চট্টগ্রাম: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে পাকিস্তানের দালাল এবং দলটিকে ইতিহাসের ডাস্টবিন আখ্যা দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
শুক্রবার সন্ধ্যায় শহীদ মিনার চত্বরে চট্টগ্রাম মহানগর জাসদের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ আখ্যা দেন।
জাসদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইনু বলেন, বাংলাদেশ এ মুহূর্তে তিনটি যুদ্ধের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। সেগুলো হচ্ছে জঙ্গি দমনের যুদ্ধ, নিজের শক্তিতে উন্নয়নের যুদ্ধ ও বৈষম্য অবসানে সুশাসনের যুদ্ধ। আমরা জঙ্গি দমনে এক চুলও ছাড় দেবো না। যুদ্ধের ভেতর দিয়ে ফয়সালা হবে দেশ কোন দিকে যাবে। এ যুদ্ধে আমাদের শত্রু খালেদা জিয়া, পাকিস্তান, বিএনপি ও জামায়াত। তাদের রাজনীতি থেকে বাংলাদেশ থেকে বাদ না দেওয়া পর্যন্ত আমরা শত্রুমুক্ত হবো না।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এখনো চক্রান্ত ছাড়েনি। এখনো বিএনপি যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নেয়। জামায়াতকে নিয়ে জঙ্গিদের দিয়ে খালেদা জিয়া ক্ষমতা দখলের পাঁয়তারা করছে। দেশকে শান্তি, উন্নয়ন, গণতন্ত্র, অসাম্প্রদায়িক বৈষম্য মুক্তির ধাপে নিয়ে যেতে হলে চার শত্রুকে ধ্বংস করতে হবে। এদের সঙ্গে কোনো মিটমাট নয়। মানুষ পোড়ানোর খুনি খালেদা জিয়াকে আদালতে দাঁড়াতে হবে।
তিনি বলেন, শুধু জামায়াত নিষিদ্ধ করলেই আমরা শত্রুমুক্ত হবো না। জামায়াত বন্ধ করলে জঙ্গি উৎপাদন শেষ হয়ে যাবে না। জামায়াত আমাদের জন্য বিপদ। তবে বিএনপি থেকে গেলে আবার জঙ্গি উৎপাদন শুরু হবে। আজ যদি বিএনপি জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করে তবে জামায়াত লেজ গুটিয়ে পালাবে।
মন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া পাকিস্তানের দালাল। উনি এখন পাকিস্তানের পক্ষে ঘোমটা ফেলে দিয়েছেন। বিএনপি এখন বিএনপি এখন ইতিহাসের ডাস্টবিন, ময়লার টিন, ইতিহাসের ভাগাড়। এ ডাস্টবিন নিয়ে আমরা গণতন্ত্রের পথে হাঁটতে পারবো না।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার চক্রান্ত এখনো অব্যাহত আছে। একাত্তরে পাকিস্তানিদের সঙ্গে মিটমাট হয়নি। এখনো হবে না। জান থাকতে কোনো খুনিকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে হালাল হতে দেবো না। মহাজোট সরকার বেঈমানদের সঙ্গে, একাত্তরের খুনি, নারী নির্যাতনকারীদের সঙ্গে আপস করবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহস আছে। তিনি নিজের অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার মধ্য দিয়ে সেটি প্রমাণ করেছেন।
বিএনপি ও খালেদা জিয়ার প্রতি এখনো যাদের মোহ আছে তাদের উদ্দেশে তথ্যমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া আর স্বাভাবিক রাজনীতিতে ফিরে আসতে পারবে না। আপনারা খালেদা জিয়া সঙ্গ ত্যাগ করুন। অনেকে বলেন, আমি নাকি বাড়াবাড়ি করি। রাজাকারকে রাজাকার বলা কি বাড়াবাড়ি? খুনিকে খুনি বলা, চোরকে চোর বলা বাড়াবাড়ি? তেঁতুল হুজুরকে তেঁতুল হুজুর বলা কি বাড়াবাড়ি? আমি বলবো, খালেদা জিয়া তুমি আগুন সন্ত্রাসী। আমি মাঝামাঝি পথে হাঁটি না।
জাসদ সম্পর্কে তিনি বলেন, জাসদ সোনার বাংলাদেশ গড়ার সোনার কারিগর। যারা মহাজোটের ঐক্য নষ্ট করতে চায় তারা দেশের ভবিষ্যৎ নষ্ট করতে চায়।
সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন জাসদের কার্যকরী সভাপতি মঈনউদ্দিন খান বাদল। অতিথি ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, সংসদ সদস্য শিরিন আকতার ও নাজমুল হক প্রধান, জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা নাইমুল হাসান জুয়েল, মোহাম্মদ খালেদ প্রমুখ। বক্তব্য দেন জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইন্দু নন্দন দত্ত।
সম্মেলনে আবু বকর সিদ্দিককে সভাপতি ও জসিম উদ্দিন বাবুলকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।
সকালে তথ্যমন্ত্রী জাকির হোসেন সড়কের বাংলাদেশ টেলিভিশনের চট্টগ্রাম কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি শিল্পী, কলাকুশলীদের মুখে কেন্দ্রের অনিয়ম, দুর্নীতি, অভিযোগ শুনেন এবং একটি জামরুল গাছের চারা রোপণ করেন।