ঈদ সামনে রেখে বেড়েছে চিনিসহ সব ধরনের মসলার দাম। এর মধ্যে রয়েছে এলাচ, লবঙ্গ, দারুচিনি, রসুন, আদা, শুকনো মরিচ, হলুদ, জিরা ও তেজপাতা। তবে পিয়াজের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। ঈদে অতিরিক্ত চাহিদার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াচ্ছেন বলে খুচরা বিক্রেতাদের অভিযোগ। তাদের কারণে পণ্যের প্রতিযোগিতামূলক আমদানি ও বাজার মূল্য স্থিতিশীল থাকার সুযোগ থাকলেও তা হচ্ছে না। এবারও ঈদুল ফিতরকে ঘিরে মসলার দাম বেড়ে গেছে অনেক বেশি। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নতুন করে চিনির দাম বেড়েছে কেজিতে ৩ টাকা। এর আগে প্রতি কেজি ৬২ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে চিনির দাম ৬৫ টাকা। এক মাস আগে বিক্রি হয়েছিল ৫৫ টাকা থেকে ৫৮ টাকা। আর টিসিবি’র হিসাবে গত এক মাসে কেজি প্রতি চিনির দাম বেড়েছে ১০ টাকা। মসলার বাজারে ভারত থেকে আমদানি করা এলাচ পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা কেজি দরে। সেই এলাচই খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে। এক মাস আগেও এই এলাচ ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দর অনুযায়ী, প্রতিকেজি এলাচ ১১০০ থেকে ১৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গুয়াতেমালার এলাচ প্রতিকেজি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। মাসখানেক আগে এই এলাচ পাওয়া যেত ১ হাজার ২০০ টাকায়। লবঙ্গ বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা কেজি দরে। এক মাস আগে এর দাম ছিল ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকার মধ্যে। টিসিবি দর অনুযায়ী, প্রতিকেজি লবঙ্গ ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চীন, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা দারুচিনি মানভেদে বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ২৭৫ থেকে ৩১০ টাকায়। মাসখানেক আগে প্রতি কেজি দারুচিনি ২৬০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে ছিল। টিসিবি দর অনুযায়ী, প্রতিকেজি দারুচিনি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে প্রতিকেজি ভারতীয় গোলমরিচ ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা বিভিন্ন মানের জিরা মিলছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকায়। আর প্রতিকেজি দেশি আদা ৮০ টাকা এবং আমদানি করা আদা ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, আমদানি করা রসুনের চাহিদাই বেশি। বর্তমানে এ ধরনের রসুন ১৭০ থেকে ১৯০ টাকা আর দেশি রসুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে প্রায় ৪০ টাকা বেড়েছে রসুনের দাম। তবে এখন হ্রাস পাচ্ছে। এছাড়া গুঁড়ো মসলার মধ্যে হলুদ প্রতি কেজি ২০০-২২০, মরিচ ১৫০-২০০, ধনে ১৮০-২২০ টাকা এবং তেজপাতা ১৭০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব দামের সঙ্গে টিসিবি’র দেয়া দামে হেরফের কম লক্ষ করা গেছে। জানা গেছে, বর্তমানে মসলার বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে কিছু বড় বড় ব্যবসায়ী। ফলে পর্যাপ্ত মজুদ থাকার পরও না কমে বেড়েই চলেছে মসলার দাম।
সূত্র জানায়, প্রতিকেজি জিরা মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়। শুকনা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ২৮০ টাকায়। তেজপাতার কেজি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।
মসলার দাম স্বাভাবিক রয়েছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ পাইকারি গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি এনায়েত উল্লাহ। তিনি বলেন, মসলার বাজার স্বাভাবিক রয়েছে। বরং অনেক ক্ষত্রে দাম কমেছে। সরকার এসব পণ্য আমদানির শুল্ক কমালে দাম আরো কমতো বলে জানিয়েছেন তিনি।