গাজীপুরে অসৎ সাংবাদিকতার প্রতিকার চায় সাধারণ মানুষ

Slider বিনোদন ও মিডিয়া সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী

11259534_749392115178455_3700713076688604147_n

 

 

 

 

 

গাজীপুর ব্যুরো: প্রশাসনের দালালী না করলে সাংবাদিক হওয়া যাবে না। নেতাদের প্রশংসা না করলে মন পাওয়া যায় না। অপরাধকে ধামাচাপা দিতে সহযোগিতা না করলে সাংবাদিক বড়লোক হয় না। এটা এখন গাজীপুরে কর্মরত সাংবাদিকদের যোগ্যতায় পরিণত হতে চলছে।

পর্যবেক্ষনে দেখা যায়, গাজীপুরে বর্তমানে প্রায় দুই শতাধিক সাংবাদিক মাঠে ময়দানে কাজ করছেন। যারা জনপ্রিয় ও অজনপ্রিয় গণমাধ্যমে সাংবাদিকতা করছেন তাদের মধ্যে দুটি ভাগ বিদ্যমান। জনপ্রিয় টিভি, সংবাদপত্র ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকেরা নিজেরা একটি লাইনে চলাফেরা করেন। আর অজনপ্রিয় গণমাধ্যমের সাংবাদিকেরা আরেকটি গ্রুপে চলাফেলা করছেন। জনপ্রিয় টিভি গণমাধ্যমের সাংবাদিকেরা জনপ্রিয় অন্য গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের তেমন পাত্তাও দেন না। তারা মনে করেন তারাই আসল সাংবাদিক। আর অজনপ্রিয় সাংবাদিকেরা আসল লাইন না পেয়ে বিচ্ছিন্নভাবে চলাফেরা করেন। ফলে মাঠে ময়দানে কাজ করার ক্ষেত্রে বৈষম্য লক্ষ্য করা যায়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, অনেক সাংবাদিক রাজনৈতিক সাংবাদিকতা করছেন। কেউ আওয়ামীলীগের, কেউ বিএনপির, কেউ জাতীয় পার্টির ও কেউ জামায়াতের বা অন্য দলের সাংবাদিক হিসেবে মাঠে ময়দানে পরিচিত। যে দলের অনুষ্ঠান থাকে তারা সেই দলভুক্ত সাংবাদিকদের মাধ্যমে অন্য সাংবাদিকদের আমন্ত্রন করেন। আর অনুষ্ঠানের সংবাদ সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে দলীয় সাংবাদিকেরা বেশী প্রাধান্য পায়। এতেও সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম হয়।

এ ছাড়া বেশ কিছু দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা আছেন যারা নিজেদের দূর্নীতি ঢাকতে কতপিয় সাংবাদিকদের সব সময় হাতে রাখেন। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, থানা, হাসপাতাল, ডিসি অফিস সহ নানা সরকারী দপ্তরে কতিপয় সাংবাদিকেরা দালালীর কাজ করেন। নাম মাত্র পত্রিকার পরিচয়পত্র বহন করে তারা পেশাগত কাজ না করে দালালীর কাজ করেন। পুলিশ দিয়ে মানুষ গ্রেফতার করানো ও ছাড়ানোর কাজও করছেন সাংবাদিকেরা। জমি দখল বে-দখলে এখন সাংবাদিকেরা ঝুঁকে পড়ছেন কারণ এই কাজে বেশী টাকা পাওয়া যায়। গাজীপুর পুলিশের সকল দপ্তরেই এখন হরহেমাশাই সাংবাদিকদের যাতায়াত। পেশাগত অনুসন্ধান কাজের নাম করে তারা তদ্বির কাজে ব্যস্ত থাকেন বেশী। কোন লোক গ্রেফতার হলে আগে রাজনৈতিক নেতাদের জানাত পুলিশ। এখন পুলিশ বশকরা সাংবাদকিদের জানায় নিজেদের লাভজনক প্রয়োজনে।

অনুসন্ধানসূত্র বলছে, গাজীপুর শিল্প রাজধানীখ্যাত হওয়ায় জীবনের প্রয়োজনে লাখ লাখ মানুষের বসবাস। বাংলাদেশের প্রায় সকল জেলার লোকই গাজীপুরে বসবাস করেন কমবেশী। জীবিকার প্রয়োজনে অবস্থান করা লাখ লাখ মানুষের আধুনিক জীবন নিশ্চিত করতে গড়ে উঠেছে অসংখ্য নাগরিক সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। সরকারী বেসরকারী এ সব সেবামূলক প্রতিষ্ঠানেও সাংবাদিকদের প্রভাব। সাংবাদিকদের মাধ্যম ছাড়া ভাল সেবা পাওয়া যায় না এমনটিই জানেন গাজীপুরে বসবাসকারী নাগরিকেরা।

এ ছাড়া হোটেল, মদ ও জুয়া সহ বিভিন্ন অসামাজিক কাজের সঙ্গে কতিপয় সাংবাদিক জড়িত থাকেন বলে অভিযোগ বর্তমান। থানায় জিডি মামলা রেকর্ড করার ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য বলে সাধারণ মানুষের অভিযোগ।

এ সকল অভিযোগের কারণে অনেক সাংবাদিক ইতোমধ্যে আহত ও হাজতবাসও করেছেন এবং এখনো করছেন।
গাজীপুরবাসীর অভিযোগ, জেলার জনসেবা নিশ্চিত করতে সাংবাদিকদের একটি নিয়ন্ত্রনের মধ্যে আনা উচিত। সো-কল সাংবাদিকতা ও হলুদ সাংবাদিকতার কারণে জনসেবা বিঘিœত হচ্ছে। অচিরেই সরকারী ব্যবস্থাপনায় গাজীপুরে সাংবাদিকদের একটি তালিকা তৈরী করে নৈতিক জবাবদিহিতার মধ্যে আনা প্রয়োজন ।

এ বিষয়ে গাজীপুর প্রশাসনের কোন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা কোন বক্তব্য দেয়নি।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *