হাফিজুল ইসলাম লস্কর :: সিলেট শহরের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী আবাসিক এলাকা শাহজালাল উপশহর’র এলাকাবাসীর উদ্যোগে তৌহিদী জনতার ডাকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের হত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতন এবং তাদের বসত বাড়ীতে অগ্নিসংযোগ এবং জন্মস্থান থেকে বিতাড়িত করার প্রতিবাদে আজ ১৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বাদ জুম’আ প্রতিবাদী বিক্ষোভ গণমিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উপশহর এলাকাবাসীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাখাইন রাজ্যে গণহত্যা বন্ধের দাবীতে দলমতের উর্ধ্বে উঠে শত শত আবাল, বৃদ্ধ বণিতা প্রতিবাদী গণমিছিলে অংশগ্রহণ করার জন্য উপশহরের প্রতিটি মসজিদ থেকে জুম’আ এর নামাজ শেষ হওয়ার সাথে সাথে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে জামেয়া তারতিলুল ক্বোরআন হাফিযিয়া মাদ্রাসায় পার্শ্ববর্তী রাস্তায় জড়ো হয়।
সেখান থেকে শত শত মানুষের অংশগ্রহণে মিয়ানমারের সামরিকবাহিনী, শাসকগোষ্ঠী এবং বৌদ্ধ ভিক্ষু সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের প্লেকার্ড ব্যানার বহন ও গগণবিরোধী স্লোগানের মাধ্যমে গণমিছিলটি উপশহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে উপশহর পয়েন্ট এ এসে বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়।
উপশহরের বিশিষ্ট মুরুব্বী আবুল হুসেন সুফি মিয়া’র সভাপতিত্বে এবং মাওঃ রেজওয়ান আহমদ’র পরিচালনায় অনুষ্টিত প্রতবাদ সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শাহজালাল উপশহরের সাবেক কাউন্সিলর, বিশিষ্ট আইনজীবি, জননেতা এড. সালেহ আহমদ সেলিম।
এছাড়া উক্ত প্রতিবাদ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন লুগাতুল আরাবিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাও. তহুল হক, তারতিলুল ক্বোর’আন মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাও. জিয়া উদ্দীন, মাদ্রাসাতুল হাসানাইন’র শিক্ষা সচিব মাও. মাশহুদ আহমদ, মাও. হান্নান আহমদ, মাও. ঈসমাইল আহমদ, সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কামাল আহমদ, জাহিরুল ইসলাম, সাপ্তাহিক ইউনানী কন্ঠের নির্বাহী সম্পাদক, হলিবিডি24.কম’র প্রধান সম্পাদক ও জামেয়া দারুল উলুমের শিক্ষক মাও. হাফিজুল ইসলাম লস্কর।
এছাড়া উক্ত প্রতিবাদ সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, মাও.কুতবুল আলম, মাও. শফিকুল ইসলাম, হাফিজ শামীম আহমদ, ছাত্রলীগ নেতা কাজী জুবের আহমদ, সৌরভ, ইয়াহইয়াহ, রায়হান, সুবেল আহমদ প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মুসলমানদের উপর যেভাবে গণহত্যা চালানো হয়েছে তা বিশ্বসভ্যতার ইতিহাসে এক কলঙ্ক জনক অধ্যায় রচিত হয়েছে। বিশ্বের কোথাও এ ধরনের নিষ্ঠুর নির্যাতন, নিপীড়নের ঘটনা আজ পর্যন্ত ঘটেনি। রোহিঙ্গাদের উপর বর্বোরুচিত ন্যাক্কার জনক দমন নিপীড়ন, পৈশাচিক কায়দায় নিশৃংষ গণহত্যা, ধর্ষণ, শিশুদের পুড়িয়ে হত্যার পর উল্লাস ও হাজার হাজার বাড়ি ঘর ও শত শত গ্রামের আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে রোহিঙ্গাদের নিশ্চিহ্ন করার মিশন অব্যাহত থাকলেও অদ্যবধি পর্যন্ত জাতিসংঘ, বিশ্বমোড়ল শক্তি মিয়ানমারের উপর আর্ন্তজাতিক হস্তক্ষেপ না করায় এ ধরনের পৈশাচিক ঘটনা সেখানে সংঘটিত করা হচ্ছে।
অবিলম্বে এ দমন নিপীড়ন বন্ধ না হলে বাংলার মুক্তিকামী মানুষ যেভাবে ১৯৭১ সালে এদেশকে স্বাধীন করেছিল, প্রয়োজনে আবারো সবাই একত্রিত হয়ে রাখাইন রাজ্যেকে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীন আরাকান রাষ্ট্রে পরিণত করে সেখানকার মুসলমানদের রক্ষা করা হবে। রোহিঙ্গাদের মানবিক দৃষ্টিকোন বিবেচনা করে বাংলাদেশে তাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা’র প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়, সেই সাথে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ১৬কোটি বাঙ্গালী খাবার খেলে রুহিঙ্গাও খাবে, সেই বক্তব্যের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়।
সমাবেশে মায়ানমারের পুতুল সরকার প্রধান অং সাং সূচীর তথা কথিত শান্তি নোবেল ফিরিয়ে নেয়া এবং রোহিঙ্গাদের গণহত্যার জন্য আর্ন্তজাতিক আদালতে তার বিচারের দাবী জানানো হয়।