সৌদির ক্ষমতাসীনরা রক্ষণশীল দেশটিকে একটি আধুনিক রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করা অংশ হিসেবে দেশটির অভিজাত শ্রেণির সদস্যদের উপর ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করেছে। কেননা দেশটি এখন আর শুধু তেলের উপর নির্ভরশীল নয়।
দেশটির সর্বশেষ দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে বেশ কয়েকজন যুবরাজসহ নেতৃস্থানীয় ব্যবসায়ী, সরকারি কর্মকর্তা এবং হাই উচ্চ প্রোফাইল ব্যক্তিদের আটক করা হয়েছে। সরকারি একটি সূত্র ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে জানিয়ে যে ব্যাপক এই ধরপাকড়ের মাধ্যমে তারা বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে ওই ব্যক্তি বলেন, সরকারহিসাব করে দেখেছে যে এসব লোকদের কাছ থেকে কম করে হলেও দুই থেকে তিন ট্রিলিয়ন রিয়াল (৮০০ কোটি ডলার) পাওয়া যেতে পারে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের জন্য দরকষাকষির অংশ হিসেবে ইতোমধ্য দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিপুলসংখ্যক অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে। জব্দকৃত এসব অ্যাকাউন্টের বেশিরভাই অর্থই বিদেশ ভিত্তিক বলে বলা হচ্ছে, যার মানে হচ্ছে এটি একটি দীর্ঘ ও জটিল প্রক্রিয়া।
সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের নির্দেশে এই ধরপাকড় শুরু হয়। ব্যাপক পরিবর্তনের এই উন্মাদনা গত দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশটিতে চলছে। গ্রেপ্তারকৃত রাজ পরিবারের সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা এবং ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দকে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য শনিবার নতুন ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং, ঘুষ, চাঁদাবাজি এবং ব্যক্তিগত স্বার্থে সরকারি সম্পদ শোষণের অভিযোগ আনা হয়েছে।
সন্দেহভাজন অন্যান্যদের অন্যায়ভাবে আটক রাখা হয়েছে। এটিকে সিংহাসনের শক্তিধর উত্তরাধিকারীর প্রবর্তন হিসাবে ব্যাপকভাবে দেখা হচ্ছে। অন্য আরো কয়েক ডজন সম্পদশালী ব্যক্তিকে তদন্তের অধীনে রাখা হয়েছে। তবে তাদের এখনো আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি। ব্যাপক ধরপাকড়ে আটকের সংখ্যা কয়েকশ অতিক্রম করবে বলে মনে করা হচ্ছে। এখনো পর্যন্ত ১৭ হাজারেরও বেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাতকারীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত এই অভিযানকে অনেক সৌদি নাগরিক স্বাগত জানিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা বছরের পর বছর ধরে দেশটিকে দুধ দিচ্ছেন। মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে আটক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নেয়া ব্যবস্থা ন্যায় ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নেয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।