‘সাধারণ সম্পাদক থাকা না থাকা কাউন্সিলের উপর’

Slider রাজনীতি
1460382460
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদ সব সময় আলোচিত বিষয়। নতুন করে সৈয়দ আশরাফ বললেন, এ পদে তার থাকা না থাকা- আগামী কাউন্সিলেই নির্ধারিত হবে। তবে সম্প্রতি পূজা উদযাপন পরিষদের সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকা, সম্মেলনের বাকি জেলা ময়মনসিংহে সম্মেলনের প্রস্তুতি নিতে দায়িত্বপ্রাপ্তদের নির্দেশনা দেয়া ও দলীয় কর্মকাণ্ডে আবারো সক্রিয় হওয়ায়- সৈয়দ আশরাফ আবারো এসেছেন আলোচনায়।
টানা দুই বারের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এ পদে আর থাকছেন না এমন গুঞ্জন ছড়াচ্ছিল পূর্ব নির্ধারিত সম্মেলনের তারিখ পেছানোর মধ্য দিয়েই। ২৯ মার্চ থেকে পিছিয়ে সম্মেলনের তারিখ করা হয় ১০-১১ জুলাই। দলের অভ্যন্তরের খবর ছিল সৈয়দ আশরাফ এ পদে থাকতে চাচ্ছেন না; তাই নতুন সাধারণ সম্পাদক খোঁজতে সময় নিচ্ছেন দলীয় সভাপতি শেখ হসিনা। এ কারণেই পিছিয়েছে সম্মেলনের দিনক্ষণ। তবে এর পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত সৈয়দ আশরাফকে বিভিন্ন মহল থেকে আরো এক মেয়াদে দলের দায়িত্বে থাকার অনুরোধ আসে।
গতকাল আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আগামী ১০ ও ১১ জুলাই আওয়ামী লীগের সম্মেলনের প্রস্তুতি শুরু করেছে দলটি। সোমবার সম্মেলন প্রস্তুত করতে ১১টি উপকমিটিও ঘোষণা করা হয়। এদিন সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দ আশরাফকে প্রশ্ন করা হয়- সব জেলা সম্মেলন শেষ করে এবারই আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সে হিসেবে আপনি সাধুবাদ পেতে পারেন; দলের তৃণমূল কাউন্সিলররা চাইলে আপনি তৃতীবার সাধারণ সম্পাদক হবেন কিনা- মানবকণ্ঠের এমন প্রশ্নের জবাবে কিছুটা হতচকিত সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কাউন্সিল নেতা তৈরি করে। অপেক্ষা করেন। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে কারা আসছেন, কয়জনের কমিটি হবে, সেটি এখন জানার কোন সুযোগ নেই। সেটি কাউন্সিলেই জানা যাবে, সেখানেই নেতা নির্বাচিত হবে। তাই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে কে আসছে সেটি জানতে কাউন্সিল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সম্মেলন মানেই একটা ইতিহাস। এই সম্মেলন থেকেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল বাংলাদেশ স্বাধীন হবে এবং স্বাধীন হয়েছে। ভাষা আন্দোলনেরও সিদ্ধান্ত হয়েছিল সম্মেলন থেকেই।
ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির জাতীয় সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতিবিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের অন্যান্য প্রশ্নেরও জবাব দেন সৈয়দ আশরাফ।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দলের জাতীয় সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। লাগাতার বৈঠক চলতে থাকবে। যে কমিটিগুলো হয়েছে তাতে আরও অনেককে অন্তর্ভূক্ত করার সুযোগ রয়েছে। আর আমরা আজ ওপিনিং মিটিং করলাম। আগামীতে আরও বৈঠক হবে। দিনে ৪ বারও বসতে হতে পারে। সম্মেলন সম্পর্কে তিনি বলেন, এবারের সম্মেলন হবে উৎসবমুখর এবং এবারও সম্মেলন থেকে অনেক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রথম দুই ধাপের প্রাণহানির বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন নিয়ে আমরা দলের পক্ষ থেকে প্রতিবেদন দেব। পুরো নির্বাচন শেষ হোক, তখনই সেটি দেওয়া হবে। তিনি বলেন, এখন যেহেতু নির্বাচন চলমান তাই, নির্বাচনের উপর কোন ধরণের প্রভাব পড়–ক সেটি আমরা চাই না।
এসময় উপকমিটির নাম ঘোষণা করেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনাকে চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে প্রস্তুতি কমিটি। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সকল নেতাই এ কমিটির সদস্য।
এছাড়া আরও ১১টি উপকমিটি ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে মোহাম্মদ নাসিমকে আহ্বায়ক ও ডা. দীপু মনিকে সদস্য সচিবকে অভ্যর্থনা উপ-পরিষদ, কাজী জাফর উল্লাহকে আহ্বায়ক ও আশিকুর রহমানকে সদস্য সচিব করে অর্থ উপ-পরিষদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিমকে আহ্বায়ক ও আব্দুল মান্নান খানকে সদস্য সচিব করে ঘোষণা-পত্র উপ-পরিষদ, ড. আব্দুর রাজ্জাককে আহ্বায়ক ও অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেনকে সদস্য সচিব করে গঠনতন্ত্র উপ-পরিষদ, ওবায়দুল কাদেরকে আহ্বায়ক ও ড. আবদুস সোবহান গোলাপকে সদস্য সচিব করে দপ্তর উপ-পরিষদ, এইচটি ইমামকে আহ্বায়ক ও ড. হাছান মাহমুদকে সদস্য সচিব করে প্রচার ও প্রকাশনা উপ-পরিষদ, আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহকে আহ্বায়ক ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমকে সদস্য সচিব করে স্বেচ্ছাসেবক ও শৃঙ্খলা উপ-পরিষদ, জাহাঙ্গীর কবীর নানককে আহ্বায়ক ও মির্জা আজমকে সদস্য সচিব করে মঞ্চ ও সাজসজ্জা উপ-পরিষদ, আসাদুজ্জামান নূরকে আহ্বায়ক ও চয়ন ইসলামকে সদস্য সচিব করে সাংস্কৃতিক উপ-পরিষদ, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াকে আহ্বায়ক ও কামরুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে খাদ্য উপ-পরিষদ, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দীনকে আহ্বায়ক ও ডা. বদিউজ্জামান ভূঁইয়া ডাবলুকে সদস্য সচিব করে স্বাস্থ্য উপ-পরিষদ গঠন করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ডা. দিপু মনি, জাহাঙ্গীর কবীর নানক, ড. আব্দুর রাজ্জাক, আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ফরিদুন্নাহার লাইলী, আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *