ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের বিজেপির একজন নেতা সুরুজ পাল অমু আজ শনিবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হুমকি দিয়ে বলেছেন, তাঁর নাক কেটে দেওয়া হবে। তিনি মমতাকে রাবণের বোন সুর্পনখার সঙ্গেও তুলনা করেন। সুর্পনখার নাক কেটে দিয়েছিলেন রামের ভাই লক্ষ্মণ।
এদিকে মমতাকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় উত্তাল হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি। সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘এটা মানা যায় না। দুঃখজনক ঘটনা। ওদের সংস্কৃতি তো এটা।’ কবি সুবোধ সরকার বলেছেন, ‘যাদের শিক্ষা-দীক্ষা নেই, দেশের প্রতি ভালোবাসা নেই, তাদের মুখে এ কথা মানায়। দেশে কি তারা গণতন্ত্র রাখবে না?’
দেশজুড়ে সঞ্জয় লীলা বানসালির ‘পদ্মাবতী’ ছবির মুক্তি নিয়ে একটি রাজনৈতিক দলের ইন্ধনে তোলপাড় হচ্ছে। ছবিটির মুক্তির বিরুদ্ধে কয়েকটি রাজ্যে প্রতিবাদ চলছে। গুজরাট, রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, পাঞ্জাবসহ বিভিন্ন রাজ্যে এই ছবি মুক্তির ওপর রাজ্য সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এ-ই যখন পরিস্থিতি, তখন মমতা পশ্চিমবঙ্গে ‘পদ্মাবতী’ ছবি মুক্তি দেওয়ার জন্য এগিয়ে এসেছেন। আর এ কারণেই মমতাকে নাক কাটার হুমকি দেওয়া হয়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পশ্চিমবঙ্গে ‘পদ্মাবতী’কে স্বাগত। কলকাতাতেই হোক ‘পদ্মাবতী’ ছবির প্রিমিয়ার। তিনি ‘পদ্মাবতী’র পরিচালকসহ পুরো টিমকে কলকাতায় আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। গতকাল শুক্রবার এক আলোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী এই আমন্ত্রণ জানান।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর আগে ২০ নভেম্বর ‘পদ্মাবতী’ নিয়ে এক টুইট বার্তায় বলেছিলেন, ‘“পদ্মাবতী” নিয়ে বিতর্ক দুর্ভাগ্যজনক। নির্দিষ্ট একটি রাজনৈতিক দল পরিকল্পনা করে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করছে। আমরা এই পরিস্থিতিকে জরুরি অবস্থার সঙ্গে তুলনা করছি। এ সময় দেশের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির একযোগে সরব হওয়া উচিত।’
‘পদ্মাবতী’ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় রানি পদ্মাবতীর একটি নাচ আর আলাউদ্দিন খিলজির স্বপ্নে রানির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি দৃশ্য নিয়ে। যদিও পরিচালক সঞ্জয় লীলা বানসালি বারবার বলেছেন, দ্বিতীয় দৃশ্যটি ছবিতে নেই। তাতেও ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি। বরং বিক্ষোভকারীরা দাবি তুলেছে, ছবির সব বিতর্কিত অংশ বাদ দিতে হবে। তা না হলে এই ছবির মুক্তি দেওয়া হবে না।
‘পদ্মাবতী’ ছবিতে রানি পদ্মাবতী চরিত্রে অভিনয় করেছেন দীপিকা পাড়ুকোন।