ঢাকা; ভারতের রাজস্থানে ১৩ বছর বয়সী এক ছাত্রীকে এক বছর ধরে ধর্ষণ করেছে ৮ শিক্ষক। এমন অভিযোগ করেছেন ওই ছাত্রীর পিতা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি। এতে বলা হয়েছে, ওই ছাত্রীটি ক্যান্সারে আক্রান্ত। ২০১৫ সালে সে একটি বেসরকারি স্কুলে পড়াশোনা করতো। তার বাড়ি রাস্থানের বিকানারে নোখা’তে।
স্কুলে পড়াকালীন ওই বছরে তাকে ৮ জন শিক্ষক বিভিন্ন সময়ে ধর্ষণ করে এবং সে দৃশ্য ভিডিওতে ধারণ করে তাকে ব্লাকমেইল করে। শিক্ষকরা তাকে অতিরিক্ত ক্লাস নেয়ার কথা বলে কয়েক ঘন্টা স্কুলে রেখে দিতো। এরপর তার ওপর চালাতো নৃশংস নির্যাতন। এ অভিযোগে থানায় মামলা করেছেন তার পিতা। তিনি এতে বলেছেন, এক পর্যায়ে তার মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এ সময় অভিযুক্ত শিক্ষকরা তার গর্ভপাত করাতে ওষুধ খাওয়ায়। রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রায় দেড় বছর আগে ওই ছাত্রীর রক্তে ক্যান্সার ধরা পড়ে। বর্তমানে তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। নির্যাতিত ছাত্রীর পিতা বলেছেন, তিনি বিষয়টি জানতে পারেন ২০১৬ সালে। তিনি বলেন, আমার মেয়ের ওপর ওই নৃশংস নির্যাতন চালানো হয়েছে এক বছর। তারা আমাকেও হয়রানি করেছে। হুমকি দিয়েছে। তারা আমাকে বাড়ি থেকে বের হতে দিতো না। মেয়েকে দেখতে যাতে হাসপাতালে যেতে না পারি তার সব ব্যবস্থা করেছিল তারা। এক পর্যায়ে আমি সমাজে বের হতে ভয় পেতাম। তাই আগেভাগে মামলা করতে পারি নি। শেষ পর্যন্ত আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি মামলা করার। এ খবর দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে রাজস্থান পঞ্চায়েত রাজ মিনিস্টার রাজেন্দ্র রাঠোর বলেছেন, এটা এক হতাশাজনক খবর। অত্যন্ত বেদনাদায়ক বিষয়। আমরা সব তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছি। নির্যাতিতাকে বিনা মূল্যে চিকিৎসা দেবো আমরা। পরিস্থিতি নিবিড় নজরদারি করছেন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস নেতা শচীন পাইন। তিনি একে হার্টব্রেকিং বা হৃদয় ভাঙা হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, অব্যাহতভাবে একজন সংখ্যালঘু বালিকাকে ধর্ষণ করেছে তার শিক্ষকরা। এমন ঘটনায় আমাদের হৃদয়ের গভীরে নাড়া দিয়েছে। ধর্ষণের দিক দিয়ে রাজস্থান হলো ভারতে তৃতীয়। আমি আশা করি সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেবেন এবং নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করবেন। ওদিকে এ ঘটনায় স্থানীয় পুলিশের ভূমিকাও পরীক্ষা করা হচ্ছে। নির্যাতিত ছাত্রীর পিতামাতা বলেছেন, পুলিশ বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছিল এবং তাদেরকে মামলা করা থেকে বিরত রাখে। তারা মামলা করতে পেরেছেন পুলিশের এসপির হস্তক্ষেপের পরে।