বান্দরবানে বেশ কয়েকদিন দিন ধরে ভারী বর্ষন অব্যাহত রয়েছে। অব্যাহত ভারী বর্ষনের ফলে জেলার বিভিন্ন জায়গায় ছোট বড় শতাধিক পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তিবে বেশ কয়েকদিন ধরে ভারী বর্ষন অব্যাহত থাকায় বান্দরবান জেলায় পাহাড় ধসের ঝুকিঁতে বসবাস করছে প্রায় ১২ হাজার পরিবার।
সরেজমিনে পরির্দশন করে দেখা যায়, বান্দরবান সদর উপজেলার কালাঘাটা, বালাঘাটা, বনরুপা পাড়া, হাফেজঘোনা, সুয়ালক, লামা, আলিকদম, রোয়ায়ছড়ি, থানছি ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ের ঢালুতে এবং পাদদেশে বসতঘর নির্মান করে মৃত্যুর ঝুঁকি মাথায় নিয়ে বছরের পর বছর ধরে বসবাস করে আসছে হাজার হাজার পরিবার যা বর্তমান পরিসংখ্যানে প্রায় ১২ হাজার। এসব স্থানে প্রত্যেক বছর বর্ষা মৌসুমে ভারী বর্ষনে পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
বান্দরবান সদর উপজেলার কালাঘাটার অনিতা বড়ুয়া, শ্যামল বড়ুয়া, বালাঘাটার নবী হোসেন এবং জাফর আলম জানান, সমতলে জায়গা ক্রয় করে বসত ঘর নির্মান করে বসবাস করার মত সামর্থ তাদের নেই। তাই অল্প টাকায় জায়গা ক্রয় করে পাহাড়ের ঢালুতে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন তারা। বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ের ঢালুতে এবং পাদদেশে বসবাস করা ঝুকিপুর্ন এবং নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় মৃত্যুর ঝুকিঁ মাথায় নিয়ে বসবাস করতে বাধ্য হয়েছে বলে তারা জানান।
বান্দরবান সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুছ জানান, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ধসে বহু প্রানহানীর ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর পর প্রতিবারই প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয় খুব দ্রুত ঝুকিঁপুর্ন বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে পুর্নরবাসন করা হবে। কিন্তু এত প্রানহানীর পরেও একটি পরিবারকেও পুর্নরবাসন করা হয়নি। পাহাড় ধসের ঝুকিঁতে বান্দরবানে এখনো শত শত পরিবার বসবাস করছে। ভারী বর্ষনে যে কোন সময় পাহাড় ধসে মাটি পাচা পড়ে প্রানহানী হতে পারে বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেন।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক দীলিপ কুমার বণিক জানান, যারা পাহাড় ধসের ঝুকিঁতে রয়েছে তাদেরকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিরাপদে আশ্রয় নিতে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মাইকিং করে বার বার অনুরোধ জানানো হচ্ছে। এসব পরিবারের মধ্যে কিছু পরিবার আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিলেও অনেক পরিবার মৃত্যুর ঝুঁকি মাথায় নিয়ে নিজ নিজ ঘরে বসবাস করার খবর পাওয়া যায়।
তিনি আরো জানান,যারা পাহাড় ধসের ঝুকিতে বসবাস করছে তাদেরকে পর্যায়ক্রমে নিরাপদ জায়গায় পুর্নবাসন করা হবে। শুস্ক মৌসুমে এই কার্যক্রম শুরু করা হবে। দুর্যোগ মোকাবেলায় বান্দরবান জেলায় ৭০টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয় এবং পর্যাপ্ত ত্রান সামগ্রী মজুদ রাখা হয়। যে কোন দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন সব সময় প্রস্তুত বলে তিনি জানান।