শ্রীপুরে এক নারীর দুই স্বামী! প্রতিবাদ করে মিথ্যে মামলার আসামি ইউপি সদস্য

Slider গ্রাম বাংলা

রমজান আলী রুবেল, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি. গাজীপুরের শ্রীপুরে এক নারী সমানতালে দুই স্বামীর সংসার করছেন বরমী ইউনিয়নে ঠাকুরতলা গ্রামে। সামাজিক চাপের মুখে পরকীয়া প্রেমিক বিয়ের কথা স্বীকার না করলেও বরমী ইউনিয়নের বড়ইতলা এলাকার কাকলির বাড়ি ভাড়া বাসায় প্রায় দুই মাস স্বামী স্ত্রী হিসেবে ঘর সংসার করেছেন সুমা ও সুমন। প্রথম স্বামীর কাছে সকল তথ্যপ্রমাণ থাকা সত্ত্বেও একাধিকবার হামলার শিকার হয়েছেন প্রথম স্বামী দীন ইসলাম দিনু। গত ২ এপ্রিল প্রথম স্বামীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে শ্রীপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথম স্বামী কে ঘরে তালা বদ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা (৩ এপ্রিল) উভয় পক্ষকে শ্রীপুর থানায় আসতে বলেন এবং সেখানে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা সিদ্ধান্ত দেয় প্রথম স্বামী সংসার করার জন্য, তৎক্ষণাৎ অভয় পক্ষ ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বিষয়টি মেনেও নেয়, কিন্তু মনে মনে মানতে পারিনি এ যুগের লাইলী সুমা স্বামীকে নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার কথা থাকলেও স্বামীর বাড়িতে না গিয়ে সুমা আক্তার চলে যান তার বাপের বাড়িতে সেখান থেকেই প্রথম স্বামীকে তাড়ানোর জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন , রাতে স্বামীর বাড়িতে না গিয়ে বাবার বাড়িতে থেকে ৪ এপ্রিল সকালে, নিজের মেয়েকে দিয়ে প্রথম স্বামী ও এলাকাবাসী কে ফাঁসানোর জন্য মেয়েকে আত্মহত্যার নাটকের কথা শিখিয়ে দেন মা, মায়ের কথামতো অভিযুক্ত সুমার স্বামীর বাড়িতে গিয়ে বারান্দায় তালা আটকে দিয়ে মেয়ে আত্মহত্যার নাটক করতে থাকেন। নিজের মেয়ে আত্মহত্যার খবর পেয়ে সুমার স্বামী দীন ইসলাম দিনুর ডাক চিৎকারে এলাকাবাসী এসে বারান্দার তালা ভেঙে মেয়েকে আত্মহত্যার পদ থেকে বাঁচায়। এ বিষয়ে একাধিক এলাকাবাসী জানায়, সুমা ও তার পরিবারের এর বিরুদ্ধে, এলাকার কোন মানুষ কথা বলতে ভয় পায়, কারণ এরা অত্যন্ত খারাপ প্রকৃতির মানুষ, এদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললেই তার বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানি করে, কিছুদিন আগে সুমার স্বামী দীন ইসলাম দিনু কে, ঘরে আটকে রেখে সোমা ও তার বাবা সহ আরো লোকজন মিলে খাটের সাথে বেঁধে মারধর করে তাদের চরিত্র সম্বন্ধে এলাকার মানুষ সকলেরই জানা থাকায় তাদের হাত থেকে দীন ইসলাম দিনুকে বাঁচানোর জন্য কেউ আগিয়ে আসেনি, কিন্তু এলাকার জন প্রতিনিধি প্রতিবাদ না করে বসে থাকতে পারেনি ঘটনাস্থলে এসে সুমার ও তার পরিবারের অত্যাচারের হাত থেকে তার দীন ইসলাম দিনুকে রক্ষা করে, তাকে রক্ষা করাই যেন, ইউপি সদস্যের কাল হয়ে দাঁড়ালো, কয়েক দিনের ভেতরেই দীন ইসলাম দিনু ও ইউপি সদস্যের নাম জড়িয়ে মামলা করে দেন। এলাকাবাসী আরো জানান, যারা এদের বিরুদ্ধে কথা বলেছে তাদের কাউকে এরা ছাড় দেয়নি মিথ্যে মামলা দিয়ে হয়রানি করেছেন।
বর্তমানে আত্মহত্যার চেষ্টা করা মেয়েটির বাবার বাড়ি বিক্রমপুরে অবস্থান করছেন, এবং মেয়েটি সম্পূর্ণরূপে সুস্থ আছেন।

ভুক্তভোগী দীন ইসলাম দিনুর গত ৩ এপ্রিল শ্রীপুর থানায় অভিযোগের বিষয়টি হুবাহু তুলে ধরা হলো।

দরখাস্তকারী দীন ইসলাম দিনু (৩৮) পিতা- মৃত সুজন আলী, সাং- গনেশামপুর, থানা- সিরাজদিখান, জেলা- মুন্সিগঞ্জ, বর্তমান সাং- ঠাকুরতলা, ইউ.পি- বরমী, থানা- শ্রীপুর, জেলা- গাজীপুর। বিবাদী ১। মোছা: সুমা আক্তার (৩২) পিতা- শহীদ শেখ, ২। মো: সুমন (৩৫) পিতা- মজিবুর ওরফে সুফি, ৩। মো: শহীদ শেখ (৫৮) পিতা- মৃত অজ্ঞাত, ৪। মো: আসাদ (৩৫) পিতা- মো: শহীদ শেখ, সর্ব সাং- ঠাকুরতলা, ইউ.পি- বরমী, থানা- শ্রীপুর, জেলা- গাজীপুর-গনসহ অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন বিবাদীদের বিরুদ্ধে এই মর্মে অভিযোগ দায়ের করিতেছি যে, ১নং বিবাদী আমার স্ত্রী, ২নং বিবাদী ১নং বিবাদীনির পরকীয়া প্রেমিক, ৩ ও ৪নং বিবাদীদ্বয় ১নং বিবাদীর পিতা ও ভাই সম্পর্ক হয় । ১নং বিবাদীনিকে বিগত ২০০৫ সনে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক ও রেজি: কাবিন মূলে বিবাহ করিয়া স্বামী-স্ত্রী হিসাবে ঘর সংসার করিয়া আসিতেছি। আমাদের দাম্পত্য জীবনে ২ জন কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহন করে। এমতাবস্থায় আমি ২০০৬ সন থেকে সৌদি আরব প্রবাসে চাকুরী করিয়া আসিতেছি এবং ঠাকুরতলা গ্রামে অর্থাৎ আমার শ্বশুর বাড়ীর নিকটে কিছু জমি খরিদ করিয়া উহাতে টিনসেড বিল্ডিং বাড়ী নির্মান করিয়া পরিবারবর্গ নিয়া বসবাস করিয়া আসিতেছি। আমি বর্তমানে আমার গ্রামের বাড়ীতে ব্যবসা করি বিধায় ১০/১৫ দিন পর পর বর্তমান ঠিকানার বাসায় আসিয়া স্ত্রী সন্তান ও বাড়ী ঘর দেখাশুনা করিয়া যাই। আমি বাড়ীতে না থাকার সুযোগে ১নং বিবাদীনি ২নং বিবাদীর সাথে পরকীয়া প্রেমে জড়াইয়া পড়ে এবং তাহারা বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ড করিয়া থাকে। উল্লেখ্য যে, ১ ও ২নং বিবাদীদ্বয় সাতখামাইর বড়ইতলা এলাকায় জনৈকা কাকুলির বাসায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ০২ মাস বসবাস করে। পরে বিষয়টি আমি জানিতে পারিয়া স্থানীয় গন্যমান্য লোকজনদের নিকট জানাইয়া ১ ও ২নং বিবাদীর অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করিলে তাহারা আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হইয়া গত ইং- ২/০২/২০২৪ তারিখে দুপুর অনুমান ২.০০ টার সময় বিবাদীগন অজ্ঞাতনামা বিবাদীদের সহায়তায় আমাকে বর্তমান ঠিকানার বাসার ভিতরে ফেলিয়া খুন জখমের উদ্দেশ্যে এলোপাথারী ভাবে ািকল, ঘুষি, লাথি মারিয়া ও লাঠি, লোহার রড দিয়া আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে বেধড়ক পিটাইয়া নীলাফুলা তীব্র ব্যাথাযুক্ত জখম করে। ২নং বিবাদী আমার ব্যবহৃত ১টি আইটেল মোবাইল, মূল্য ৮,০০০/- টাকা হইবে নিয়া, উক্ত মোবাইলে আমার সংগ্রহকৃত ১ ও ২নং বিবাদীদ্বয়ের অশ্লীল ছবি, ভিডিও ছিল। একপর্যায়ে বিবাদীরা আমাকে উক্ত বাড়ীতে খাটের সাথে বাধিয়া রাখে। তখন আমার আর্তচিৎকারে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বারসহ গন্যমান্য লোকজন আগাইয়া আসিয়া আমাকে বিবাদীদের কবল থেকে রক্ষা করে। বর্তমানে বিবাদীদের ভয়ে আমি আমার বাড়ীতে যাইতে পারিতেছিনা। আমি বাড়ীতে গেলে আমাকে মারধর কিংবা খুন জখম করিতে পারে। বিধায় ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় গন্যমান্য লোকজনকে জানাইয়া আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য থানায় আসিয়া অত্র অভিযোগ দায়ের করিতে বিলম্ব হইল। ঘটনার সাক্ষী প্রমাণ আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *