দুইশ’ আটাশ বছরের ইতিহাস পেছনে ফেলে নতুন ঠিকানায় স্থানান্তর হলো ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার। গতকাল নাজিম উদ্দিন রোডের কারাগার থেকে ৬৪০০ বন্দিকে কেরানীগঞ্জে নবনির্মিত কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে। এখন পুরনো কারাগারটি পার্ক আর জাদুঘরে রূপান্তরের অপেক্ষায়। নতুন কারাগারে বন্দি স্থানান্তরের মধ্য দিয়ে দেশের কারা ইতিহাসে যুক্ত হলো নতুন এক অধ্যায়। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত এ কারাগার বন্দিদের নিরাপত্তা ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ভোরেই পুরনো কারাগারকে বিদায় জানিয়ে প্রিজন ভ্যানে চড়ে নতুন ঠিকানায় যাওয়া শুরু করেন বন্দিরা। দুদিনে সরানোর কথা থাকলেও প্রথমদিন সন্ধ্যার মধ্যে সব বন্দি স্থানান্তর সম্ভব হয়েছে। কেরানীগঞ্জে নতুন কারাগারে পৌঁছার পর ফুলের শুভেচ্ছায় নতুন ঠিকানায় বরণ করা হয় হাজতি ও কয়েদিদের। গত ১০ই এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, কেরানীগঞ্জ’ উদ্বোধনের ৩ মাস ১৯ দিন পর গতকাল বন্দিদের সরিয়ে নেয়া হলো। এর মধ্য দিয়ে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার পতনের পর বৃটিশ আমলে ১৭৮৮ সালে ১৭ একর জায়গার ওপর স্থাপিত কারাগারটি ১৯৪ একরের বৃহৎ পরিসরে স্থানান্তর হলো।
কারা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন গতকাল তার কার্যালয়ে বলেন, বন্দিদের খাবার প্রস্তুত করার জন্য গত বৃহস্পতিবার প্রথম পর্যায়ে রান্না-বান্নার কাজে নিয়োজিত সশ্রম কারাদণ্ড প্রাপ্ত ৫০ জন বন্দিকে নতুন কারাগারে পাঠানো হয়। তারা নতুন কারাগারের সুপরিসর স্থান দেখে খুবই উৎফুল্ল। জাতিসংঘের কারামান বজায় রেখে নির্মিত নতুন কারাগারে গতকাল সকালে নেয়া বন্দিরাও একই কারণে আনন্দিত। তবে পুরান ঢাকার জন্যও রয়েছে খুশির খবর। বন্দিদের স্থানান্তরের পর পর্যায়ক্রমে এ জায়গার স্থাপিত হবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চারনেতাসহ কারাগারের ঐতিহাসিক স্মৃতি নিয়ে কারা জাদুঘর, পার্ক, ওয়াকিং স্পেস, মার্কেটসহ প্রস্তাবিত একাধিক স্থাপনা। নিরাপত্তার প্রশ্নে তিনি বলেন, যথেষ্ট পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
সরজমিনে দেখা যায়, গত বৃহস্পতিবার শেষরাত থেকে নাজিম উদ্দিন রোডের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার ঘিরে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্য ও টহল গাড়ি অবস্থান নেয়। বন্ধ করে দেয়া হয় নাজিম উদ্দিন রোডের সকল সংযোগ সড়ক। সড়কগুলোর সংযোগস্থলে বসে ব্যারিকেড। অবস্থান নেয় পুলিশ। কারাফটক থেকে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের প্রবেশ পথসহ পুরো এলাকায় তৈরি করা হয় পুলিশ বেষ্টনী। এর মাঝখান দিয়ে কারাবন্দিদের বহনকরা প্রিজনভ্যান ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ির কনভয় যাচ্ছিল। সকাল পৌনে ৯টায় কারাফটকে দেখা যায় কারাগারের ভেতর থেকে বন্দি বহনকারী ৯টি প্রিজন ভ্যান একে একে কারাগারের ভেতর থেকে বের হয়। এ সময় প্রিজনভ্যানে ওপরের অংশ দিয়ে বাইরে তাকানো বন্দিরা জোর গলায় বলছিলেন, ‘হ্যালো’। ‘বিদায়’। ‘দেখা হবে নতুন কারাগারে’। হাত-নেড়েও বিদায় জানাচ্ছিলেন কেউ কেউ। হাসি ও নানা অঙ্গভঙ্গিতে আনন্দ প্রকাশ করছিলেন বন্দিদের অনেকে। এরপর কারাগারের বাইরে প্রিজনভ্যানের সঙ্গে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্সের সমন্বয়ে সাজানো হয় দ্বিতীয় কনভয়। অন্তত পনের মিনিট এই প্রস্তুতির পর সকাল ৯টার পর একজন ডেপুটি জেলারের নেতৃত্বে গাড়িবহরটি কেরানীগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। এর আগে ভোর ৬টায় রওয়ানা দিয়েছিল প্রথম গাড়িবহর।
কারাসূত্র জানায়, গত এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেরানীগঞ্জে নতুন কারাগার উদ্বোধনের পরপর বন্দিদের সেখানে স্থানান্তরের কথা ছিল। কিন্তু এরই মধ্যে নতুন কারাগারের একাধিক স্থাপনায় নির্মাণত্রুটি ধরা পড়ে। এরপর তা সারিয়ে বন্দি স্থানান্তর করতে এতটা বিলম্ব হয়। গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে কেরানীগঞ্জে বন্দি স্থানান্তর হলেও ঢাকা থেকে মূলত এর আগে কাশিমপুর কারাগারে বন্দি স্থানান্তর শুরু হয়। ২ হাজার ৮২৬ জন ধারণক্ষমতার কারাগারটিতে প্রায় সময় ৮ হাজার বন্দি ছিল। ঝুঁকি কমাতে এর আগে প্রায় ২ হাজার ভিআইপি, ডিভিশন পাওয়া, জঙ্গি, দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ও উচ্ছৃঙ্খল বন্দিকে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে সরিয়ে নেয়া হয়। কেরানীগঞ্জের নারী কারাগারের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় নারী বন্দিদেরও সেখানে সরিয়ে নেয়া হয়। এরপর আসে কেরানীগঞ্জে বন্দি স্থানান্তরের পালা। বন্দিদের স্থানান্তর উপলক্ষে কয়েকদিন ধরে পর্যায়ক্রমে ৫৫৩ জন কারারক্ষীকে কেরানীগঞ্জে নতুন কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। পুরান কারাগার ও কারাঅধিদপ্তরে রাখা হয় ২০০ কারারক্ষী। বন্দির স্থানান্তরের কাজে দীর্ঘদিনের প্রস্তুতির পর বৃহস্পতিবার থেকে বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েন তারা। ওই দিন অনাগত বন্দিদের রান্না-বান্নার জন্য ওই কাজে নিয়োজিত ৫০ বন্দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। তারা নতুন কারাগারে বন্দিদের সকালের খাবার তৈরি করেন। শুক্রবার ২৫টি প্রিজনভ্যানে দফায় দফায় বন্দিদের কেরানীগঞ্জে নেয়া হয়। প্রতি দফায় ৮টি মাঝারি ও বড় প্রিজনভ্যানের সামনে মাঝে ও পেছনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সশস্ত্র সদস্যদের টহল গাড়ি নিয়ে সাজানো হয় প্রতিটি বহর। প্রতিবার সাড়ে তিনশ’র বেশি বন্দি পরিবহন করা হয়। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জের সম্পন্ন হওয়া পুরুষ কারাগারের ধারণক্ষমতা ৫ হাজার ৪৯০ জন। সেখানে গতকাল সন্ধ্যা নাগাদ পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা ৬ হাজার ৪০০ হাজতি ও কয়েদিকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
প্রস্তাবিত দুটি পুরুষ কারাগার ও একটি নারী কারাগারের মধ্যে প্রথমে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়া পুরুষ কারাগার-১ প্রায় সাড়ে ৬ হাজার বন্দিকে সরিয়ে নেয়া হলো। ২০১১ সালের ৯ই আগস্ট ৪০৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই কারাগারটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন। এই পুরুষ কারাগার-১ এর পেরিমিটার দেয়ালের ভেতরে ৩ হাজার বিচারাধীন বন্দি, ১ হাজার সাজাপ্রাপ্ত বন্দি, চারশ’ বিপজ্জনক বন্দির সেল, একশ’ কিশোর বন্দি, ৩০ জন মানসিক ভারসাম্যহীন বন্দি, ৬০ জন শ্রেণিপ্রাপ্ত বন্দি, ২০ জনের এমআই ইউনিট, একই সঙ্গে দুই ফাঁসি কার্যকরে সক্ষম একটি ফাঁসির মঞ্চ, একটি কারা স্কুল ও লাইব্রেরি, ৮টি রান্নাঘরসহ প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এছাড়া পেরিমিটার দেয়ালের বাইরে প্রশাসনিক ভবন, সাক্ষাৎকার ভবন, আবাসিক কোয়ার্টার, কারারক্ষীদের ব্যারাক, ৪টি অবজারভেশন টাওয়ার, মসজিদ ইত্যাদি রয়েছে। এছাড়া ২৭০ জন বন্দির ধারণক্ষমতার নারী কেন্দ্রীয় কারাগার নির্মাণের কাজ চলছে। পুরুষ কারাগার-১ এর প্রায় সমপরিমাণ ধারণক্ষমতা সম্পন্ন পুরুষ কারাগার-২ এবং ২০০ শয্যার হাসপাতালের নির্মাণ কাজ এখনও শেষ হয়নি। জাতিসংঘের কারামান অনুযায়ী প্রতি বন্দির জন্য বরাদ্দ জায়গার পরিসর ৩৫ বর্গফুট। নতুন কারাগারে বন্দিদের আবাসিক এলাকা, করিডোর, সিঁডি, বারান্দা ইত্যাদির পরিসরের বন্দিপ্রতি গড়ে এর চেয়ে বেশি বলে জানিয়েছেন কারাকর্তৃপক্ষ।
কারা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন গতকাল তার কার্যালয়ে বলেন, বন্দিদের খাবার প্রস্তুত করার জন্য গত বৃহস্পতিবার প্রথম পর্যায়ে রান্না-বান্নার কাজে নিয়োজিত সশ্রম কারাদণ্ড প্রাপ্ত ৫০ জন বন্দিকে নতুন কারাগারে পাঠানো হয়। তারা নতুন কারাগারের সুপরিসর স্থান দেখে খুবই উৎফুল্ল। জাতিসংঘের কারামান বজায় রেখে নির্মিত নতুন কারাগারে গতকাল সকালে নেয়া বন্দিরাও একই কারণে আনন্দিত। তবে পুরান ঢাকার জন্যও রয়েছে খুশির খবর। বন্দিদের স্থানান্তরের পর পর্যায়ক্রমে এ জায়গার স্থাপিত হবে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চারনেতাসহ কারাগারের ঐতিহাসিক স্মৃতি নিয়ে কারা জাদুঘর, পার্ক, ওয়াকিং স্পেস, মার্কেটসহ প্রস্তাবিত একাধিক স্থাপনা। নিরাপত্তার প্রশ্নে তিনি বলেন, যথেষ্ট পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
সরজমিনে দেখা যায়, গত বৃহস্পতিবার শেষরাত থেকে নাজিম উদ্দিন রোডের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার ঘিরে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্য ও টহল গাড়ি অবস্থান নেয়। বন্ধ করে দেয়া হয় নাজিম উদ্দিন রোডের সকল সংযোগ সড়ক। সড়কগুলোর সংযোগস্থলে বসে ব্যারিকেড। অবস্থান নেয় পুলিশ। কারাফটক থেকে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের প্রবেশ পথসহ পুরো এলাকায় তৈরি করা হয় পুলিশ বেষ্টনী। এর মাঝখান দিয়ে কারাবন্দিদের বহনকরা প্রিজনভ্যান ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ির কনভয় যাচ্ছিল। সকাল পৌনে ৯টায় কারাফটকে দেখা যায় কারাগারের ভেতর থেকে বন্দি বহনকারী ৯টি প্রিজন ভ্যান একে একে কারাগারের ভেতর থেকে বের হয়। এ সময় প্রিজনভ্যানে ওপরের অংশ দিয়ে বাইরে তাকানো বন্দিরা জোর গলায় বলছিলেন, ‘হ্যালো’। ‘বিদায়’। ‘দেখা হবে নতুন কারাগারে’। হাত-নেড়েও বিদায় জানাচ্ছিলেন কেউ কেউ। হাসি ও নানা অঙ্গভঙ্গিতে আনন্দ প্রকাশ করছিলেন বন্দিদের অনেকে। এরপর কারাগারের বাইরে প্রিজনভ্যানের সঙ্গে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্সের সমন্বয়ে সাজানো হয় দ্বিতীয় কনভয়। অন্তত পনের মিনিট এই প্রস্তুতির পর সকাল ৯টার পর একজন ডেপুটি জেলারের নেতৃত্বে গাড়িবহরটি কেরানীগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। এর আগে ভোর ৬টায় রওয়ানা দিয়েছিল প্রথম গাড়িবহর।
কারাসূত্র জানায়, গত এপ্রিলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেরানীগঞ্জে নতুন কারাগার উদ্বোধনের পরপর বন্দিদের সেখানে স্থানান্তরের কথা ছিল। কিন্তু এরই মধ্যে নতুন কারাগারের একাধিক স্থাপনায় নির্মাণত্রুটি ধরা পড়ে। এরপর তা সারিয়ে বন্দি স্থানান্তর করতে এতটা বিলম্ব হয়। গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে কেরানীগঞ্জে বন্দি স্থানান্তর হলেও ঢাকা থেকে মূলত এর আগে কাশিমপুর কারাগারে বন্দি স্থানান্তর শুরু হয়। ২ হাজার ৮২৬ জন ধারণক্ষমতার কারাগারটিতে প্রায় সময় ৮ হাজার বন্দি ছিল। ঝুঁকি কমাতে এর আগে প্রায় ২ হাজার ভিআইপি, ডিভিশন পাওয়া, জঙ্গি, দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ও উচ্ছৃঙ্খল বন্দিকে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে সরিয়ে নেয়া হয়। কেরানীগঞ্জের নারী কারাগারের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় নারী বন্দিদেরও সেখানে সরিয়ে নেয়া হয়। এরপর আসে কেরানীগঞ্জে বন্দি স্থানান্তরের পালা। বন্দিদের স্থানান্তর উপলক্ষে কয়েকদিন ধরে পর্যায়ক্রমে ৫৫৩ জন কারারক্ষীকে কেরানীগঞ্জে নতুন কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। পুরান কারাগার ও কারাঅধিদপ্তরে রাখা হয় ২০০ কারারক্ষী। বন্দির স্থানান্তরের কাজে দীর্ঘদিনের প্রস্তুতির পর বৃহস্পতিবার থেকে বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েন তারা। ওই দিন অনাগত বন্দিদের রান্না-বান্নার জন্য ওই কাজে নিয়োজিত ৫০ বন্দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। তারা নতুন কারাগারে বন্দিদের সকালের খাবার তৈরি করেন। শুক্রবার ২৫টি প্রিজনভ্যানে দফায় দফায় বন্দিদের কেরানীগঞ্জে নেয়া হয়। প্রতি দফায় ৮টি মাঝারি ও বড় প্রিজনভ্যানের সামনে মাঝে ও পেছনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সশস্ত্র সদস্যদের টহল গাড়ি নিয়ে সাজানো হয় প্রতিটি বহর। প্রতিবার সাড়ে তিনশ’র বেশি বন্দি পরিবহন করা হয়। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কেরানীগঞ্জের সম্পন্ন হওয়া পুরুষ কারাগারের ধারণক্ষমতা ৫ হাজার ৪৯০ জন। সেখানে গতকাল সন্ধ্যা নাগাদ পুরাতন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা ৬ হাজার ৪০০ হাজতি ও কয়েদিকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
প্রস্তাবিত দুটি পুরুষ কারাগার ও একটি নারী কারাগারের মধ্যে প্রথমে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়া পুরুষ কারাগার-১ প্রায় সাড়ে ৬ হাজার বন্দিকে সরিয়ে নেয়া হলো। ২০১১ সালের ৯ই আগস্ট ৪০৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই কারাগারটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন। এই পুরুষ কারাগার-১ এর পেরিমিটার দেয়ালের ভেতরে ৩ হাজার বিচারাধীন বন্দি, ১ হাজার সাজাপ্রাপ্ত বন্দি, চারশ’ বিপজ্জনক বন্দির সেল, একশ’ কিশোর বন্দি, ৩০ জন মানসিক ভারসাম্যহীন বন্দি, ৬০ জন শ্রেণিপ্রাপ্ত বন্দি, ২০ জনের এমআই ইউনিট, একই সঙ্গে দুই ফাঁসি কার্যকরে সক্ষম একটি ফাঁসির মঞ্চ, একটি কারা স্কুল ও লাইব্রেরি, ৮টি রান্নাঘরসহ প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এছাড়া পেরিমিটার দেয়ালের বাইরে প্রশাসনিক ভবন, সাক্ষাৎকার ভবন, আবাসিক কোয়ার্টার, কারারক্ষীদের ব্যারাক, ৪টি অবজারভেশন টাওয়ার, মসজিদ ইত্যাদি রয়েছে। এছাড়া ২৭০ জন বন্দির ধারণক্ষমতার নারী কেন্দ্রীয় কারাগার নির্মাণের কাজ চলছে। পুরুষ কারাগার-১ এর প্রায় সমপরিমাণ ধারণক্ষমতা সম্পন্ন পুরুষ কারাগার-২ এবং ২০০ শয্যার হাসপাতালের নির্মাণ কাজ এখনও শেষ হয়নি। জাতিসংঘের কারামান অনুযায়ী প্রতি বন্দির জন্য বরাদ্দ জায়গার পরিসর ৩৫ বর্গফুট। নতুন কারাগারে বন্দিদের আবাসিক এলাকা, করিডোর, সিঁডি, বারান্দা ইত্যাদির পরিসরের বন্দিপ্রতি গড়ে এর চেয়ে বেশি বলে জানিয়েছেন কারাকর্তৃপক্ষ।