সম্পাদকীয়: এই কাটা কাটা নয়।

Slider টপ নিউজ সম্পাদকীয়

00340b6d4d565f646b294c1577fded0e-5a10166f68182

 

 

 

 

 

 

 

 

এই কাটা কাটা নয় আগের লেখাই সঠিক। ছোট সময় গল্প শুনেছিলাম, এক শিক্ষার্থী পরীক্ষার খাতায় উত্তর লিখে শেষ করেছে। পরে দেখল,  সঠিক প্রশ্নের উত্তর লিখেনি। তারপর উত্তর কেটে নতুনভাবে লেখা শুরু করল। স্যার এটা দেখে বলল, তুমি কাটলে কেন? যা লিখেছিলে তা তো সঠিকই ছিল। প্রশ্নটা পড়ে দেখ। তারপর শিক্ষার্থী পুরো প্রশ্ন পড়ে দেখল তার উত্তর লেখার প্রশ্ন, প্রশ্নপত্রে আছে। কিন্তু সে যে উত্তর লিখে কেটে দিয়েছে তা নিয়ে মহাসমস্যায় পড়ে গেলো। কিন্তু তখন আর নতুনভাবে উত্তর লেখার সময় নেই। তাই সে লিখে দিল, এই কাটা কাটা নয় আগের লেখাই সঠিক। ফলে সে পরীক্ষায় ফেল করল। কারণ উত্তর লিখে কেটে দিলে আর নম্বর পাওয়া যায় না।

আজকের প্রেক্ষাপট অনেকটা এই রকমই। কে কি বললেন, তা তেমন কোন প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে না।  সত্য সত্যের গতিতেই চলে। ইতিহাস সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী  যা বলেছেন, তা শত ভাগ সত্য।  আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না, কেউ মুছতে পারেনি। ইতিহাস বিকৃত করতে চাইলে ইতিহাস প্রতিশোধ নেয়।

একই সাথে আমরা বলতে চাই, ইতিহাস কাউকে ক্ষমা করে না। ইতিহাস, ইতিহাসই থেকে যায়। কেউ লিখুক বা না লিখুক ইতিহাস লিখা হয়ে যায়, ইতিহাসের জায়গায়। কোন অধ্যায় বা কোন পাতায় বিন্দুমাত্রও কমতি থাকে না ইতিহাসের।

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের দেশের জন্ম। ৪৬ বছরেও আমরা মুক্তিযুদ্ধের একটি সার্বজনিন ইতিহাস রচনা করতে পারিনি। যে দল ক্ষমতায় আসে, সে দল তার আদলে ইতিহাস রচনা করে। ক্ষমতা চলে গেলে, নতুন দল তার মত করে ইতিহাস রচনা করে। আজ যা ইতিহাস, কাল তা মুছে যায়। আবার যা মুছে যায়, তা আবার ইতিহাস হয়।  এই যে লেখা আর মুছার খেলা এর যবনিকা পতন কবে হবে, তা জানিনা আমরা। তবে এই টুকু জানতে চাই, মহান মুক্তিযুদ্ধের একটি অকাট্য ইতিহাস সকলের জন্য প্রস্তুত করে শতভাগ গ্রহনযোগ্য হওয়া উচিত।  আমরা শুধু ইতিহাসই লিখতে পারিনি তা নয়, আমরা এখনো জানিনা, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মোট মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল কত? এটাও আমাদের জানা নেই।

সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী বলেছেন, আদালতের কারণে ৪ বছরের শিশুকেও মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দেয়া যাচ্ছে না। মন্ত্রীর বক্তব্যে আমরা হতাশ। কারণ ৪ বছরের শিশু যদি মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় থাকে তাহলে মুক্তিযোদ্ধাদের মোট সংখ্যা কবে জানব, তা স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। সুতরাং আমরা ইতিহাস লিখি আর ‍মুছি। ফলে প্রকৃত ইতিহাস আমাদের সামনে আসে না।

জাতি আশা করে, সার্বজনীন ভাবে একটি ইতিহাস লেখা হউক। যা হবে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের ইতিহাস। যে ইতিহাসের বিরুদ্ধে একজন বাংলাদেশীও থাকবেন না। সকলের সম্মতি থাকবে। আর তৈরী হউক একই কায়দায় একটি মুক্তিযোদ্ধার অকাট্য তালিকা। যা নিয়ে থাকবে না কোন বিতর্ক।

এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে  শতভাগ সমর্থন করে বলতে চাই, ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না, কেউ মুছতে পারেনি। ইতিহাস বিকৃত করতে চাইলে ইতিহাস প্রতিশোধ নেয়।

 

তাই আমরা বলি, আর তা না হলে কাউকে লিখতে হবে না, জাতির কাছে অলিখিত যে ইতিহাস আছে তাতেই চলবে। আর এই ইতিহাস প্রাকৃতিকভাবেই  আপডেট হতে থাকবে।

ড. এ কে এম রিপন আনসারী

এডিটর ইনচীফ

গ্রামবাংলানিউজটোয়েন্টিফোরডটকম

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *