চেয়ারে বসামাত্র দুই মেয়র বরখাস্ত

Slider রাজনীতি সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী

bdcf9163e8cc327c6d4680764d68f47f-58e1b85ddf3ee

 

 

 

 

দুই বছর পর কাল মাত্র দুই ঘণ্টার জন্য মেয়রের চেয়ারে বসেন সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। দ্বিতীয় দফায় সাময়িক বরখাস্তের চিঠি পেয়েই চেয়ার ছেড়ে চলে যান তিনি। বিএনপির মনোনয়নে নির্বাচিত এই মেয়র এরপর নিজ বাসায় প্রথম আলোকে বললেন, ‘দুই বছর পর দুই ঘণ্টার জন্য মেয়রের দায়িত্ব পালন করলাম। জনপ্রতিনিধিকে এভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য বিচারের ভার নগরবাসীর কাছে ছেড়ে দিলাম।’
আরিফুল হক উচ্চ আদালতের নির্দেশে দুই বছর তিন মাস পর গতকাল রোববার মেয়রের দায়িত্ব নেন। বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত মেয়রের চেয়ারে বসা ছিলেন তিনি। এর মধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ পৌঁছায়। আদেশে বলা হয়, সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জনসভায় বোমা হামলার মামলায় অভিযুক্ত হওয়ায় তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। আদেশটি ঢাকা থেকে পাঠানো হয় ফ্যাক্সযোগে। এরপর বেলা দুইটার পর নগর ভবন থেকে নিজ বাসায় ফিরে যান তিনি।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগরের কুমারপাড়ার বাসা থেকে পায়ে হেঁটে নগর ভবনে যান আরিফুল হক। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম এ হক, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক আতাউর রহমান পীরসহ দলের স্থানীয় নেতারা। রাস্তার দুপাশ থেকে সাধারণ মানুষজনকে হাত নেড়ে অভ্যর্থনা জানাতেও দেখা যায়। নগর ভবনে পৌঁছালে তাঁকে ফুলের মালা পরিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। এরপর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন।
দায়িত্ব নেওয়ার পর আরিফুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘উচ্চ আদালতের আদেশের মাধ্যমে সত্য প্রতিষ্ঠিত হলো। আমি জনগণকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচিত হয়েছিলাম, তা পূরণে কাজ করতে চাই। বিনা দোষে আমাকে ২৭ মাস জনগণের কাছ থেকে দূরে রাখা হয়েছিল।’
বরখাস্তের আদেশ
স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের বার্তায় বলা হয়েছে, ‘আরিফুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল মামলা-৪/২০০৯) সম্পূরক অভিযোগপত্র গত ২২ মার্চ স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল সুনামগঞ্জ কর্তৃক গৃহীত হয়েছে। সেহেতু সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে স্থানীয় সরকার বিভাগ আইন ২০০৯ (২০০৯ সনের ৬০ নম্বর আইন)-এর ১২ উপধারা (১)-এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।’
বিশেষ ট্রাইব্যুনালে চলা এ মামলাটি হচ্ছে সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে জনসভায় বোমা হামলার মামলা। ২০০৪ সালের ২১ জুন সুনামগঞ্জে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জনসভায় বোমা হামলার ঘটনার দীর্ঘ প্রায় ১২ বছর পর মেয়র আরিফুলকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এ মামলার সম্পূরক অভিযোগপত্রে তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়।
সুনামগঞ্জের সরকারি কৌঁসুলি খায়রুল কবীর প্রথম আলোকে জানান, গত ২২ মার্চ এ মামলার সম্পূরক অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হয় এবং ওই দিন বিচারকাজ শুরু করতে মামলাটি সিলেটের বিশেষ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আরিফুল এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিনে আছেন।
দুই বছর কারাভোগ
আরিফুল হক চৌধুরী ২০১৩ সালের ১৫ জুন অনুষ্ঠিত সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত হন। মেয়রের দায়িত্ব পালনের মাত্র নয় মাসের মাথায় সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় সম্পূরক অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি হয়ে দুই বছর চার দিন কারাভোগ করেন। গত ৪ জানুয়ারি সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান তিনি।
২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জের বৈদ্যেরবাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় জঙ্গিদের গ্রেনেড হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া। ওই হত্যাকাণ্ডের প্রায় ১০ বছর পর তৃতীয় পর্যায়ের তদন্ত শেষে সম্পূরক অভিযোগপত্রে আরিফুল হককে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর কিবরিয়া হত্যা মামলার অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হলে ২৮ ডিসেম্বর হবিগঞ্জ গিয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করে কারাবন্দী হন তিনি। ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করে।
কারামুক্ত হওয়ার পর এই আদেশের বিরুদ্ধে আরিফুল হক হাইকোর্টে রিট করেন। হাইকোর্ট গত ১২ মার্চ সাময়িক বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করেন। পরে এই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে দিয়ে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। এরপর ৩০ মার্চ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাঁকে মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণের জন্য চিঠি পাঠায়।
নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে এভাবে বরখাস্ত করা একধরনের আমলাতান্ত্রিক হস্তক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেট চ্যাপ্টারের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মন্ত্রণালয়ের যে আইন দেখিয়ে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে বরখাস্ত করা হলো, সেই আইন যেখানে উচ্চ আদালতে টিকল না, আবার একই আইনে বরখাস্ত করাটা নিছক তামাশা ছাড়া কিছুই না।

দায়িত্ব নিতে বাধা, মেয়রের চেয়ারে ৮ মিনিট মোসাদ্দেক

নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধি, রাজশাহী
উচ্চ আদালতের আদেশ ছিল। মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছিল। তারপরও মেয়রের চেয়ারে বসতে ঘাম ঝরাতে হয়েছে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে। সকাল থেকে দুপুর অবধি প্রতিপক্ষ আর দলীয় কর্মীদের হুড়োহুড়ি, ছোটাছুটি আর ভাঙচুরের পর পুলিশ ডেকে তালা ভেঙে চেয়ারে তিনি বসতে পেরেছিলেন ঠিকই। কিন্তু এর মাত্র আট মিনিটের মাথায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি এসে হাজির। এটি মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্তের চিঠি। রাজশাহীর মেয়র হিসেবে দ্বিতীয় দফায় বরখাস্ত হলেন তিনি।
গতকাল রোববার সকাল ১০টার পরপরই দলীয় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নগর ভবনে আসেন নগর বিএনপির সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন। এ সময় কর্মী-সমর্থক এবং নগর ভবনের বিএনপিপন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ফুল ছিটিয়ে বুলবুলকে বরণ করে নেন। তিনি তাঁর দপ্তরে গিয়ে দেখতে পান মেয়রের কক্ষ তালাবদ্ধ। এরপর তিনি নগর ভবনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে গিয়ে বসেন। সেখানে তিনি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় বিএনপির কয়েক শ নেতা-কর্মী নগর ভবনে অবস্থান নেন। কেউ নিচতলায় দাঁড়িয়ে থাকেন, কেউ বসে পড়েন, কেউ মেয়রের দপ্তরের সামনে ভিড় করেন, কেউ এদিক-সেদিক পায়চারি করেন। একপর্যায়ে সেখানে উপস্থিত নেতা-কর্মীদের মধ্যে একটি পক্ষ মেয়রের কক্ষে ঝোলানো তালা ভাঙার চেষ্টা করেন। সেখানে মেয়রের একান্ত সচিব শহিদুল আলম ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এ কে এম রাশেদুল হাসান তাঁদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এমন পরিস্থিতির মধ্যে মেয়রের একান্ত সচিবের দপ্তরের থাই গ্লাস ও দুটি প্লাস্টিকের চেয়ার ভাঙচুর হয়। ভেতরে বিকট শব্দ হতে থাকে। বাইরে নেতা-কর্মীরা এদিক-সেদিক দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন।
এ সময় বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদৎ হোসেন খানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ মেয়রের দপ্তরের ভেতর থেকে নেতা-কর্মীদের বের করে দিয়ে সেখানে অবস্থান নেয়। বাইরে থাকা নেতা-কর্মীরা তখন বিভিন্ন স্লোগান ও চেঁচামেচি শুরু করেন।
কাউন্সিলর রাশেদুল হাসান পুলিশকে উদ্দেশ করে বলেন, মেয়রের অনুপস্থিতিতে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অথবা সচিব করপোরেশনের দায়িত্বে থাকেন। তাঁরা এসে না বলা পর্যন্ত দরজা খোলা যাবে না। দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র গত বৃহস্পতিবার অফিস করে ঢাকায় চলে গেছেন, চাবি কার কাছে কেউ জানেন না।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সচিবসহ অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে দরজা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এরপরও হইচই চলতে থাকে। বেলা ১টা ১৯ মিনিটে সচিব এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তালা খুলে দিতে আসেন। চাবি না থাকায় মিস্ত্রি এনে তালা ভেঙে দরজা খুলতে প্রায় দেড়টা বেজে যায়। তারপর কর্মচারী দিয়ে দপ্তরের ফাইল ও জিনিসপত্রের তালিকা তৈরি করানো হয়।
এ সময় বিএনপির নেতা-কর্মী ও আইনজীবীদের নিয়ে সচিবের দপ্তরে বসেন মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন। সেখানে সচিব ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাও ছিলেন। একপর্যায়ে সচিব মাহাবুবুর রহমান স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে আসা একটি আদেশের কপি মেয়রের আইনজীবীদের দেন।
বেলা তিনটার দিকে মেয়রের দপ্তরের সামনে থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়রের নামফলক খুলে ফেলা হয়। এরপর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সচিব, কাউন্সিলর, নেতা-কর্মীদের নিয়ে দপ্তরে প্রবেশ করেন মোসাদ্দেক হোসেন। চেয়ারে বসে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের আদেশের বলে এখন থেকে আমি মেয়র। পরবর্তী কোনো নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত আমি দায়িত্ব পালন করব এবং অফিসে নিয়মিত যাতায়াত করব।’ এ সময় মাত্র আট মিনিট তিনি চেয়ারে ছিলেন।
বরখাস্তের ফ্যাক্স আসার বিষয়ে জানতে চাইলে মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, ‘আমার কাছে কোনো ফ্যাক্স আসেনি। যদি কোনো ফ্যাক্স আসে সেটি ষড়যন্ত্রমূলক এবং সেটির আইনগত কোনো বৈধতা নেই।’ এ কথা বলেই তিনি মেয়রের জন্য বরাদ্দকৃত গাড়িটি নিয়ে নগর ভবন ত্যাগ করেন।
বরখাস্তের আদেশ
বরখাস্তের আদেশে বলা হয়েছে, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র মোসাদ্দেক হোসেনের বিরুদ্ধে রাজশাহী মহানগর বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ এ ১৩৬/১৫ নম্বর মামলার অভিযোগপত্র আদালত গ্রহণ করেছেন। স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯ এর ধারা ১২-এর উপধারা ১-এ সিটি করপোরেশনের মেয়রের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলায় অভিযোগপত্র গৃহীত হলে সরকার কর্তৃক লিখিত আদেশের মাধ্যমে তাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্তকরণের বিধান আছে। তাই মেয়র মোসাদ্দেক হোসেনকে স্থানীয় সরকার আইনের ক্ষমতাবলে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হলো।
যে মামলার জন্য বরখাস্তের আদেশ এসেছে, সেই মামলা সম্পর্কে জানতে চাইলে বোয়ালিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিম বাদশা জানান, ২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বোয়ালিয়া থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়ের করা মামলায় তিনি ৬ নম্বর আসামি। মামলায় ২০১৬ সালের ৬ জুন আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে।
দায়িত্বে ছিলেন ২০ মাস
মোসাদ্দেক হোসেন কাগজে-কলমে মেয়রের দায়িত্বে ছিলেন ২০ মাসের মতো। আত্মগোপনে ছিলেন তিন মাস। দুই মেয়াদে জেল খেটেছেন সাড়ে তিন মাস। তাঁর বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা ২৩। দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলায় খালাস পেয়েছেন। ২২টি মামলার সব কটিতেই আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।
২০১৩ সালের ১৫ জুন রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুজ্জামানের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন মোসাদ্দেক হোসেন। একাধিক মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি হওয়ায় ২০১৫ সালের ৭ মে মেয়র পদ থেকে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ২০১৬ সালের ১০ মার্চ উচ্চ আদালত তাঁর বরখাস্ত আদেশ অবৈধ ঘোষণা করেন। গত মঙ্গলবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এক চিঠিতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেয়। এই নির্দেশনা পেয়ে গতকাল তিনি দায়িত্ব নিতে আসেন।
রাজশাহীর মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে আবার বরখাস্ত করার ব্যাপারে সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) রাজশাহীর সদস্য মনিরা রহমান বলেন, ‘এই নজির আমাদের স্থানীয় সরকার ও গণতন্ত্রের জন্য ভালো হবে না, কারণ আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করি। যে দল ক্ষমতায় রয়েছে তারা সবাইকে নিয়ে নির্বাচনে যাওয়ার কথা বলে, আবার তারাই যদি এভাবে নির্বাচিত প্রতিনিধিকে কাজ করার সুযোগ না দেয়, তাহলে গণতন্ত্রের চর্চা ব্যাহত হয়।’ তিনি আরও বলেন, একই অভিযোগে মেয়রকে এর আগে বরখাস্ত করা হয়েছিল। তিনি আদালত থেকে রায় নিয়ে এসেছেন। আবার সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে যাচ্ছে।

মোসাদ্দেক কাগজে কলমে মেয়রের দায়িত্বে ছিলেন ২০ মাসের মতো। মেয়রের দায়িত্ব পালনের নয় মাসের মাথায় কারাগারে যান আরিফুল
দুই মেয়রের বৃত্তান্ত
আরিফুল হক চৌধুরী
 ১৫ জুন, ২০১৩ সিলেটের মেয়র নির্বাচিত
 সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলায় ২ বছর ৪ দিন কারাভোগ
 উচ্চ আদালতের আদেশেমেয়রের দায়িত্ব নিতে যান
 সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জনসভায় বোমা হামলার মামলায় অভিযুক্ত হওয়ায় গতকাল সাময়িক বরখাস্ত

মোসাদ্দেক হোসেন
 ১৫ জুন, ২০১৩ রাজশাহীর মেয়র নির্বাচিত
 একাধিক মামলায় আসামি হওয়ায় ২০১৫ সালের ৭ মে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত
 উচ্চ আদালতের আদেশে মেয়রের দায়িত্ব নিতে যান
 পুরোনো ফৌজদারি মামলায় অভিযোগপত্র গৃহীত হওয়ায় গতকাল সাময়িক বরখাস্ত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *