মুম্বইয়ে ১৩ বাংলাদেশি তরুণী উদ্ধার

Slider সারাবিশ্ব

38225_c1

রাজিব পাল মুম্বাই থেকে; গতকাল মুম্বই থেকে প্রকাশিত ফ্রি  প্রেস জার্নালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়: মুম্বইয়ের নিষিদ্ধ পল্লী থেকে উদ্ধার করা ১৩ বাংলাদেশি তরুণীকে দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। তারা এখন একটি হোমে আছে। সূত্রগুলো বলেছে, এসব তরুণীদের অনেকেই দরিদ্র পরিবার থেকে এসেছে। যাদেরকে প্রধানত চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে মুম্বইতে আনা হয়েছে।

রেস্কিউ ফাউন্ডেশন নামের একটি এনজিওর  কর্মকর্তা রাজেশ চতুর্বেদী বলেছেন, এসব তরুণীদের অনেকে বলেছে, তারা গৃহপরিচারিকার কাজ করতে পারে। কেউ বলেছে, তারা বারগুলোতে ওয়েট্রেসের কাজ করতে পারে। আর সেসব করার সুযোগ পেলে তাদের উপার্জনও ভালো হবে।
কিছু ক্ষেত্রে এসব মেয়েদের জীবনের কোনো একটা পর্যায়ে হয়তো একজন ‘স্বামীর’ দেখা মিলেছে, যারা ‘স্ত্রীদের’ মুম্বইতে নিয়ে এসেছে। এবং এভাবেই তাদের জীবনে দারিদ্র্যের জীবনের গল্প সাজানো হয়েছে। এরকম স্বামী হয়তো কোনো ভিকটিম তরুণীর কাছে তার দারিদ্র্যের গল্প বলেছে। আর তাতে প্রলুব্ধ হয়ে এসব মেয়েরা পতিতাবৃত্তিতে নিয়োজিত হয়েছে। তারা বলেছে, পরিবারে কিছু টাকা পাঠাতে এছাড়া তাদের সামনে আর কোনো পথ খোলা ছিল না।
ওই এনজিওতে কর্মরত কাউন্সেলর লিনা যাদব বলেছেন, সীমান্ত এলাকায় চোরাচালানীদের একটি নেটওয়ার্ক রয়েছে, যারা কতিপয় বন্ধুর সীমান্ত পাড়ি দিয়ে প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশি মেয়েদের ভারতে নিয়ে আসে। এসব মেয়েদের একটা ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করতে বলা হয়। আর সেই পরিচয় প্রকাশ পায়, যখন তারা ভারতে কোন স্থানীয় কর্র্তৃপক্ষের মুখোমুখি হয়ে পড়ে। আর একবার ভারতে নিয়ে আসার পরে এসব মেয়েরা দেহ ব্যবসায় নিয়োজিত হতে বাধ্য হয়। তাদের কর্ম সংস্থান হয় বিভিন্ন পতিতা পল্লীতে মুম্বই, নাভি মুম্বই, ভিওয়ান্দি, নেরুল  ও ভাসি এলাকায়, এসব মেয়েদের এসব এলাকাতেই বেশি দেখা যায়।
এই ১৩ বাংলাদেশি তরুণীকে সাম্প্রতিক কিছু অভিযানে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এবং তাদেরকে এখন একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। এই তথ্য দিয়ে যাদব বলেছেন, এখন এসব মেয়েদের তাদের দেশে ফিরিয়ে দিতে হলে আমাদের কিছু বিশেষ পারমিটের দরকার হবে। তাদেরকে বাংলাদেশ সীমান্তে নিয়ে যেতে হলে সংশ্লিষ্ট এনজিওকে কাস্টমস এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মতো বিভিন্ন দফতরে ধরনা দিতে হবে।
মি. চতুর্বেদী আরো উল্লেখ করেছেন, এনজিওর পক্ষ থেকে ভারতের বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। যাতে এসব ভিকটিমদের তাদের হাতে তুলে দেয়া সম্ভব হয়। আর সেটা সম্ভব হলে তারা বাংলাদেশে তাদের অবস্থানরত পরিবারের সঙ্গে পুনরায় মিলিত হতে পারবে। ফিরে যেতে পারবে স্বাভাবিক জীবনে।
তিনি আরো উল্লেখ করেন যে, এসব মেয়েদের পরিবারগুলোকে তাদের জীবনের দুর্দশার কথা অবহিত করা হয়নি। বরং তারা যাতে নতুন জীবন শুরু করতে পারে, সে ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়েছে। তারা  যতদিন এ পুনর্বাসন কেন্দ্রে থাকবে, ততদিন আমরা তাদেরকে সেলাই, পোশাক তৈরি ও পশু পালনের মতো বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *