আইএসের টার্গেট জাপান!

Slider সারাবিশ্ব

 

22035_Japan

 

 

 

 

এরপর কি আইএসের টার্গেট জাপান? এমন প্রশ্ন রেখে আজ সোমবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে অনলাইন জাপান টুডে। এতে বলা হয়েছে, জাপানি ৭ নাগরিককে ঢাকায় হত্যা করেছে ‘জিহাদিরা’। এর শোক এখনও জাপানিদের মনে। ঢাকায় নিরাপদ হিসেবে মনে করা হয় এমন এলাকায় একটি রেস্তোরাঁয় গত ১লা জুলাই ওই হত্যাকা- ঘটে। নিহত ২২ জনের মধ্যে আরও ছিলেন ৯ জন ইতালিয়ান ও কয়েকজন অন্য দেশী। এতে পরিষ্কার যে, উগ্রপন্থিরা বাংলাদেশী যুবক। বিদেশী অমুসলিমদের হত্যা করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। এই ট্রাজেডিকে বর্ণনা করতে গিয়ে জাপানি মিডিয়া দুটি শব্দ ব্যবহার করেছে। তা হলো ‘সোফুতো টাগেতো’ অর্থাৎ সফট টার্গেট।
ওই প্রতিবেদনে প্রশ্ন রাখা হয়েছে, জাপানেও কি একটি রকম ন্যাক্কারজনক ঘটনার পরিকল্পনা রয়েছে ইসলামিক স্টেট ও তার অনুসারীদের? কারণ, ওই দেশটিতে সফট টার্গেটের কোন ঘাতটি নেই। ইউকান ফিজি গত ৭ই জুলাই এমন উদ্বেগ প্রকাশ করতে পারেন এমন ব্যক্তিদের একপেশে করে ফেলেছে। তাতে বলা হয়েছে, এটা অন্যদের সমস্যা নয়।
সংকল্পবদ্ধ জি    ঙ্গরা কি জাপানে তাদের পথ করে নিতে সক্ষম হবে অথবা তারা কি সিøপার সেল-এর অধিকারী, যা এরই মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে? তারা কোন ধরণের সফট টার্গেট বেছে নিতে পারে?
‘ইসলামিক টেরোরিস্টস’ বইয়ের লেখক বুনতারো কুরোই বলেছেন, কিছু সময় আগেই জঙ্গিরা সফট টার্গেট নির্ধারণ করে থাকতে পারে। এটা হতে পারে ২০০২ সালে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে একটি ডিসকো পার্টিতে বোমা হামলার মতো। তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সফট টার্গেটে হামলার ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর আরেকটি উদাহরণ হতে পারে, গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা। সেখানে অরল্যান্ডোতে সমকামীদের একটি নাইটক্লাবে জঙ্গিরা হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে ৪৯ জনকে। তবে সেই হামলা চালিয়েছে একাকী এক সন্ত্রাসী। জিহাদি গ্রুপের সঙ্গে তার সম্পর্ক আছে বলে বিশ্বাস করা হয়। থিয়েটার, রেস্তোরাঁ বা স্টেডিয়ামে জিহাদি হামলা করার ক্ষেত্রে জঙ্গিরা সমন্বিতভাবে হামলা চালায়। অরল্যান্ডোর হামলা তার থেকে কিছুটা ভিন্ন। এখন জঙ্গিরা কোথায় হামলা চালাবে তা বলা মুশকিল। এর মধ্যে জাপানও থাকতে পারে। সামরিক সম্পর্ক বিষয়ের লেখক মিতসুহিরো সেরা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপের মতো জাপানে হ্যান্ডগান বা আধা স্বয়ংক্রিয় রাইফেল বহন করা বা তার মালিক হওয়া খুবই জটিল বিষয়। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে আমাদের যা করা উচিত তা হলো, সন্ত্রাসীরা বিস্ফোরক কোন ডিভাইস করছে কিনা। এসব বিস্ফোরক তারাই ব্যবহার করতে পারে যাদের রসায়ন সম্পর্কে জ্ঞান থাকে। তিনি আরও বলেন, জাপানে সন্ত্রাসীরা টার্গেট করতে পারে কনসার্ট হল, মিউজিক ফ্যাসিলিটি অথবা আতশবাজি ডিসপ্লে হচ্ছে এমন সব স্থানকে। কারণ, এসব ইভেন্টে বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাবেশ হয়।
এটা অনুল্লেখ্য যে, জুলাই ও আগস্টে বেশ কিছু উৎসব ও অন্য কর্মকা- চলে দেশজুড়ে। এতে হাজার হাজার মানুষ জমায়েত হয়। মিতসুহিরো সেরা জাপানের বিভিন্ন পরিবহন ব্যবস্থায় নিরাপত্তা জোরদারেরও আহ্বান জানিয়েছেন। ২০১৫ সালের জুনে একজন পেনশনার একটি বুলেট ট্রেনে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মঘাতী হন। এতে শুধু তিনিই মারা যান নি, একই সঙ্গে ধোয়ায় দম বন্ধ হয়ে মারা গেছেন একজন নারী যাত্রী। এই কর্মকা-ে ট্রেন পরিচালকদের ঝুঁকির বিষয়ে সচেতন হওয়া উচিত। ট্রেনে যাত্রী ওঠানোর আগে তাদের ব্যাগ তল্লাসি করা উচিত। কিন্তু নিরাপত্তা দেয়ার বিষয়চি যেহেতু ব্যায়সাপেক্ষ ও সমস্যাবহুল তাই এ প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো, সন্ত্রাসীরা সর্বোচ্চ ক্ষতি করার জন্য তাদের কৌশল অব্যাহতভাবে নবায়ন করছে। মিতসুহিরো সেরা আরও বলেন, সম্প্রতি যেসব হামলা চালানো হয়েছে তাতে প্রথম বোমাটি বিস্ফোরণ ঘটানো হয় বিশৃংখলা সৃষ্টির জন্য। তারপর মানুষজনকে যে পথে উদ্ধার করা হবে সে পথে দ্বিতীয়টির বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। তিনি আরও বলেন, ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাসের ভিতর এখন আমরা সময় পাড় করছি। এই সন্ত্রাসী হামলা যে জাপানে ঘটবে না এমনটা আর অস্বীকার করা যায় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *