ঢাকা: বিজেপি নেতৃত্বাধীন ভারতের ক্ষমতাসীন এনডিএ জোট প্রার্থী রাম নাথ কোভিন্দ দেশটির ১৪তম প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন। ইলেক্টোরাল কলেজের ৬৫.৬৫ শতাংশ ভোট পেয়ে তিনি বিজয় নিশ্চিত করেছেন। প্রেসিডেন্ট পদে বিরোধী দলগুলোর সমর্থিত প্রার্থী মিরা কুমার পেয়েছেন মাত্র ৩৪.৩৫ শতাংশ ভোট। ভারতের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ২০১৭ এর রিটার্নিং অফিসার অনুপ মিশ্র রাম নাথ কোভিন্দের জয়ের খবর নিশ্চিত করেছেন।
এ খবর দিয়েছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। খবরে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কোভিন্দকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বিরোধী প্রার্থী মিরা কুমারকেও অভিনন্দন জানিয়েছেন তার ‘গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের’ জন্য। পার্লামেন্টের ৭৭১ জন নির্বাচিত এমপির মধ্যে ৫২২ জনের ভোট পেয়েছেন কোভিন্দ। অন্যদিকে মিরা কুমার ভোট পেয়েছেন ২২৫ জন এমপির। বিজেপির প্রেসিডেন্ট অমিত শাহ কোভিন্দের বিজয়কে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়েছেন। প্রথম থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল বড় ধরনের জয় পেতে চলেছেন কোভিন্দ। কেননা, এনডিএ জোটের বাইরেও অনেকগুলো রাজনৈতিক দল কোভিন্দের প্রতি তাদের সমর্থন ব্যক্ত করেছিল। এ দলগুলোর মধ্যে রয়েছে, এআইএডিএমকে, যুবজন শ্রমিক রাইথু কংগ্রেস পার্টি, বিজু জনতা দল, তেলাঙ্গনা রাষ্ট্র সমিতি ও ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লোক দল। ওদিকে, বিরোধী দলগুলোর সমর্থিত প্রার্থী মিরা কুমারের ওপর কংগ্রেসের সমর্থন তো ছিলই। এ ছাড়াও তাকে সমর্থন দিয়েছিল ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি, সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজবাদী পার্টি, আম আদমি পার্টি, রাষ্ট্রীয় জনতা দল, অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস, কমিউনিস্ট পার্টিগুলো, ডিএমকে, জম্মু ও কাশ্মির ন্যাশনাল কনফারেন্স প্রভৃতি।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট অনুষ্ঠিত হয় সোমবার। গতকাল স্থানীয় সময় সকাল ১১টা থেকে ভোট গণনা শুরু হয়। এই ভোটে পার্লামেন্টের ৭৭১ জন সদস্য এবং ৪১০৯ বিধানসভা সদস্য ভোট দিয়েছেন।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, কোভিন্দ ও মিরা দুজনই দলিত সম্প্রদায় থেকে আসা। দুই প্রার্থীই নির্বাচনের আগে জোরোশোরে প্রচারণা চালিয়েছেন। তবে শেষ হাসিটা হেসেছেন কোভিন্দ।
পেশায় একজন আইনজীবী কোভিন্দ উত্তর প্রদেশ ও বিহারে ব্যাপক কাজ করেছেন। তিনি বিজেপির শিডিউলড কাস্ট মোর্চা প্রধান ছিলেন ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত। এ ছাড়া তিনি অল ইন্ডিয়া কোলি সমাজের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ১৯৭১ সালে তিনি দিল্লি বার কাউন্সিলের একজন আইনজীবী হিসেবে নিবন্ধিত হন। ১৯৭৮ সাল থেকে সুপ্রিম কোর্টের রেকর্ডভুক্ত আইনজীবী হন। ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত প্রায় ১৬ বছর তিনি দিল্লি হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে আইন চর্চা করেছেন। ২০১৫ সালের ৮ই আগস্ট তিনি বিহারের গভর্নর নিযুক্ত হন। উত্তর প্রদেশ থেকে তিনি দু’দফায় রাজ্য সভার সদস্য নির্বাচিত হন। এ ছাড়াও তিনি জাতিসংঘে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ২০০২ সালের অক্টোবরে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশবে বক্তব্য রাখেন রাম নাথ কোভিন্দ।