ঢাকা: মালয়েশিয়ায় বিদেশি কর্মী নেয়ার বিষয়ে শিগগিরই ঘোষণা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী ড. আহমাদ জাহিদ হামিদি। গতকাল বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে একটি অনুষ্ঠানে তিনি এ তথ্য জানান।
হামিদির বরাত দিয়ে মালয়েশিয়ার গণমাধ্যম দ্য স্টার অনলাইন জানায়, দেশটির শ্রমিক আমদানি কার্যক্রমে বিভিন্ন অংশীদ্বারদের অভিযোগ ও পরামর্শের ভিত্তিতে বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে দেশটির সরকার।
জাহিদ হামিদি বলেন, ‘বিদেশি শ্রমিক ইস্যুতে আমি উদ্বিগ্ন। আমাদেরই অনেক সমস্যা আছে। আবার বিদেশি শ্রমিক আমদানিকে কেন্দ্র করে সমস্যা বিভিন্ন খাতে প্রভাব ফেলছে। বিদেশি শ্রমিকদের জন্য দরজা খোলা রাখতে আমাদের দেশি নিয়োগকর্তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে।’
এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিদেশি শ্রমিক নেয়া স্থগিত রাখার ঘোষণা দেন উপ-প্রধানমন্ত্রী আহমাদ জাহিদ হামিদি। তিনি বলেন, ‘কত শ্রমিক আমাদের প্রয়োজন সে বিষয়ে সন্তোষজনক তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত বিদেশি কর্মী নেয়া স্থগিত থাকবে।’
শ্রমিক নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বৃহস্পতিবার হামিদি জানান, তাদের সরকার এই বিষয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পরামর্শ ও প্রস্তাবের বিষয়টি সবসময়ই উন্মুক্ত রেখেছে। বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে।
বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) বিষয়টি নিয়ে সরকারের কাছে অভিযোগ করেছে বলেও তিনি জানান।
মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তাদের দোষারোপ করছি না। কিন্তু আমি মনে করি, বিদেশি শ্রমিকদের নিয়ে তাদের পরামর্শের জন্য শেষ পর্যন্ত দায়দায়িত্ব তাদেরই নিতে হবে।’
উল্লেখ্য, দেশের জনশক্তি রপ্তানির বড় বাজার মালয়েশিয়ায় বর্তমানে প্রায় ছয় লাখ বাংলাদেশি বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত আছেন। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ২০১৩ সালে ‘জিটুজি’ পদ্ধতিতে প্ল্যান্টেশন (বনায়ন) খাতে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নিতে শুরু করে মালয়েশিয়া। তবে সরকার ও বেসরকারি এজেন্টদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা ও পরোক্ষ বাধার কারণে দেশের অনেকে বৈধভাবে যেতে না পেরে অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে যাত্রা করে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ঘটনাগুলো ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।
এই পরিপ্রেক্ষিতে মালয়েশিয়ার তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাহিদ হামিদি গত জুন মাসে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে ১৫ লাখ কর্মী নেয়ার ঘোষণা দেন। তার ঘোষণার আলোকে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে তাদের ‘জিটুজি প্লাস’ চুক্তি সই হয়। তবে এ চুক্তির পরদিনই বিদেশ থেকে আর কোনো কর্মী নেবে না বলে ঘোষণা দেন জাহিদ হামিদি।