রাজস্ব আদায়ে বৈশাখে হালখাতা করবে এনবিআর

Slider জাতীয়

 

 

 

2016_04_17_17_22_27_AHDCn8pn9P7PVlGTyoJnilKmLe7tZU_original

 

 

 

 

 

ঢাকা : বাংলা নতুন বছরে হালখাতার প্রচলন প্রায় উঠেই গেছে। তবে রাজস্ব সংগ্রহে এই সংস্কৃতিকে পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আয়কর, শুল্ক ও ভ্যাট বাবদ বকেয়া রাজস্ব আদায় করতে বৈশাখ মাসে হালখাতার আয়োজন করবে সরকারি এ প্রতিষ্ঠান। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বৃদ্ধি, রাজস্ব প্রদানে উদ্বুদ্ধ করার জন্যই এই আয়োজন করে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান।
রোববার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে এনবিআর ভবনে তিনটি ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় হালখাতা আয়োজনের উদ্যোগের কথা জানান তিনি। আজকের তিন দফার প্রাক-বাজেট আলোচনায় অংশ নেয়া ব্যবসায়ী নেতারা এনবিআরের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘রাজকোষের বকেয়া অর্থ সংগ্রহে বাংলা নববর্ষে হালখাতার প্রচলন করেছিলেন সম্রাট আকবর। এনবিআর ঐতিহাসিক এ ধারা চালু রাখতে চায়। দেশের আয়ের প্রধান উৎস বকেয়া রাজস্ব আদায়ে হালখাতা করা হবে। পুরো বৈশাখ মাসজুড়ে এই হালখাতা অনুষ্ঠিত হতে পারে।’

নজিবুর রহমান আরো বলেন, ‘দেশের সকল আয়কর, শুল্ক ও ভ্যাট কমিশনার কার্যালয়ে এ হালখাতার আয়োজন করা হবে। করদাতারা বকেয়া কর উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পরিশোধ করতে পারবেন। এসময় তাদের আপ্যায়ন ও মিষ্টিমুখ করানো হবে। এর মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্ক আরো বৃদ্ধি পাবে।’

অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় বিকেল ৩টা থেকে সোয়া ৫টা পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ও মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র নেতারা অংশ নেন।

ইতিহাস বলছে, ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দে মুগল সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। ওই সময়ে বঙ্গে শক বর্ষপঞ্জি ব্যবহৃত হতো, যার প্রথম মাস ছিল চৈত্র। বাংলা বর্ষপঞ্জি প্রথমে ‘তারিখ-ই-এলাহি’ বা ‘ফসলি সন’ নামে পরিচিত ছিল। পরে বাংলা সন পরিবর্তন করে বছরের প্রথম দিন হিসেবে পহেলা বৈশাখ করা হয়। আকবরের সময়কাল থেকেই পহেলা বৈশাখ উদযাপন শুরু হয়। তখন প্রত্যেককে চৈত্র মাসের শেষ দিনের মধ্যে সব খাজনা, মাশুল ও শুল্ক পরিশোধ করতে হতো। এর পরদিন অর্থাৎ পহেলা বৈশাখে ভূমির মালিকরা নিজ নিজ অঞ্চলের অধিবাসীদেরকে মিষ্টান্ন দিয়ে আপ্যায়ন করতেন। এ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন করা হতো। এই উৎসবটি একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয় যার রূপ পরিবর্তন হয়ে বর্তমানে এই পর্যায়ে এসেছে। তখনকার সময় এই দিনের প্রধান আনুষ্ঠানিকতা ছিল হালখাতা করা। হালখাতা বলতে একটি নতুন হিসাব-বই বোঝানো হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে হালখাতা হলো বাংলা সনের প্রথম দিনে দোকানপাটের হিসাব আনুষ্ঠানিকভাবে হালনাগাদ করার প্রক্রিয়া। গ্রাম, শহর বা বাণিজ্যিক এলাকা, সকল স্থানেই পুরনো বছরের হিসাব-বই বন্ধ করে নতুন হিসাব-বই (খেরোখাতা) খোলা হয়। হালখাতার দিনে দোকনদাররা তাদের ক্রেতাদের মিষ্টান্ন আপ্যায়ন করে থাকে। এই প্রথাটি এখনও অনেকাংশে প্রচলিত আছে, বিশেষত স্বর্ণের দোকানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *