ঢাকাসহ আট জেলায় বজ্রপাতে আরও ১১ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন অন্তত সাতজন।
এর মধ্যে ঢাকার সাভারে এক, চট্টগ্রামে এক, নওগাঁয় দুই, জয়পুরহাট দুই, গাইবান্ধায় দুই, রাজবাড়ির গোয়ালন্দে এক, চাঁদপুরে এক ও মাগুরায় একজন মারা গেছেন।
শুক্রবার বজ্রপাতের এসব ঘটনা ঘটে।
বৃহস্পতিবার দেশের ১১ জেলায় বজ্রপাতে ৩৫ জন মারা যান। পরে শুক্রবার আহতদের মধ্যে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার আরও তিনজন মারা গেছেন।
সাভার (ঢাকা): বজ্রপাতে মন্টু মিয়া (১৭) নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এসময় আহত হয়েছে আরো দুই কিশোর।
শুক্রবার দুপুরে সাভারের ছায়াবিথী হাউজিং সোসাইটির বালুর মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
মন্টু মিয়া মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর থানার বড় লালপাড়া গ্রামের মো. হোসেন আলীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, দুপুরে বৃষ্টির মধ্যে ছায়াবিথী হাউজিং সোসাইটির বালুরমাঠে বন্ধুদের সাথে ফুটবল খেলছিল মন্টু মিয়া। এসময় বজ্রপাতে মন্টুসহ তিন কিশোর আহত হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মন্টু মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত অন্যদেরকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
চট্টগ্রাম: সাবেক মন্ত্রী আফছারুল আমীনের চাচাতো ভাই আমজাদ আলী (২৯) বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার সকাল নয়টার দিকে পাহাড়তলী থানার বারুণী ঘাট বেড়িবাঁধ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া সম্পাদনের কাজ চলছে বলে জানান পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রণজিৎ কুমার বড়ুয়া।
নওগাঁ: জেলার পোরশা উপজেলার নিতপুর দীঘিপাড়া ও মহাদেপুর উপজেলার ধঞ্জইল গ্রামে বজ্রপাতে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
তারা হলেন, পোরশার নীতপুর দীঘিপাড়া গ্রামের ইব্রাহীম হোসেন (১৪) ও মহাদেপুর উপজেলার ধঞ্জইল গ্রামের সচীন মুহুরী (৬০)।
শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে এসব ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, সকালে ঝড়-বৃষ্টির সময় ইব্রাহীম বাড়ির পাশে একটি বাগানে আম কুড়াতে গেলে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এছাড়া মহাদেবপুরের ধঞ্জইল গ্রামে মাঠে বজ্রপাতে মারা যান সচীন মুহুরী।
নওগাঁ সদর আধুনিক হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. মাহফুজার রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জয়পুরহাট: জয়পুরহাট সদর ও ক্ষেতলাল উপজেলায় বজ্রপাতে দুইজন মারা গেছেন।
শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, জেলার সদর উপজেলার সতিঘাটা মাঠে রফিকুল ইসলাম(৩০) ও ক্ষেতলাল উপজেলার হাওরবিলের মাঠে মানিক মিয়া(৩৮) বজ্রপাতে মারা যান। এ সময় মাঠে তারা কৃষি কাজ করছিল।
গাইবান্ধা: গাইবান্ধা সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের খোদ্দমালিবাড়ী পূর্বপাড়া গ্রামে সিরাজুল হক (৬০) নামে এক ব্যক্তি বজ্রপাতে মৃত্যু হয়।
শুক্রবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
লক্ষ্মীপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান বাদল জানান, সিরাজুল হক সকালে জমিতে কাজ করতে যাওয়ার সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলে মারা যান।
এছাড়া পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাঁপা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামে রেজাউল করিম (৫০) বজ্রপাতে মারা যান।
শুক্রবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, রেজাউল করিম বাড়ির পাশে মাঠে গরুকে ঘাস খাওয়াচ্ছিলেন। এসময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ি): জেলার গোয়ালন্দে বজ্রপাতে সুবাহান সরদারের (৪৫) মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
উজানচর ইউপির ৮ নং ওয়ার্ডের সদস্য নিখিল চন্দ্র রায় জানান, সোবহান সরদার ঝড়-বৃষ্টির সময় বাড়ির সামনে পাট ক্ষেতে কাজ করছিলেন। এ সময় বজ্রপাত হলে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এছাড়া একই সময়ে উপজেলার ভাগুলপুর গ্রামে বজ্রপাতে ৩ জন আহত হন।
তারা হলেন, জেয়াসমিন মজার (২৫),পিয়া বেগম (১৮) ও আ. খলিল শেখের ২০ মাস বয়সের ছেলে আপন। তাদের গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
চাঁদপুর: চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে বালুভর্তি কার্গো জাহাজে বজ্রপাতে নবির হোসেন (২৫) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি মো. মামুনুর রশিদ জানান, নবীর হোসেন জাহাজের লস্করের দায়িত্ব পালন করতো। বজ্রপাতের সময় সে জাহাজের সামনে ছিল।
মাগুরা: সদর উপজেলার কাপাসহাটী গ্রামে বজ্রপাতে তুহিন শেখ (২২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে বজ্রপাতের এ ঘটনা ঘটে।
তুহিন শেখের বাবা হেলাল শেখ জানান, বিকেলে কাপাসহাটি গ্রামের নিজ বাড়ির পাশে তুহিন বজ্রপাতে আহত হয়। পরে তা মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।