ঢাকা; ধন সম্পদের অধিষ্ঠাত্রী দেবী লক্ষ্মীর পূজা আজ। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। সনাতন ধর্মের অনুসারীদের বিশ্বাস, ধন-সম্পদ-ঐশ্বর্যের দেবী লক্ষ্মী। এছাড়া তিনি হলেন জ্ঞান, আলো, সৌভাগ্য, উর্বরতা, দানশীলতা, সাহস ও সৌন্দর্যের প্রতীক। বাঙালি হিন্দুদের বিশ্বাস লক্ষ্মীদেবী দ্বিভূজা। তিনি ঈশ্বরের পালন রূপ শক্তি নারায়ণী। যাকে ভক্তরা ধন সম্পদের অধিষ্ঠাত্রী, অন্নদাত্রী দেবীরূপে আখ্যায়িত করে পূজা করেন। আজ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে আওয়াজ উঠবে- ‘এসো মা লক্ষ্মী বসো ঘরে, আমারই ঘরে থাকো আলো করে’। হিন্দু শাস্ত্রমতে সাধারণত প্রতি বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীপূজা করা হয়। লক্ষ্মীর পাচালি পাঠ করা হয়। তবে, আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের পূর্ণিমা তিথিতে লক্ষ্মীপূজা হয়ে থাকে। এ জন্য এ পূজা কোজাগরি লক্ষ্মী পূজা হিসেবেও পরিচিত। কোজাগরি শব্দটি এসেছে ‘কো জাগর্তি’ থেকে, যার অর্থ ‘কে জেগে আছো?’ সনাতন বিশ্বাস অনুযায়ী মতে, এ রাতে মা লক্ষ্মী ধন-সম্পদ দিতে যে কোনো সময় ঘরের দ্বারে এসে ‘কো জাগর্তি’ বলে ডাক দেন। প্রচলিত বিশ্বাস-জেগে থাকা মানুষেরাই এ ধন লাভের অধিকারী হয়। তাই ব্রতকারীরা মায়ের ডাকের প্রতীক্ষায় সারা রাত জেগে থাকেন।
ধন সম্পদে পূর্ণবান হয়ে আজ মা লক্ষ্মী আসবেন ধরনীতে। অন্নপূর্ণার আলতা রাঙা পায়ের চিহ্ন আঁকা হবে ঘরে ঘরে। ধন-সম্পদের আশায় হিন্দু নারী ও পুরুষেরা উপবাস ব্রত পালন করবেন। ফুল, ফল, মিষ্টি নৈবেদ্য দিয়ে লক্ষ্মী মায়ের আরাধনা করবেন। তার চরণে দেবেন পুষ্পাঞ্জলী। লক্ষ্মী পদ্মফুলের উপর উপবেশন করে থাকেন। তার বাহন পেঁচা। সাধারণত লক্ষ্মীপূজা পঞ্চোপাচার, দশোপাচার বা ষোরশোপাচারে করা হয়। পূজাস্থলে বিভিন্ন আলপনা আঁকাসহ গৃহের বিভিন্ন স্থানে লক্ষ্মী দেবীর প্রতীকী পায়ের ছাপ আকা হয়। পূজা শেষে পুষ্পাঞ্জলী ও প্রসাদ বিতরণ করা হয়। বাংলাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা আজ যার যার সাধ্যমত মন্দির, মণ্ডপ ও ঘরে ঘরে লক্ষ্মীপূজার আয়োজন করবেন। এ উপলক্ষে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রমনা কালী মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ-মন্দিরসহ দেশের বিভিন্ন স্থায়ী মন্দির ও মণ্ডপে লক্ষ্মীপূজার আয়োজন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে পূজার্চ্চনা, পুষ্পাঞ্জলী, প্রসাদ বিতরণ, আরতি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকছে।