ঢাকা: বাংলাদেশের ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজন দুই চীনা ব্যবসায়ীর নাম প্রকাশ করেছেন ফিলিপাইন ফাইন্যান্সিয়াল সিস্টেমের (জাঙ্কেট) কর্মকর্তা কিম ওং।
মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) দেশটির সিনেটে এ ঘটনায় অনুষ্ঠিত শুনানিতে তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, রিজার্ভ চুরির ঘটনায় দুই চীনা ব্যবসায়ীর সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। তারা হলেন- সুহুয়া গাও এবং ডিং ঝিজে। রিজেল কর্মাশিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) মাধ্যমে তারা ওই অর্থ ফিলিপাইনে নিয়ে আসেন বলে জানান তিনি।
কিম ওং জানান, জাঙ্কেট এজেন্ট হিসেবে আট বছর ধরে কাজ করছেন গাও। ম্যাকাওয়ের ব্যবসায়ী ডিংয়ের সঙ্গে ওংয়ের পরিচয় হয় গাওয়ের মাধ্যমে। ক্যাসিনোতে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়ায় ওংয়ের কাছ থেকে ব্যাপক পরিমাণ অর্থ ধার করেন গাও।
এসময়ই মাকাতি শহরে আরসিবিসি ব্যাংকের ম্যানেজার মাইয়া সান্তোস-দেগুইতো ওংকে একটি অ্যাকাউন্ট চালু করতে বলেন। ওং তখন গাওকে দেখিয়ে দেন।
এরপর ২০১৫ সালের মে মাসে মিডাস হোটেলে দেগুইতোর অফিসে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ওং এবং গাও। এ সময় গাও একটি কোম্পানি অ্যাকাউন্ট চালু করতে চাইলে এজন্য পাঁচ জন প্রয়োজন বলে জানান দেগুইতো। এর দু’তিনদিন পর অ্যাকাউন্ট চালু করতে দেগুইতো আড়াই হাজার ডলার চান।
চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি গাও ওংকে জানান, তিনি এবং ডিং ম্যাকাওয়ে ক্যাসিনো ব্যবসা বন্ধ করে দেবেন। এর পরিবর্তে তারা ম্যানিলায় বিনিয়োগ করবেন।
৫ ফেব্রুয়ারি গাও এবং ডিংয়ের সঙ্গে সোলাইরি হোটেলে সাক্ষাৎ করতে যান ওং। এ সময় তারা পাঁচ জনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিষয়ে আলাপ করেন।
একইদিন দুপুরে তারা জানান, তাদের অ্যাকাউন্টে ৮১ মিলিয়ন ডলার ট্রান্সফার হতে শুরু করেছে। এ সময় ওং দেগুইতোকে ট্রান্সফার হওয়া অর্থ হোটেলে আনা সম্ভব কিনা জানতে চান। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে (স্থানীয় সময়) ফিলরেম সার্ভিস করপোরেশনের মাইকেল বাউতিস্তা দেগুইতোর অনুরোধে ৮০ মিলিয়ন (৮ কোটি) ফিলিপাইনি পেসো নিয়ে হোটেলে আসেন। পরে দেগুইতো আরো ২০ মিলিয়ন পেসো নিয়ে আসেন।
এই একশ’ মিলিয়ন পেসো ছাড়াও বাউতিস্তার বাড়ি থেকে ওং আরো তিনশ’ মিলিয়ন পেসো ও ৫ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেন।
চুরি হওয়া ৮১ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে ৬৩ মিলিয়ন মিডাস ও সোলাইরি ক্যাসিনোতে পাঠানো হয় বলে সিনেটের শুনানিতে জানান ওং।