টঙ্গী (গাজীপুর) প্রতিনিধি:
গাজীপুর মহানগরের ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে চলাচলরত বিভিন্ন যানবাহনে রেকার ট্রাফিক পুলিশের বেপরোয়া চাঁদাবাজি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশের কাছে চাঁদাবাজির শিকারসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করার কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছে রিকশার চালক ও পরিবহন শ্রমিকরা।
সরেজমিনের দেখা যায়, গত সোমবার সকালে মুগরাপাড়া থেকে ঢাকা পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড (ডিপিডিসি) এর মালবাহী একটি ট্রাক (চুয়াডাংগা-ট-১১-০২৪৯) ডিপিডিসি’র টঙ্গী ভান্ডারে দিকে আসলে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে টঙ্গী থানা গেইট এলাকায় মালবাহী ট্রাক বিকল হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে টঙ্গী ট্রাফিক বক্স থেকে রেকার মো. কামাল এসে রেকার লাগিয়ে থানা গেইট থেকে ২০ গজ দূরে রেখে ট্রাক ড্রাইভার থেকে ১২ হাজার টাকা দাবি করেন। ১২ হাজার টাকা না দিলে একাধিক মামলা দিয়ে ট্রাক থানা দিয়ে দিবে বলে ট্রাক ড্রাইভারকে হুমকি দেয়। বেলা ১টার দিকে জোরপূর্বক ৫ হাজার টাকা নিয়ে চলে যায় রেকার মো. কামাল। ট্রাক ড্রাইভার মো. কলিমুদ্দিন ডিপিডিসি‘র টঙ্গী ভান্ডারে দায়িত্বে থাকা মো. আলী হোসেনকে ঘটনাস্থলে আসতে বলেন। মো. আলী হোসেন ঘটনাস্থলে আসলে রেকার মো. কামালকে সরকারি মালামাল সর্ম্পকে বিস্তারিত বললেও তিনি কোন দোহাই মানেনি।
এবিষয়ে ট্রাক ড্রাইভার মো. কলিমুদ্দিন জানান, “আমাকে ভয়বীতি দেখিয়ে জোর করে ৫ হাজার টাকা নিয়ে যায়। রেকার বিল চাইলে একাধিক মামলার হুমকি দেয় তিনি। পরে, টাকা নিয়ে চলে যাওয়ার সময় আমাকে রেকারের কামাল বলেন, টাকা নিয়েছি এ কথা কাউকে বলবে না। কেউ যদি কিছু বলে আমাকে ফোন করবে।”
এদিকে, অবৈধ রিকশা চালকের রেকার চালকদের বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। তারা অবৈধ রিকশা আটক করে রেকার বিলের নামে টাকা আদায় করে থাকলেও তা রশিদ না দিয়ে রিকশা ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। করিম নামে এক রিকশা চালক জানান, রেকার চালক কামাল আমার রিকশা ৩বার আটক করে। ১হাজার টাকা করে ৩হাজার টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে নেই। কোন কাজগজপত্র ছাড়াই। আরেক রিকশা চালক রফিকুল ইসলাম জানান, গত ২ ডিসেম্বর আমার রিকশাটি আটক করে রেকার চালক কামাল। পরে ১৫শ’ টাকা দাবী করলে আমি ১৫শ’ টাকা দেই। কিন্তু রেকার বিলের কাগজে ১হাজার টাকা লিখে আমাকে রেকার বিল দেয়। আরেক রিকশা চালক সবুজ জানায়, গত ৩ ডিসেম্বর রিকশা আটক করে আমার কাছে ১৫শ’ টাকা দাবী করে। আমি ১২শ’ টাকা দিতে চাইলে সে টাকা না নিয়ে আমাকে ফেরত দেয়। পরে ১৫শ’ টাকা দিলে আমাকে রেকার বিল বাবদ ১হাজার টাকার একটি রশিদ দেয়। এদিকে আরেক রিকশা চালক রমজান জানান, আমার রিকশাটি আটক করে। আমি ক্ষমা চাইলে আমাকে পিটিয়ে আহত করে বলে অভিযোগ করেন। এধরনের চাঁদাবাজীর কারণে সরকার হারাচ্ছে বড় ধরনের রাজস্ব এবং চালকদের সাথে করছে প্রতারণা। এব্যাপারে রেকার চালক কামালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, টাকা আমি নেইনি, নিয়েছে রেকার সাইদুল।