অল্পের জন্য বিশ্বরেকর্ডটা হলো না কুইন্টন ডি কক এবং হাশিম আমলার। ২০০৬ সালে ওয়ানডে ক্রিকেটে ২৮৬ রানের ওপেনিং জুটি গড়ে চুড়ায় বসে আছেন লঙ্কান লিজেন্ড সনাথ জয়াসুরিয়া এবং উপল থারাঙ্গা।
কিম্বার্লিতে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশ রান করল ২৭৮। বিশ্বরেকর্ডের আক্ষেপটা থেকেই গেল দুই প্রোটিয়া ওপেনারের। তারপরও বাংলাদেশের বিপক্ষে সবচেয়ে বড় ওপেনিং জুটির রেকর্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সবচয়ে বড় ওপেনিং জুটির রেকর্ড গড়ে ফেললেন তারা।
চোখ খুলে কিংবা চোখ বন্ধ করে যেভাবেই চিন্তা করুন না কেন, আপনার ভাবনায় আসবে না ২৭৮ রান করেও ১০ উইকেটের হার! মুশফিকের অমন দুর্দান্ত সেঞ্চুরিটা বৃথা গেল! জোড়া সেঞ্চুরি হাঁকালেন দুই প্রোটিয়া ওপেনার। ডি কক তো দেড়শ ছাড়িয়ে গেলেন। ভাবতে অবাক লাগছে না, মাশরাফি-সাকিব-তাসকিনরা একটি উইকেটও ফেলতে পারলেন না! ৪২.৫ ওভারে হেসেখেলে ম্যাচ জিতে নিয়ে সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল স্বাগতিকরা। ১৪৫ বলে ২১ চার এবং ২ ছক্কায় ১৬৮ রানে অপরাজিত থাকলেন ডি কক। আর হাশিম আমলা একটু দেখেশুনে খেলে ১১০ রানে অপরাজিত থাকলেন।
এর আগে কিম্বার্লিতে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে মুশফিকুর রহিমের সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৭৮ রান তুলে বাংলাদেশ।
তামিম-সৌম্যর অনুপস্থিতিতে ইনিংস শুরু করেন লিটন দাস এবং ইমরুল কায়েস। শুরুটা ভালো করলেও রাবাদার বলে ক্যাচ তুলে দেন দারুণ খেলতে থাকা লিটন (২১)। সাব্বিরের জায়গায় তিন নম্বরে ব্যাট করতে আসেন বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার সাকিব আল হাসান। কিছু সময় পর প্রিটোরিয়াসের শর্ট বলে বাজে শট খেলে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ইমরুল কায়েস (৩১)।
দ্রুত ২ উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন অভিজ্ঞ মুশফিক এবং সাকিব। জুটি জমে যাওয়ার পর ইমরান তাহিরের বলে সাকিব (২৯) হাশিম আমলার তালুবন্দী হলে ভাঙে ৫৯ রানের জুটি। এদিন ক্যারিয়ারের ৫ হাজার রানের মাইলফলকে পৌঁছান সাকিব। এরপর ‘ভায়রা ভাই’ মুশফিকের সঙ্গে ৬৯ রানের জুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নেন মাহমুদ উল্লাহ। প্রিটোরিয়াসের শিকার হওয়ার আগে তার সংগ্রহ ২৬। সাব্বির এসে ১টি করে চার ও ছক্কা হাঁকিয়ে রাবাদার বলে ফিরলেন ১৯ রান করে।
এরপরেই ক্যারিয়ারের পঞ্চম ওয়ানডে সেঞ্চুরি তুলে নিলেন ‘মি. ডিপেন্ডেবল’ মুশফিকুর রহিম। ১০৮ বলে ১০ চার এবং ২ ছক্কায় তিন অংকে পৌঁছান তিনি। সর্বশেষ ২০১৫ সালে মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেঞ্চুরি (১০৭) হাঁকিয়েছিলেন মুশফিক। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এটাই বাংলাদেশি কোনো ব্যাটসম্যানের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান। স্লগ ওভারে ভরসা দিতে পারেননি অনেকদিন পর ওয়ানডে খেলতে নামা নাসির হোসেন (১১)। অভিষিক্ত সাইফউদ্দিন রাবাদাকে এক দর্শনীয় ছক্কা হাঁকালেন। পরের বলে আবারও ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে প্যাটারসনের তালুবন্দী হয়ে ফিরলেন ১৬ রানে। অপরাজিত ১১০ রান করে মাঠ ছাড়েন মুশফিক।