সিলেটের এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে দা-রড উঁচিয়ে ছাত্রদলকে ধাওয়া করার ঘটনায় আত্মসমর্পণের পর ছাত্রলীগের পাঁচ কর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
আজ রোববার দুপুরের দিকে সিলেটের মুখ্য মহানগর বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক মো. সাইফুজ্জামান হিরো এই আদেশ দেন।
আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি মাহফুজুর রহমান বলেন, পাঁচজন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান। জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
কারাগারে যাওয়া পাঁচজন হলেন তারেক আহমদ (২৩), সালমান অপু ওরফে শামসুল ইসলাম অপু (২৪), আলতাফুর রহমান মুরাদ (২৩), রবিউল হাসান (২২) ও সৌরভ আচার্য (২৬)। পুলিশ প্রতিবেদন অনুযায়ী, তাঁরা এমসি কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী।
ক্যাম্পাস সূত্র জানায়, কারাগারে যাওয়া পাঁচজনই ছাত্রলীগের কর্মী।
এমসি কলেজ শাখার নতুন আহ্বায়ক কমিটি হওয়ায় গত ৩০ জানুয়ারি ক্যাম্পাসে আনন্দমিছিল করার প্রস্তুতি নেয় ছাত্রদল। এ সময় ছাত্রলীগের একটি পক্ষ প্রকাশ্যে দা, হকিস্টিক, রডসহ দেশীয় অস্ত্র উঁচিয়ে ছাত্রদলকে ধাওয়া করে ক্যাম্পাসছাড়া করে।
পরদিন প্রথম আলোসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এ ঘটনা নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন ছাপা হয়। সিলেটের মুখ্য মহানগর বিচারিক হাকিম মো. সাইফুজ্জামান হিরো ফৌজধারী কার্যবিধির ক্ষমতাবলে এক আদেশে ধাওয়াকারীদের চিহ্নিত করে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে মহানগর পুলিশকে নির্দেশ দেন।
আদালতের স্বতঃপ্রণোদিত ওই আদেশে ৩১ জানুয়ারি প্রথম আলোয় ‘দা উঁচিয়ে ছাত্রদলকে ধাওয়া’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।
আদেশে বলা হয়, সিলেট এমসি কলেজ দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী চক্রের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে, যা বারবার জাতীয় পত্রিকার শিরোনাম হচ্ছে। এই ঘটনা জনশৃঙ্খলা ও আইনের শাসনের প্রতি চরম হুমকিস্বরূপ। পত্রিকায় প্রকাশিত ওই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের (ছাত্রদলকে ধাওয়া) জন্য কারা, কীভাবে দায়ী, তা শনাক্ত করে ঘটনা তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। এ বিষয়ে তদন্ত করে পুলিশ কমিশনারকে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন আদালত।
আদালত সূত্র জানায়, দুই দফা সময় নিয়ে ১৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। ১৫ ফেব্রুয়ারি আদালত তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ‘দা উঁচিয়ে ধাওয়াকারী’ হিসেবে চিহ্নিত ছয়জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। একই সঙ্গে দ্রুত বিচার আইনে মামলা রেকর্ডভুক্ত করার আদেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় আজ আদালতে পাঁচজন আত্মসমর্পণ করেন। আপন (২৩) নামের অপর একজন পলাতক রয়েছেন। তিনিও এমসি কলেজের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের কর্মী।