রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, দুর্নীতির কারণে মানুষ কষ্টে আছে। দুর্নীতি দূর করা না গেলে মানুষের দুর্ভোগ কমার সুযোগ নেই। রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তর থেকে দুর্নীতি দূর করতে হবে।
আজ সোমবার কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার বাজিতপুর কলেজের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দুর্নীতি প্রতিরোধে শিক্ষার্থীদের ভূমিকা রাখার সুযোগ আছে। কারণ, আজকের ছাত্রছাত্রীরাই কিছুদিন পর দেশ ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্বে যাবে।
কলেজ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আজিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে রাষ্ট্রপতি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলো, অথচ শিক্ষায় এগোনো গেল না, তাহলে সবকিছু ভেস্তে যাবে। মনে রাখতে হবে, তোমাদের হাতেই দেশের ভবিষ্যৎ। তোমাদের নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হবে। হতে হবে বিশ্ব নাগরিক। সব সময় জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। আরও এগিয়ে নিতে হবে। সেই কাজটি হবে তোমাদের হাত ধরে।
রাষ্ট্রপতি নিজের রাজনীতি সম্পর্কে স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে বলেন, ‘ছয় দশক ধরে রাজনীতি করছি। রাজনীতির মধ্যে দিয়েই বড় হয়েছি। তবে এখন আর রাজনীতি করি না। রাজনীতি করার সুযোগও নেই। আমার কাছে সব দলের নেতা-কর্মীরা আসবে—এটাই স্বাভাবিক।’
রাষ্ট্রপতির জন্ম কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা মিঠামইনে। জেলার অষ্টগ্রাম, মিঠামইন ও ইটনা—এই তিনটি হাওর উপজেলা নিয়ে কিশোরগঞ্জ-৪ আসন। রাষ্ট্রপতি এই আসন থেকে সাতবার সাংসদ হয়েছেন। সেই স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি হাওরের মানুষ। এখন বঙ্গভবনে আরাম-আয়েশে আছি। তবে যেভাবে থাকি না কেন, হাওরের বাতাসের স্পর্শ টের পাই। সব সময় হাওরের টান অনুভব করি। হাওর সত্যিই অবহেলিত জনপদ। এখানে কখনো পাকা সড়ক হবে কেউ ভাবতেও পারেনি। তবে এখন হচ্ছে। অষ্টগ্রাম থেকে বাজিতপুরের দীঘিরপাড় পর্যন্ত ডুবো সড়ক হাওরের মানুষের যোগাযোগে ব্যাপক পরিবর্তন আনবে।’
স্থানীয় লোকদের কিছু দাবির বিষয়ে রাষ্ট্রপতি রসিকতা করে বলেন, ‘আমার কোনো মন্ত্রণালয় নেই। মন্ত্রণালয় থাকলেও টাকাপয়সা থাকে।’ তবে বাজিতপুরে একটি কারিগরি মহাবিদ্যালয় স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন তিনি। কিশোরগঞ্জে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন স্থানীয় সাংসদ মো. আফজাল হোসেন, কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ রেজওয়ান আহম্মদ, সাবেক সাংসদ মঞ্জুর আহম্মেদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ছরোয়ার আলম, ঢাকা উত্তর মহানগর আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান, যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শেখ নুরুন্নবী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মিজবাহ উদ্দিন, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।