রংপুরে স্বামী-শাশুড়ির দেওয়া আগুনে দগ্ধ গৃহবধূ মারা গেছেন

Slider নারী ও শিশু

 

rangpur_196446

 

 

 

 

 

রংপুরে স্বামী-শাশুড়ির দেওয়া আগুনে মারা গেছেন গৃহবধূ তাহমিনা।

রোববার রাতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকা স্থানান্তরের  পথে মিঠাপুকুর এলাকায় তিনি মারা যান।

সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. মারুফুল ইসলাম।

এর আগে মারাত্মক দগ্ধ অবস্থায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ তার স্বামী আব্দুল মান্নানকে আটক করে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তাহমিনা যন্ত্রনায় কাতরকণ্ঠে শনিবার সাংবাদিকদের জানান, দীর্ঘ এক যুগ ধরে অনেক নির্যাতন সহ্য করে স্বামীর বাড়িতেই ছিলাম। দুই মেয়ে মুন্নী (১০) ও মুক্তার (৮) কথা ভেবে সবকিছু মুখ বুজে সহ্য করেছি। বিয়ের পর থেকেই আমার ওপর বিভিন্নভাবে শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন। শেষ পর্যন্ত তারা যৌতুকের জন্য আমার শরীরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারতে চাইলো।

এ সময় তাহমিনা সাংবাদিকদের কাছে আকুতি জানিয়ে স্বামী-শাশুড়ির শাস্তি দাবি করেন।

বৃহস্পতিবার রাতে রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের দাদোন গ্রামে তাহমিনাকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়। প্রথমে পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে শুক্রবার সকালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পুলিশ ও তহমিনার মা জীবন্নেছা বেগম জানান, ১২ বছর আগে তহমিনার সাথে দাদোন গ্রামের মনতে আলীর ছেলে আবদুল মান্নানের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি বিভিন্নভাবে শারীরিক নির্যাতন করছিল। ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে যৌতুক নিয়ে তাহমিনার সাথে স্বামী ও শ্বাশুড়ির বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে তহমিনার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন স্বামী-শাশুড়ি। এতে তহমিনার শরীরের অনেকটাই ঝলসে যায়। এসময় প্রতিবেশিরা এগিয়ে এসে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে।

তহমিনার মামা আব্দুস সামাদ বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই তহমিনার ওপর বিভিন্নভাবে শারীরিক নির্যাতন চালায় জামাই ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন। দুই মেয়ে মুন্নী ও মুক্তার কথা ভেবে সবকিছু মুখ বুজে সহ্য করেছিল তহমিনা। এতেও শেষ রক্ষা হলো না তার।’

পীরগাছা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, তাহমিনার স্বামী আবদুল মান্নানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *