টেলিছবিটির নাম যে কেন শ্যাডো, পুরোটা দেখেও তার কোনো সুনির্দিষ্ট অনুষঙ্গ খুঁজে পেলাম না। মনে হলো, লেখক ও নির্মাতা যেন শ্যাডোর বাংলা শব্দ খুঁজে পাননি। দেড় ঘণ্টার ছবির শত শত সংলাপ বাংলায় দিতে পেরেছেন, শুধু নামটি বাংলায় দিতে পারেননি। বড়ই হাস্যকর। আবার টিভি চ্যানেলগুলোও এসব বেশ গিলছে ও দর্শকের জন্য তা উগরে দিচ্ছে রঙিন পর্দায়। আমাদের ভাষার জন্য, শিল্প-সংস্কৃতির জন্য এদের যে কারও কোনো দায়বদ্ধতা আছে, বোঝা যায় না। এটিএন বাংলার মতো একটি বেসরকারি টিভিতে এটির প্রচার আমাদের কাছে বেমানান মনে হয়েছে।
২ জুন বেলা তিনটায় দেশ টিভিতে প্রচারিত হলো সরাসরি গানের অনুষ্ঠান প্রিয়জনের গান । এদিন শিল্পী ছিলেন সুমনা বর্ধন ও সুমন। দুজন প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে পালাক্রমে বিভিন্ন ধারার গান পরিবেশন করেছেন। কাজেই সুরের বৈচিত্র্য ছিল বলা যায়। দুজনেরই কণ্ঠ মিষ্টি ও সুরেলা।
শিল্পী সুমনের কণ্ঠের কারুকাজ খুঁজে পাওয়া গেছে প্রায় প্রতিটি পরিবেশনাতেই। তিনি বিশেষভাবে সেই গানগুলোই বেছে নিয়েছেন, যে গানগুলোর সুরে ধ্রুপদি আবহ আছে। তবে এতে মাঝেমধ্যে কিছুটা বিপত্তিও ঘটেছে। যেমন কবি জাহিদুল হকের লেখা ও সুবীর নন্দীর গাওয়া আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়, তবু কেন ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায় গানটি যেন ঠিক আবেদন জাগাতে পারেনি। সমস্যা হলো, শিল্পী সুবীর নন্দীই গানটির মাত্রা কমিয়ে বাড়িয়ে একেক সময় একেকভাবে গেয়েছেন। কাজেই এ ধরনের গান নির্বাচন থেকে বিরত থাকাটাই ছিল বুদ্ধিমানের কাজ। সুমনা বর্ধন শেষ গানটি গেয়েছেন চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করা তাঁর নিজের গান আমার আছে জল, আমার আছে জল ভালো হয়েছে। দুজনের পরিবেশনাতেই আন্তরিকতা থাকলেও কথায় ও উপস্থাপনায় স্বতঃস্ফূর্ততার কিছুটা অভাব ছিল।
আমাদের এবারের আলোচ্য অনুষ্ঠান একটি সেলিব্রিটি শো। ৩ জুন রাত ১১টা ১৫ মিনিটে অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয়ের উপস্থাপনায় এটিএন বাংলায় প্রচারিত হলো সেলিব্রিটি শো সেন্স অব হিউমার । এদিনের অতিথি ছিলেন চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস।
উপস্থাপক জয় বিভিন্ন প্রশ্নের মধ্য দিয়ে অপু বিশ্বাসের দৃষ্টিভঙ্গি, জীবনবোধ ইত্যাদি তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। সমাজে নারী-পুরুষের অবস্থান সম্পর্কে উপস্থাপকের একটি প্রশ্নের জবাবে অপু বিশ্বাস যা বলেছে তা হয়ত সত্যি। কিন্তু তার মুখ থেকে আমরা আরও দায়িত্বশীল কথা আশা করেছিলাম।
কিন্তু তিনি খানিকটা হতাশই করলেন।
এ ছাড়া তিনি নিজের সম্পর্কে, সন্তান, স্বামী ও বুবলি সম্পর্কে আরও অনেক কথাই বলেছেন। অনুষ্ঠান সম্পর্কে বললে, এককথায় বলতে হয়, এটিএন বাংলার একটি সমৃদ্ধ ও আকর্ষণীয় অনুষ্ঠান সেন্স অব হিউমার । উপস্থাপক জয়ের বুদ্ধিদীপ্ত ও প্রাণবন্ত উপস্থাপনা এবং হিউমার দর্শকের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয়। এমন একটি অনুষ্ঠান উপহার দেওয়ার জন্য এটিএন বাংলাকে জানাই আন্তরিক সাধুবাদ।