সিম নিবন্ধনের সংখ্যা জটিলতা সমাধানের উপায় খুঁজছে মন্ত্রণালয়

Slider তথ্যপ্রযুক্তি ফুলজান বিবির বাংলা

 

27073_f11
বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মোবাইল সিম নিবন্ধন নিয়ে নতুন জটিলতায় পড়েছে মন্ত্রণালয় ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। সরকারের তরফ থেকে একজন গ্রাহক ৫টির বেশি সিম রাখতে পারবেন না- এ সিদ্ধান্ত আসার পর বিপাকে পড়েছেন তারা। কারণ, এর আগে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছিলো একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ২০টি সিম নিজের নামে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। তাই নতুন সিদ্ধান্ত আসায় আগের গ্রাহকরা সিম কি করবেন তার কোনো দিকনির্দেশনা নেই। বিষয়টি নিয়ে কয়েক দফা বৈঠকও করা হয়েছে। তবে সমাধান মেলেনি। এ নিয়ে আরো বৈঠক করে সমাধান খোঁজা হবে। এদিকে মোবাইল অপারেটররা এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তবে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত আসার পরে তারা প্রতিক্রিয়া জানাবেন বলে জানান। অন্যদিকে মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল ফোন অপারেটরস অব বাংলাদেশ (অ্যামটব) বিষয়টি নিয়ে বিব্রত বলে জানিয়েছে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এর আগে মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসি’র সঙ্গে একাধিক বৈঠক করে ২০টি সিম নির্ধারণ করা হয়। এরপর বিপুল আয়োজনের বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে সরকারের ওই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করে মোবাইল ফোন অপারেটররা। এখন নতুন করে সিদ্ধান্ত নেয়া হলো ৫টি সিম। এর সমাধান কী হতে পারে আমরা জানি না। মন্ত্রণালয় আগে বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিক তারপর আমরা পদক্ষেপ নেবো। এ প্রসঙ্গে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এম রায়হান আখতার গতকাল মানবজমিনকে বলেন, সিম নিয়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হওয়ায় সমাধান খুঁজে বের করা হয়নি। শিগগিরই বৈঠক করে সমাধান বের করা হবে। মোবাইল অপারেটরদের এ নিয়ে কোনো সুপারিশ আছে কিনা প্রশ্নে তিনি বলেন, এখনও তাদের কাছ থেকে কোনো সুপারিশ পাওয়া যায়নি। বিষয়টি কিছুটা জটিল বলে মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, অপারেটরদের সঙ্গে বৈঠক করে ২০টি সিম রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিলো। এখন নতুন সিদ্ধান্ত আসায় ওই সিদ্ধান্ত থেকে আমাদের সরে আসতে হচ্ছে। তিনি জানান, এখন যারা সিম নিবন্ধন করবেন তারা একটি জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে ৫টির বেশি সিম নিবন্ধন করতে পারছেন না। সম্প্রতি জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ফয়জুর রহমান চৌধুরী জানান, ২০টি নয় একজন সর্বোচ্চ ৫টি সিম নিবন্ধন করতে পারবেন। যাদের সিম সংখ্যা বেশি হবে তাদের এসএমএস করে জানিয়ে দেয়া হবে এবং ওই সিমগুলো বন্ধ করে দেয়া হবে। তবে কেউ চাইলে অন্য কারও নামে (যাদের এনআইডি আছে এবং ৫টি সিম নিবন্ধন হয়নি) ওই সিমগুলো আবারও নিবন্ধন করতে পারবেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিবেশী দেশ ভারতে এক এনআইডির বিপরীতে একটি অপারেটরের ৯টি  এবং শ্রীলঙ্কায় ১০টি সিম রাখার নিয়ম রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই সরকারের এ ধরনের জটিল এবং কঠিন সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে অনেকেই তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। বিটিআরসি’র সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী প্রায় ১২ কোটির মতো  সিম বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত হয়েছে। নিবন্ধন না করায় এক কোটি ৬০ লাখের মতো সিম এখন নিষ্ক্রিয় রয়েছে। ভুয়া পরিচয়ে অথবা নিবন্ধন ছাড়া সিম কিনে নানা অপরাধে ব্যবহারের অভিযোগ বাড়তে থাকায় গ্রাহকদের তথ্য যাচাই ও সিম পুনঃনিবন্ধনের উদ্যোগ নেয়া হয়। এরপর মোবাইল গ্রাহকদের সিমের তথ্য যাচাইয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য ভাণ্ডার ব্যবহারের প্রক্রিয়া শুরু হয়। গত বছরের ১৬ই ডিসেম্বর সিম নিবন্ধনে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু হওয়ায় আঙুলের ছাপ না দিয়ে এখন আর নতুন সিম কেনা যাচ্ছে না। সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে দেশে ব্যবসার পাশাপাশি সেবা দিয়ে যাচ্ছে ৬টি মোবাইল ফোন অপারেটর। এগুলো হচ্ছে- টেলিটক, গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি, এয়ারটেল ও সিটিসেল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *