হেমন্তের শেষ থেকে বসন্তের শুরু অবধি দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের শ্বাসতন্ত্রের একধরনের সংক্রমণ দেখা দেয়। কাশি, শ্বাসকষ্ট এর প্রধান উপসর্গ। গবেষণায় দেখা গেছে, এই মৌসুমে কাশি ও শ্বাসকষ্টের রোগীরা বেশির ভাগই নিউমোনিয়া নয়, বরং এই ব্রংকিওলাইটিসে আক্রান্ত।
এটি ভাইরাসজনিত রোগ। জীবাণু হলো আরএসডি ভাইরাস। তবে ইনফ্লুয়েঞ্জা-পেরা ইনফ্লুয়েঞ্জা, এডিনো, রাইনো ও মাইকোপ্লাজমাও কখনো এই রোগ সৃষ্টি করে। জ্বর, সর্দি, কাশি দিয়ে শুরু, ৪/৫ দিনের মাথায় দেখা দেয় তীব্র শ্বাসকষ্ট। তীব্রতা অনুযায়ী রোগটিকে তিন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে:
১. মৃদু: বুকের দুধ বা পানীয় পান করতে পারে শ্বাসকষ্ট খুব বেশি না -অক্সিজেন মাত্রা স্বাভাবিক ৯২% এর ওপরে।
২. মাধ্যম: খেতে গেলে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে বুকের নিচের অংশ দেবে যাচ্ছে অক্সিজেন মাত্রা ৯২% এর নিচে, তবে অক্সিজেন দিলে তা স্বাভাবিক হয়ে আসে।
৩. মারাত্মক: বুকের দুধ বা পানীয় পান করতে পারে না বুকের নিচের অংশ তীব্রভাবে দেবে যাচ্ছে শ্বাসপ্রশ্বাসের কষ্টকর শব্দ। অক্সিজেন মাত্রা ৯২% এর নিচে এবং অক্সিজেন দিয়ে মাঝে মাঝে সুফল মেলে।
ব্রংকিওলাইটিস নিয়ে অতি উদ্বেগের কিছু নেই। একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর সেরে ওঠে। রোগ নির্ণয় করতে তেমন কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা লাগে না। তবে হাসপাতালে নেওয়ার প্রয়োজন দেখা দিতে পারে। কেননা এর প্রধান চিকিৎসা অক্সিজেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক লাগে না।
ঝুঁকিপূর্ণ শিশুদের জটিলতা হতে পারে; যেমন যাদের বয়স ৩ মাসের কম, প্রিম্যাচিওর বেবি, জন্ম ওজন কম বা হার্টের জন্মত্রুটি-সংবলিত শিশু। এটি ছোঁয়াচে রোগ। শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে বা করমর্দনে রোগজীবাণু ছড়ায়। তাই আক্রান্ত শিশু থেকে অন্য শিশুদের আলাদা রাখা উচিত।
বিভাগীয় প্রধান, শিশুরোগ বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ