ছাদেকুল ইসলাম রুবেল/গাইবান্ধা প্রতিনিধি ঃ গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে আমন ধান ঘরে তুলে এখন ৮ ইউনিয়নের আলু চাষিরা আগাম আলু চাষে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। প্রতি বছর আগাম জাতের আলু চাষ করে লাভবান হওয়ায় গত বছরের তুলনায় বেশি জমিতে আলু চাষ করছে উপজেলার কৃষকেরা। কিছু দিন আগে যে জমির ধান কেটে ঘরে তুলেছে প্রান্তিক কৃষক, সেই জমিতেই এখন আগাম আলুর বীজ বোপনে ব্যস্ত তারা।
পলাশবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, আবহাওয়া অনুকুলে থাকার কারণে গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রত্যেকটি কৃষক আলু চাষ করে অধিক মুনাফা লাভ করতে পারবে। গত বছর উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে প্রায় ২৮০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়। এবার গত বছরের তুলনায় উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের জমিতে বেশি পরিমান আগাম আলু উৎপাদন হবে বলে মনেকরছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ। এ বছর আবহওয়া ভালো থাকায় এবং আলুর বীজ ভালো পাওয়ায় খুশি মনে আলু চাষে ঝেঁকে পড়েছে উপজেলার কৃষক।
উপজেলার শালমারা গ্রামের কৃষক শরিফুল জানান, এবার ১২-১৩ বিঘা জমিতে আলু চাষ করবো। হিমাগারে বীজ রেখে বীজের মান ভালো পেয়েছি। আমার বীজের কোন সমস্যা নেই। জমিতে প্রতিদিন ১০-১২ জন কৃষক আলুর জমি তৈরির কাজ করছে। তবে আবহাওয়া ভালো থাকলে গত বছরের তুলনায় এবার বেশি লাভের আশা করছি।
উপজেলার পারবতীপুর গ্রামের মোঃ ফারুক জানান, গত বছর রাজনৈতিক অস্থিরতার কবলে পড়ে প্রায় দুই লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। এবার আশা করছি কোন ধরনের সমস্যা না হলে আলুতে খরচের চেয়ে দ্বিগুন লাভ হবে। আলুর বীজের ক্ষতি সম্পর্কে উপজেলার কেত্তারপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি হিমাগারে বীজের জন্য আলু রেখেছিলাম আমার বীজের কোন পচন সমস্যা দেখা দেয়নি এবং আলুর বীজ ভালো অবস্থায় পেয়েছি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমাদের অধিক পরিমান বীজ হিমাগারে রাখতে হয়। কিন্তু পলাশবাড়ী উপজেলায় কোন হিমাগার না থাকায় আমাদের প্রতিবছর ভোগান্তি পোহাতে হয়। তাই পাশ্ববত্তী সাদুল্যাপুর ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ২টি হিমাগারে আলু রাখা হয়। যদি পলাশবাড়ী উপজেলা হিমাগার থাকতো আলু সংরক্ষণে কৃষকরা আলু চাষ করে স্বস্তি পেত।
অপরদিকে আলু চাষের জন্য উপজেলার কৃষি বিভাগ থেকে যথেষ্ট পরিমান সহযোগিতা ও পরার্মশ দেওয়ার জন্য প্রতিদিন উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে উপজেলা সহকারী কর্মকর্তারা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কৃষি পরার্মশ দিয়ে যাচ্ছেন।
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম জানান, এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রত্যেকটি কৃষক আলু চাষ করে অধিক মুনাফা লাভ করতে পারবে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদেরকে যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। প্রাকৃতিক দূর্যোগে কোন প্রকার ক্ষতি না হলে পলাশবাড়ী উপজেলায় আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভবনা রয়েছে।
শুধু তাই নয় আলু চাষের জমিগুলো উর্ব্বরতা বেশি থাকায় কৃষকরা ইরি-বোরো চাষেও এর সুফল পাবে। উপজেলার আলু চাষিরা যেভাবে আলু চাষে ঝেঁকে পড়েছে তাতে গাইবান্ধা জেলার মানুষের আলুর চাহিদা পূরণ করেও দেশের বিভিন্ন জেলায় কয়েক হাজার টন আলু রফতানি করতে পারবে।