ফেনী; সোনাগাজীতে এক যুবককে মাথা ন্যাড়া করে জুতার মালা পরিয়ে শাস্তি প্রদান ও অপর এক গৃহবধুকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই চেয়ারম্যানের নাম নুরুল ইসলাম ভুট্টু (৩৮)। তিনি আওয়ামী লীগের উপজেলা কমিটির নেতা। শনিবার মধ্যরাতে ফেনী শহরের ডাক্তার পাড়া এলাকার শ্বশুর বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ভুট্টু সোনাগাজী উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। সোনাগাজী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হুমায়ুন কবীর জানান, গত শুক্রবার বিকালে উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের চরশাহাভিকারী গ্রামের কারামতিয়া বাজার সংলগ্ন এলাকায় চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ভুট্টু শতশত মানুষের সামনে এক যুবক ও এক নারীকে নির্যাতন করেন। পরোকিয়া প্রেমের জের ধরে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে ও স্থানীয় চা দোকানী নুর আলমকে আটক করে স্থানীয় বখাটেরা। পরে তারা বিষয়টি বিচার করার জন্য চেয়ারম্যান ভুট্টুর কাছে হাজির করে। চেয়ারম্যান এসময় গৃহবধুর মাথার চুল কাটতে চাইলে গৃহবধুটি চেয়ারম্যানের পা ধরে ক্ষমা চায়। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান ওই গৃহবধুর গোপন অঙ্গে হাত দেন। অপর দিকে চা দোকানী যুবক নুর আলমের মাথার চুল কেটে গলায় জুতোর মালা পরিয়ে দেন। এ সময় চেয়ারম্যান উভয়কে এক সঙ্গে পুরো গ্রাম ঘুরানোর আদেশ দেন। আদেশ পেয়ে চেয়ারম্যানের লোকজন উভয়কে এ অবস্থায় গ্রামের বিভিন্ন পথ ঘুরায়। এর আগে ওই যুবকের কাছ থেকে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে চেয়রাম্যান ও স্থানীয় বখাটেরা। এ ঘটনায় নির্যাতিতদের ভয়ভীতি প্রদান করা হলে তারা শনিবার বিকেল পর্যন্ত থানায় কোন লিখিত অভিযোগ করেনি। এদিকে নির্যাতনের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেইসবুক) ছড়িয়ে পড়লে শনিবার বিকেলে স্থানীয় কয়েকটি অনলাইন গণমাধ্যম এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করে। এর জের ধরে পুলিশ প্রশাসন বিষয়টি জানতে নির্যাতিতদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের সহযোগিতায় শনিবার রাতে নির্যাতিত ওই গৃহবধু বাদি হয়ে নারী নির্যাতন আইনে ও নির্যাতিত যুবক নুর আলম বাদি হয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ভুট্টুর বিরুদ্ধে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করে। উভয় মামলায় চেয়ারম্যানসহ পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৮/১০জন কে আসামী করা হয়। মামলার পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে শনিবার মধ্যরাতেই ফেনী শহরের ডাক্তার পাড়া এলাকার শ্বশুর বাড়ি থেকে চেয়ারম্যান ও মামলার প্রধান আসামী নুরুল ইসলাম ভুট্টুকে গ্রেপ্তার করে। অপর আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছে ওসি হুমায়ুন কবীর।