পালিয়ে বেড়ান, ব্যাপারটা কী?

Slider রাজনীতি

9ef21eed07b117b17085b6d6143708ed-untitled-1

 

 

 

ঢাকা; প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘এতিমের টাকা চুরি করে খেয়েছেন। এতিমের নামে টাকা এসেছে। মামলায় হাজিরা দিতে যান। একদিন যান তো ১০ দিন যান না, পালিয়ে বেড়ান, ব্যাপারটা কী? এতেই তো ধরা পড়ে যায় যে চোরের মন পুলিশ পুলিশ।’

আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় সভাপতির বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। বেলা সোয়া তিনটার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পৌঁছান তিনি। বক্তব্যের শুরুতেই বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে দেশের মানুষের উচ্ছ্বাস, আবেগের কথা তুলে ধরেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। বরাবরের মতোই সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের দৃঢ় অবস্থানের কথা তুলে ধরেন তিনি।
খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাঁর কাছ থেকে রাজনীতি শিখতে হবে, গণতন্ত্র শিখতে হবে—সেটা বাংলাদেশের মানুষ কোনোভাবে মেনে নেবে না। আজকে দেশের মানুষ শান্তিতে আছে, স্বস্তিতে আছে। দেশের মানুষ সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখে। মানুষ যখন ভালো থাকে, তখন তাঁর অন্তরজ্বালা সৃষ্টি হয়। এটাই হচ্ছে দুর্ভাগ্যের।’ তিনি বলেন, যারা মানুষ হত্যা করে এবং যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানায়, তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা শোভা পায় না। তারা সন্ত্রাসী-জঙ্গি। জঙ্গিদেরও তারা উসকে দিচ্ছে। বাংলার জনগণই একদিন তাদের বিচার করবে। গণ-আদালতে এদের বিচার হবে।
২০১৫ সালে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের নামে সহিংসতার কঠোর সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘তারা কী করেছে? মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। বিএনপির নেত্রী আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছেন, মানুষ হত্যা করেছেন। তিনি নির্বাচন করতে দেবেন না, নিজেও করবেন না। তারপর হত্যা শুরু করেন।’
জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মাটিতে কখনো কোনো সন্ত্রাসের স্থান হবে না। তার জন্য এ দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ; মসজিদের ইমামসহ শিক্ষক, অভিভাবক সবার কাছে আমি আহ্বান জানাই—সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এ পথে যেন কেউ না যায়, এর জন্য সেভাবেই মানুষকে শিক্ষা দিতে হবে, তারা যেন শান্তির পথে থাকে।’
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ইসলাম হলো শান্তির ধর্ম, সৌহার্দ্যের ধর্ম, ভ্রাতৃত্বের ধর্ম। ইসলাম কখনো মানুষ হত্যা শেখায় না। বিচার করবেন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। শেষ বিচার তাঁর হাতে। কে ভালো করে না-করে তিনি বিচার করবেন। ইসলামে আত্মহত্যা মহাপাপ। অথচ আজকে যারা ধর্মের নামে সন্ত্রাস করছে অথবা আত্মঘাতী হচ্ছে; যারা মনে করে আত্মঘাতী হয়ে বেহেশতে চলে যাবে, তারা কখনো বেহেশতে যাবে না, তারা দোজখে যাবে। ইসলাম কখনো আত্মঘাতী হওয়া, মানুষ খুন করা কখনো প্রশ্রয় দেয় না।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা দিয়েছি বিদ্যুৎ। আর বিএনপি দিয়েছে খাম্বা। খাম্বা কেন? বিদ্যুৎ নেই, খাম্বা কিনে টাকা শেষ। খাম্বা ছিল বিএনপি নেত্রীর ছেলের কোম্পানি। খাম্বা বানাত আর খাম্বা দিত। রাস্তার পাশে শুয়ে আছে খাম্বা, বিদ্যুতের খবর নেই। এটাই ছিল বাংলাদেশের চেহারা।’ তিনি বলেন, ‘আমরা এখন ১৫ হাজার ১৩৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছি। আজকে বিদ্যুতের হাহাকার নেই।’
সরকারের লক্ষ্যের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই বাংলাদেশকে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলব। বাংলাদেশ হবে দারিদ্র্যমুক্ত। ২০২১ সালে আমরা সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব। বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার কমাব। সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি করব। প্রত্যেকটি ছেলেমেয়ে লেখাপড়া শিখবে। বাংলাদেশের মানুষ খাদ্যনিরাপত্তা পাবে, পুষ্টি পাবে। ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা—সব ক্ষেত্রে যাতে ডিজিটাল হয়, তার ব্যবস্থা করে দেব।’
গ্রামের উন্নয়নের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিটি গ্রামই একটি নগর হিসেবে গড়ে উঠবে। গ্রামের মানুষও উন্নত জীবন পাবে। সেটাও আমরা নিশ্চিত করব। সমগ্র বাংলাদেশই হবে উন্নত, সমৃদ্ধ ও সোনার বাংলাদেশ।’
জনসভায় আরও বক্তব্য দেন সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক, দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *