মারাত্বক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে দেশের মানুষ

Slider জাতীয়

 

1453459228

 

 

 

 

প্রতিদিনের রান্নার জন্য অপরিহার্য উপকরণ কাঁচামরিচের ৯১ শতাংশ নমুনার মধ্যেই মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর মাত্রার কীটনাশকের উপস্থিতি পেয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষকরা। এছাড়া বেগুন, টমেটো, শিমসহ বিভিন্ন সবজি ও শুঁটকিতে পেয়েছেন ক্ষতিকর মাত্রার কীটনাশকের অস্তিত্ব।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব খাবার গ্রহণে কিডনি, যকৃত ও অস্থিমজ্জার কার্যকারিতা হারানোসহ গর্ভবতী মায়েদের প্রতিবন্ধী শিশু জন্মদানের আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে দেশে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে দ্রুত আইন কার্যকরের পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

বিষমুক্ত খাদ্য উৎপাদনের পাশাপাশি খাদ্যদ্রব্যে কীটনাশকের অস্তিত্ব পরীক্ষা করতে, শাক-সবজি, ফল ও মাছের উপর নিয়মিত গবেষণা করে থাকে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট-বিএআরআই।

সম্প্রতি, প্রতিষ্ঠানটির কীটতত্ত্ব বিভাগের পেস্টিসাইড অ্যানালাইটিক্যাল ল্যাবরেটরির গবেষকরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ও রাজধানীর বেশ কয়েকটি শপিংমল থেকে সংগ্রহ করা সবজিতে ক্ষতিকর মাত্রায় কীটনাশকের উপস্থিতি পেয়েছেন।

এরমধ্যে কাঁচা মরিচের ৯১ শতাংশ, বেগুন-টমেটো-শিমের ২৭ শতাংশ এবং শুঁটকির ৩৩ শতাংশ নমুনায় রয়েছে কীটনাশকের উপস্থিতি। তবে আটা, ময়দা, চাল, এবং আলুর মধ্যে কীটনাশকের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

বিএআরআই-এর কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. সুলতান আহমেদ বলেন, ‘কাঁচা মরিচের ৯১ শতাংশ নমুনার মধ্যে কীটনাশকের অবশিষ্টাংশ পাওয়া গেছে। শুঁটকির মধ্যে নিষিদ্ধ বালাইনাশক সেগুলো পাওয়া গেছে। বেগুন, বরবটি, শিম, করলা এই সবজিগুলোতে সবচেয়ে বেশি কীটনাশক পাওয়া গিয়েছে’।

এসব খাদ্য গ্রহণে কিডনি ও যকৃত নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি প্রতিবন্ধী শিশু জন্মদানের আশঙ্কার কথা জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা, খাবার গ্রহণে নানা পরামর্শ দেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক আ ব ম ফারুক বলেন, ‘কিডনি, লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যে শিশু মায়ের শরীরের ভেতর বেড়ে উঠছে তার মাংসপেশি, হাড় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শারীরিক, মানসিক বিকলাঙ্গ শিশু বা প্রতিবন্ধী শিশু জন্ম নিচ্ছে’।

ড. মো. সুলতান আহমেদ বলেন, ‘দুই শতাংশ লবণ পানিতে যদি শুঁটকি মাছ ভিজিয়ে রাখা হয় তাহলে কীটনাশকের প্রভাব ৩০-৪০ শতাংশ দূরীভূত হয়। সবজির ক্ষেত্রে টেপের পানিতে ধুয়ে নিলে কীটনাশকের প্রভাবমুক্ত হয়’।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এ বিষয়ে অধিক গবেষণার পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তা বাড়াতে আইন কার্যকরসহ, কীটনাশক ব্যবহারে মাঠ পর্যায়ে কঠোর নজরদারি দরকার।

খাবার গ্রহণে সবাইকে সচেতন থাকার পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি নিয়ম মেনে কীটনাশক ব্যবহার করা না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী। পোকা মাকড় দমনের পাশাপাশি বিষমুক্ত খাদ্যসামগ্রী উৎপাদনে প্রাকৃতিক পদ্ধতির উপর অধিক গুরুত্ব দেয়ার কথাও জানান কৃষিমন্ত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *