প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্ন পূরণ হয়নি বলে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপির এই নেতা বলেন, পানির হিস্যা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন কিছু তো মিলেছে; বিদ্যুৎ মিলেছে, কিন্তু সেটাও বাংলাদেশকে পয়সা দিয়ে কিনতে হবে।
রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আজ মঙ্গলবার বেলা আড়াইটায় এক প্রতিবাদ সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম এ কথা বলেন। দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা বন্ধের চার বছর উপলক্ষে ‘আমার দেশ পরিবার’ এই প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে।
এই সরকার নতজানু পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে চলছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আসলে যা হওয়া উচিত ছিল, এই সফর থেকে বাংলাদেশ তা পেল না। ভারতের কাছ থেকে আমরা কিছুই পাইনি, কিছু আনতে পারব না। নতজানু নীতির কারণে সরকার কিছুই আনতে পারেনি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও গণতন্ত্র—এ দুটি একসঙ্গে চলে না। যখন থেকে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণ হয়ে আসছে, তখন থেকে এ কথা বলে আসছি।’ তিনি বলেন, সংবাদপত্র বন্ধ করা ও একদলীয় শাসনব্যবস্থা—এ জায়গা থেকে আওয়ামী লীগ সরে আসেনি, শুধু তারা কৌশল পাল্টেছে। তখন পার্লামেন্টে একদলীয় শাসন পাস করিয়েছে আর এখন যারা আন্দোলন-সংগ্রাম করছে, তাদের ওপর তারা নির্যাতন করছে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, মাহমুদুর রহমান এই ষড়যন্ত্রে আপস করেনি। তিনি অন্যায়ের কাছে নতিস্বীকার করেননি। ফলে মাহমুদুর রহমানকে জেলে যেতে হয়েছে, আর আমার দেশ পত্রিকাটিকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
২০১৩ সালের ১১ এপ্রিল পুলিশ দৈনিক আমার দেশ-এর কার্যালয়ে ঢুকে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে আটক করে। এর দুই দিন পর ১৪ এপ্রিল পত্রিকাটির প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়।
প্রতিবাদ সমাবেশে আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা স্বাধীনতা হারিয়েছি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি আমি বাংলাদেশের স্বাধীনতারও স্বপ্ন দেখি। এই লড়াই ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই। এই লড়াই ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে। আর লড়াই করার জায়গা রাস্তায়। এই সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমি রাস্তায় নেমে গুলি খেতে প্রস্তুত।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী অভিযোগ করেন, গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ১৮টি কমিটি করা হয়েছে। সাংবাদিকেরা ক্যারিয়ার ছেড়ে দিয়ে বিদেশে চলে যাচ্ছেন বা অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। আমার দেশসহ বন্ধ গণমাধ্যমগুলো খুলে দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
প্রতিবাদ সমাবেশে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ বক্তব্য দেন।