জলমহালের দখল নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ৩

Slider সিলেট

e3c7059bf6345b922336ff64b3ca0ce1-sunamgonj

সুনামগঞ্জ; সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় একটি জলমহালের দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিতে তিনজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের হাতিয়া গ্রামের পাশের জারুলিয়া জলমহালে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তি হলেন হাতিয়া গ্রামের তাজুল ইসলাম (৩৩), আকিলপুর গ্রামের সাহারুল ইসলাম (২৮) ও উজ্জ্বল মিয়া (৩০)। এ ঘটনায় আহত আল আমিন (২৫), সোনা মিয়াকে (২২) দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আর অন্তত ২০ জন ভর্তি আছেন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, জারুলিয়া জলমহালটি দিরাই উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে। ওই জলমহালের দখল নিয়ে স্থানীয় দক্ষিণ নাগেরগাঁও মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক ধনঞ্জয় দাস ও হাতিয়া গ্রামের বাসিন্দা একরার হোসেনের মধ্যে বিরোধ চলছে। ধনঞ্জয় পৌর মেয়র মোশাররফ মিয়ার অনুসারী। নিহত তিনজনই একরার হোসেনের লোক। জারুলিয়া জলমহালটি প্রশাসনের কাছ থেকে নাগেরগাঁও মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির নামে ইজারা নেওয়া হয়েছে।

ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সকাল ১০টার দিকে একরার হোসেনের লোকজন জলমহালের দখল নিতে গেলে সেখানে থাকা নাগেরগাঁও মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির লোকজন বাধা দেন। এতে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়। এতে বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। আহত তাজুল ইসলামকে বেলা দেড়টার দিকে দিরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। একই ঘটনায় গুরুতর আহত সাহারুল ইসলাম ও উজ্জ্বল মিয়াকে বেলা তিনটার দিকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।

নাগেরগাঁও মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক ধনঞ্জয় দাস জানান, আজ সকালে একরার হোসেনের লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জলমহালের দখল নিতে যায় এবং তাঁদের ওপর হামলা চালায়। তিনি দাবি করেন, তাঁরা কাউকে গুলি করেননি। একরার হোসেনের লোকজন নিজেরাই নিজেদের লোকদের মেরে এখন তাঁদের ফাঁসাতে চাইছে।

একরার হোসেন বলেছেন, তিনি সমিতির কাছ থেকে ছয় বছরের চুক্তিতে জলমহালে মাছ ধরার জন্য নিয়েছেন। জলমহালটি তাঁর দখলে আছে। সকালে দিরাই পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ মিয়ার লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সেখানে গিয়ে তাঁদের ওপর হামলা ও গুলি চালিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।

ওসমানী মেডিকেলে আহত লেবু মিয়া বলেন, পৌর মেয়রই এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। পৌর মেয়রের লোকজন হামলা চালায়।

পৌর মেয়র মোশাররফ মিয়া এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘আমি আওয়ামী লীগ করি, দিরাইয়ে যারা আওয়ামী লীগ করে, সবাই আমার লোক। আমি দিরাই পৌর শহরে থাকি, আমার কোনো বিলের ব্যবসা নেই। এসবের কোনো কিছুই আমি জানি না।’

সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. হারুন-অর-রশীদ বন্দুকের গুলিতে তিনজন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। এখনো কাউকে আটক করা হয়নি।

ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক মফিজউদ্দিন আহমদ বলেন, এ ঘটনায় ছররা গুলিতে আহত হয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। ভর্তি আছেন ২০ জন।

দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল জলিল জানান, নিহত তাজুল ইসলামের শরীরে বন্দুকের গুলির চিহ্ন আছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *