২০১১ সালে বারাক ওবামার শাসনামলে রুমানা হোয়াইট হাউসে চাকরি গ্রহণ করেন। গত বছরের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়ের পর তিনি ব্যক্তিগতভাবে অস্বস্তিবোধ করা সত্ত্বেও নিরাপত্তা পরিষদে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু আট দিনের বেশি তাঁর পক্ষে সে চাকরিতে থাকা সম্ভব হয়নি। ‘যে প্রশাসন আমাকে ও আমার মতো (মুসলিমদের) যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ভাবার বদলে হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে, সেখানে আমার পক্ষে কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।’ ওই লেখায় বলেছেন রুমানা।
রুমানা নিজেকে ‘হিজাবি’ বলে পরিচয় দিতে ভালোবাসেন। বারাক ওবামার প্রশাসনে তিনি নিরাপত্তা পরিষদের উপপ্রধান বেন রোডসের একজন উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি প্রতিদিন হিজাব পরেই দায়িত্ব পালন করতেন। বারাক ওবামার সঙ্গে তাঁর একটি ছবি সে সময় হোয়াইট হাউস ব্যাপকভাবে প্রচার করে। ঢাকার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের উদ্যোগে বাংলাদেশিদের সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে তাঁর আলাপচারিতার একটি ঘটনাও ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে।
কেন পদত্যাগ করছেন, সে কথা নিরাপত্তা পরিষদের যোগাযোগ উপদেষ্টা মাইকেল এন্টনকে ব্যাখ্যা করে রুমানা বলেন, ‘ট্রাম্পের মুসলিম আগমন নিষিদ্ধ ঘোষণার পর কাজ চালিয়ে যাওয়া তাঁর পক্ষে অসম্ভব হয়ে উঠেছে।’
রুমানা এন্টনকে জানান, ‘আমি তাঁকে জানাই, (এই ঘোষণার পর) দেশের সবচেয়ে ঐতিহাসিক এই ভবনে প্রতিদিন প্রবেশ করা আমার জন্য রীতিমতো অপমানজনক একটি ব্যাপার হয়ে উঠেছে। একজন আমেরিকান ও মুসলিম হিসেবে আমি যা বিশ্বাস করি, এই প্রশাসন তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।’ জবাবে কিছুটা বিস্মিত হয়ে তিনি জানতে চান, রুমানা কি একদম চাকরি থেকে পদত্যাগ করছে। রুমানা ‘হ্যাঁ’ জানানোর পর এন্টন কিছুই বলেননি।
রুমানা তাঁর ওই রচনায় লেখেন, ‘আমি পরে জানতে পেরেছি মাইকেল এন্টন নিজে ছদ্মনামে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে আমেরিকার জাতিগত বৈচিত্র্যকে ‘দুর্বলতা’ এবং ইসলাম ধর্মকে আধুনিক পশ্চিমা সভ্যতার সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ বলে বর্ণনা করেন।’
রুমানার রচনাটি এইখানে পাওয়া যাবে <http://theatln.tc/2 mgyQFA>
রুমানার বাংলাদেশি পিতা-মাতা ১৯৭৮ সালের যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। তাঁরা মার্কিন রাজধানীর সন্নিকটে ম্যারিল্যান্ডে বসবাস করেন। এখানেই রুমানার জন্ম। রুমানা তাঁর রচনায় জানান, তাঁর মা শুরুতে ক্যাশিয়ার হিসেবে কাজ শুরু করেন। তাঁর পিতা ব্যাংক অব আমেরিকায় কাজ শুরু করে এই ব্যাংকের সহকারী উপপ্রধান পদে উন্নীত হন।