হাসিনা না সুচি, রোহিঙ্গা প্রশ্নে দোটানায় ভারত

Slider সারাবিশ্ব
হাসিনা না সুচি, রোহিঙ্গা প্রশ্নে দোটানায় ভারত

এক দিকে বাংলাদেশের শেখ হাসিনা। অন্য দিকে মিয়ানমারের আং সান সুচি।

রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে প্রতিবেশী দুই রাষ্ট্রের দুই নেত্রীর মধ্যে কাকে কতটা সমর্থন করা হবে তা নিয়ে এখন প্রবল দোটানায় ভারত।আজ ঢাকায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা নিয়ে কূটনৈতিক চূড়ান্তপত্র দিয়েছে শেখ হাসিনা সরকার। ঢাকার তরফে মিয়ানমারকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, পশ্চিম মিয়ানমার থেকে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধ করা না হলে ঢাকা বিষয়টি আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়ে যাবে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের উপরে নজরদারি চালাতে গিয়ে সীমান্তে বাংলাদেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার ও ড্রোন। সেই অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছে মিয়ানমার।

ডোকলাম বিতর্ক মেটার পরে ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে চিনে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখান থেকে মিয়ানমারে যান তিনি। রোহিঙ্গা নিয়ে মিয়ানমারের অবস্থানকে সমর্থন জানিয়েছে ভারত। এমনকি রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের সঙ্গে যে পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠনগুলির যোগ বাড়ছে, তাও জানিয়েছে ভারত।

ভারতে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রুখতে বিভিন্ন রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। পশ্চিমবঙ্গে মমতা ব্যানার্জী সরকার সেই নির্দেশ মানতে রাজি নন। কিন্তু বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরানোর কাজ (পুশব্যাক) শুরু হয়েছে। এমনকী জম্মু-কাশ্মীরে থাকা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ভারতের কাছে রোহিঙ্গা শরণার্থী নিয়ে নিজেদের সমস্যার কথা জানিয়েছে। দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ শেখ হাসিনাকে ফোন করে জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা নিয়ে ভারত বাংলাদেশের পাশে আছে।

বস্তুত মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা জাতির আলাদা পরিচয়ও মানতে রাজি নয়। তাদের মতে, রোহিঙ্গারা ‘বাঙালি মুসলিম’। এই যুক্তি মেনে নিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। কিন্তু জাতিসংঘ বলেছে, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারেই আশ্রয় দিতে হবে। তাদের আলাদা জাতি পরিচয়ও মানতে হবে মিয়ানমার সরকারকে। ফলে পরিস্থিতি যে অত্যন্ত জটিল হচ্ছে ভারতের জন্য।

মিয়ানমারে চীনা প্রভাব ঠেকানোর জন্য সুচি সরকারের কাছাকাছি আসতে চাইছে ভারত। কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গেও চীনের সম্পর্ক দ্রুত বাড়ছে। মিয়ানমারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে গিয়ে বাংলাদেশকে চীনের হাতে ঠেলে দেওয়া যুক্তিসঙ্গত হতে পারে না। ফলে ভারত এখন উভয় সঙ্কটে।

(ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা থেকে সংগৃহীত)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *