গ্রাম বাংলা ডেস্ক: ন্যান্সিঘুমের ওষুধ খেয়ে গত শনিবার অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন সংগীতশিল্পী ন্যান্সি। প্রথমে নেত্রকোনার একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয় তাঁকে। রাতেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। রোববার ভোরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে আনা হয়। এখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর গতকাল মঙ্গলবার সকালে রামপুরায় বড় ভাইয়ের বাসায় ওঠেন ন্যান্সি। দুপুরে মুঠোফোনে কথা বলেন তিনি।
আপনার শারীরিক অবস্থা এখন কেমন?
আগের চেয়ে অনেকটা ভালো। তবে এখনো দুর্বলতা কাটেনি।
কেন আপনি এমন পথ বেছে নিলেন?
এটা স্রেফ দুর্ঘটনা। নানা কারণে কয়েক মাস ধরে আমার মধ্যে হতাশা কাজ করছিল। ওই দিন রাগের মাথায় কাজটি করে ফেলেছি। এটা করা ঠিক হয়নি।
কী নিয়ে আপনি হতাশায় ভুগছিলেন?
১০ মাস ধরে কোনো কারণ ছাড়াই আমার সব গানের শো বাতিল হয়ে যাচ্ছিল। আয়োজকদের জিজ্ঞেস করলে তাঁরা দাবি করেন, আমার শোর নাকি টিকিট বিক্রি হয় না। এটা কি বিশ্বাসযোগ্য কথা? আমি তো বিশ্বাস করব না। নিশ্চয়ই এর পেছনে বড় কোনো উদ্দেশ্য লুকিয়ে আছে।
কী উদ্দেশ্য থাকতে পারে?
আমি তো কারও ক্ষতি করিনি। আমি গান গাই। আমি চলচ্চিত্র, টিভির অনুষ্ঠান এবং অডিও অ্যালবামে গান করছি। কিন্তু একজন শিল্পীর মূল আয় হয় স্টেজ শো থেকে। অথচ গত ১০ মাসে আমার সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল, শুধু স্টেজ শোগুলো বাতিল হয়ে যায়। এটা আমাকে চরমভাবে হতাশ করে তুলেছে। আমার ঘুম হচ্ছিল না। অনিদ্রা বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসক ঘুমের ওষুধ দিলেন। আমার স্বামী ময়মনসিংহে চাকরি করেন। গানের জন্য কয়েক মাস ধরে আমি দুই সন্তান নিয়ে ঢাকায় আছি। এই সময় কেমন যেন অনিশ্চয়তা অনুভব করছিলাম। ঈদের পর মগবাজারের ভাড়া বাসা ছেড়ে নেত্রকোনায় মায়ের বাসায় চলে যাই। ভেবেছিলাম আত্মীয়স্বজনের মাঝে থাকলে হয়তো ভালো থাকব। হতাশা চেপে বসবে না। কিন্তু মানসিক অবস্থা এমনই ছিল…।
এত ঘুমের ওষুধ একসঙ্গে পেলেন?
ঘুম না হওয়ায় কয়েক মাস ধরে চিকিৎসকের পরামর্শে ঘুমের ওষুধ খাচ্ছিলাম। তাই বাসায় দুই পাতা ঘুমের ওষুধ ছিল। শনিবার বিকেলে জেদের বশে তা থেকে কয়টি খেয়েছিলাম মনে নেই। এরপর তো অসুস্থ হয়ে পড়ি।
৬০টি না?
মাথা খারাপ! ৬০টি ঘুমের ওষুধ খেলে কেউ বাঁচে?
নানান কথা চলছে তো!
বাসায় আসার পর আমিও শুনছি। সবই গুজব। অসুস্থ হওয়ার পর কেউ কেউ আমার ভাষ্য দাবি করে সংবাদ প্রচার করেছে। অসুস্থ হওয়ার পর এই প্রথম আমি কারও সঙ্গে কথা বললাম। এর মধ্যে গত কয় দিনে আমার স্বামী, পরিবার বা শ্বশুরবাড়িকে জড়িয়ে দেখলাম অনেক কিছু ছাপ হয়েছে, প্রচার করা হয়েছে। এগুলো ঠিক নয়। অসত্য।
সুস্থ হলে নিশ্চয় আবার কাজ শুরু করবেন?
আমি গান নিয়ে থাকতে চাই। সবার কাছে আমার অনুরোধ, প্লিজ, আমাকে বাঁচতে দিন। দিন দিন আমাকে যেভাবে কোণঠাসা করে ফেলা হচ্ছে তাতে ভয় হয়, ভবিষ্যতে গান করতে পারব তো! তবে এভাবে চললে গানকে চিরদিনের মতো বিদায় জানাতেও হতে পারে। তখন স্বামী-সন্তান নিয়েই থাকব।
সূত্র প্রথম আলো