরকে ফেরত দিতে পারছি না। সচেতনতা বৃদ্ধিসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ইজারাদারের নিজ দায়িত্বে পশুর বেচাকেনা করেছেন। তবে বিকালে প্রশাসনের লোকজন গিয়ে আমাদের পশুর হাটটি বন্ধ করে দেন।

নবীগঞ্জেও বসলো পশুর হাট: হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জে কঠোর লকডাউনেও বসেছে পশুর হাট। গতকাল শনিবার উপজেলার জনতার বাজারে প্রশাসনের তত্ত্বাবধানেই বসে বিশাল পশুর হাটটি। এতে মাস্কবিহীন অসংখ্য মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। স্থানীয় সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে দিনারপুর জনতার বাজার পশুর হাট। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুস সামাদ বলেন, পশুর হাট বসানোর ফলে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির মারাত্মক ঝুঁকি রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মহিউদ্দিন বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাজার পরিচালনার জন্য বলা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *