জনগণের ওপর চেপে বসা কোন সরকারকে ভারত প্রশ্রয় দেবে না বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একইসঙ্গে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের সঙ্গে দেশটি থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। আজ দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে দেশব্যাপী সাঁড়াশি অভিযানের নামে গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত রোববার বলেন, জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে, সঠিক পথে আছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মির্জা আলমগীর বলেছেন, আমরা সব সময় প্রত্যাশা করব, ভারতবর্ষ বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের সঙ্গেই থাকবে। তারা এমন কোন শক্তি বা সরকারকে প্রশ্রয় দেবে না, সহযোগিতা করবে না, যারা জনগণের ওপর চেপে বসা। গুপ্তহত্যা, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনে সরকারের ব্যর্থতা আড়াল করতেই দেশব্যাপী গণগ্রেপ্তার অভিযান চালানো হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহে ১৩ থেকে ১৪ হাজার সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অথচ পুলিশ প্রধান বলেছেন, ১৭৯ জনকে সন্দেহজনক জঙ্গি হিসাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাহলে প্রশ্ন জাগে বাকিরা কারা? আসলে একটি উদ্দেশ্য সর্ব দিক থেকে ব্যর্থ এই সরকার গুপ্তহত্যা, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনের ব্যর্থতাকে জনদৃষ্টির আড়াল করতেই গণগ্রেপ্তার চালাচ্ছে। বিএনপির মহাসচিব বলেন, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী এখন দেশের রাজা। তারা যখন যা খুশি তাই করেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে। আজকে আপনি বিচারের জন্য যাবেন সেখানে আপনাকে নিভৃতে কাঁদতে হবে। সংসদ একটি গৃহপালিত বিরোধী দল নিয়ে এমন একটি বস্তুতে পরিণত করেছে যেখানে কোন জবাবদিহিতা নেই। সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ নয় বলে মন্তব্য করে মির্জা আলমগীর বলেন, দেশের মানুষের কোন অধিকার নেই। বাংলাদেশে একেবারে একটি ফ্যাসিবাদী সরকারের নিয়ন্ত্রণে পড়ে গেছে। আমাদের বিক্ষোভ সমাবেশ করার কথা বাহিরে; সেটাও আমাদের করতে দেয়া হয় না। গতকাল একটি ইফতার মাহফিল ছিল। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। সেটাও করতে দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, সরকার যা বলে বলুক ওদের কথা জনগণ বিশ্বাস করে না। জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষেপে আছে। তাই আমরা জনগণের কাছে যাই। আমরা সবাই ঐক্যদ্ধ হই। শুধু বিএনপির ঐক্য নয়। জনবিচ্ছিন্ন এই সরকারের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বিকল্প নেই। সন্ত্রাস দিয়ে আন্দোলনে সফলতা আসে না। তাই দলের স্বার্থে নয়, দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষা করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এই চলমান দুঃশাসনের পতন ঘটাতে হবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আবুল খায়ের ভূইয়া, সহ-সাংগাঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।