গুলি করে মেরে ফেলার মানে কী—প্রশ্ন মওদুদের

Slider ফুলজান বিবির বাংলা

5202085f49625-moudud

ঢাকা: বিভিন্ন স্থানে চলা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলোকে ‘রহস্যজনক’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির নেতা মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, গুলি করে মেরে ফেলার মানে হলো আপনি তদন্ত চান না, সত্যিকার তথ্য বের করতে চান না। এ জন্য মানুষের মনে বিরাট সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

আজ রোববার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত ‘বিএনপির ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ এসব কথা বলেন।

মওদুদ আহমদ বলেন, এখন বিচারবহির্ভূত হত্যা অনেক বেড়ে গেছে; গুম, অপহরণ বেড়ে গেছে। যেটা সবচেয়ে রহস্যজনক বা বিস্ময়কর, তা হচ্ছে আসামিদের ধরে বলা হলো, এরাই হলো মূল হোতা, মাস্টারমাইন্ড। কিন্তু তাদের পেছন দিক থেকে গুলি করে মেরে ফেলার কী অর্থ থাকতে পারে। তাদের যদি জীবিত রাখা যেত, তাহলে অনেক তথ্য পাওয়া যেত।

সরকারের উদ্দেশে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আপনারা সব তথ্য জোগাড় করতে চান এবং জঙ্গিবাদকে নির্মূল করে দিতে চান। যদি তা-ই হয়, কেন আপনি তাকে গুলি করে মেরে ফেলছেন। আমরাও আসামি ছিলাম, আসামি তো আসামি, আসামিরা নিরুপায়, বন্দী। আসামি কী করে বন্দুকযুদ্ধ করে? বন্দী অবস্থায় তাদের কীভাবে গুলি করে মেরে ফেলা হয়।’

‘আসামিদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে’—এ মন্তব্য করে মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আমি কোনো দিন শুনিনি যে পৃথিবীর কোনো দেশে আসামিকে মেরে ফেলা হয়। আসামিকে ধরে বিচার করে তাঁর ফাঁসির ব্যবস্থা করেন। তার মাধ্যমে আপনারা যে নেটওয়ার্কের কথা বলেন, সেগুলো উদ্‌ঘাটনের ব্যবস্থা করেন। এরপর বিচার করে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিতে হবে।’

বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের সাবেক এই আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সময় আমরা বাংলা ভাই এবং শায়খ আবদুর রহমানসহ ওদের টপ লিডার ছয়জনের বিচার করেছিলাম এবং তাদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ হয়েছিল। আমরা তাদের বাঁচিয়ে রেখেছিলাম। গুলি করে মেরে ফেলার মানেটা কী? মানে হলো আপনি তদন্ত চান না এবং সত্যিকার তথ্য বের করতে চান না।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, আজকে গণতন্ত্রহীনতার কারণে দেশে রাজনীতি নেই, রাজনীতির পরিবেশ নেই। যার কারণে উগ্রবাদের দ্রুত উত্থান হতে চলেছে। তিনি ব্লগার হত্যা, পুরোহিত, মোয়াজ্জিন, গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার ঘটনার উল্লেখ করে বলেন, সরকার একটারও বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেনি। এ জন্য মানুষের মনে সন্দেহ জাগে।

মন্ত্রিসভা কমিটি জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা পুরস্কার প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে মওদুদ আহমদ বলেন, ‘এর চেয়ে নির্লজ্জ, আত্মঘাতী এবং হীনম্মন্যতা আর কিছু হতে পারে না। এটা সরকারের ভুল সিদ্ধান্ত।’ তিনি বলেন, ‘সরকার পদক প্রত্যাহার করে নিলেও জিয়াউর রহমান যে কোটি কোটি মানুষের মনে রয়েছেন, সে জিয়াকে প্রত্যাহার করা সম্ভব হবে না। আশা করি, সরকারের আত্মোপলব্ধি হবে।’

মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতা আবুল হোসেন, সাদেক আহমেদ খান প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *