ষ্টাফ করেসপনডেন্ট
গ্রাম বাংলা নিউজ২৪.কম
গাজীপুর: গাজীপুর সদর উপজেলার ভাওয়ালগড়ে পুলিশের তত্ত্বাবধানে চলছে ইয়াবা ব্যবসা। যারা এর প্রতিবাদ করছেন তাদেরকেই গ্রেফতার করা হচ্ছে এবং ইয়াবার গল্প সাজিয়ে মামলা দেয়া হচ্ছে।
পুলিশের অভিনব এই ইয়াবা হয়রানি থেকে রেহাই পাচ্ছেন না ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষ। ইয়াবা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে মোটা অংকের টাকা। পুলিশের এই ইয়াবা ব্যবসা ভাওয়ালগড় মানুষের কাছে এখন বড় আতংকের নাম।
রবিবার গাজীপুর সদর উপজেলার ভাওয়ালগড় ইউনিয়নের ভবানীপুর বাজারে সরেজমিনে কথা হয় ওই এলাকার আহসান উল্লাহ মেম্বার, খলিল প্রধান, শাহিন, মামুন, রহমসহ ১৫/২০ জনের সাথে। তারা সবাই এই প্রতিবেদককে জানান, জয়দেবপুর থানাধীন হোতাপাড়া ফাঁড়ির এএসআই রিয়াজ, এএসআই কৃপা সিন্দু তরফদারের সরাসরি তত্ত্বাবধানে ইউনিয়নের ভবানীপুর বাজার, ভবানীপুর চৌরাস্তা, ভবানীপুর রোডের ব্রীজ, মনিপুর বাজার, পিংগাইলসহ ২০/২৫টি স্পটে অবাধে চলছে ইয়াবা ব্যবসা।
একটি সূত্র জানায়, ১৫/১৬ জনের একটি সংবদ্ধ চক্র ইয়াবা গ্রুপের মাধ্যমে এ দারোগাদ্বয় এই ব্যবসা পরিচালনা করছেন। তারা মোবাইল ও মটর সাইকেলের সাহায্যে ফ্লাইং ব্যবসা করছেন। ক্রেতা ও বিক্রেতার কাছে মোবাইলের সাহায্যেই পৌঁছে যাচ্ছে ইয়াবা ও টাকা। এই ইয়াবা গ্রুপকে অর্থ ও মটর সাইকেল দিয়ে সহায়তা করছে এই দারোগারা। বিনিময়ে দারোগাদ্বয় মাসে পাচ্ছে ব্যবসার একটি বড় অংশ।
পুলিশের এ অবৈধ ও অনৈতিক কাজের প্রতিবাদ করার কারণে এমদাদ হোসেন নামের এক উচ্চ শিক্ষিত যুবককে সহকারী দারোগা কৃপা সিন্দু তরফদার সম্প্রতি গ্রেফতার করে। পরে তার কাছ থেকে ১২ পিছ ইয়াবা পাওয়া গেছে মিথ্যা গল্প সাজিয়ে ও বদনাম দিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা করে। এমনিভাবে এলাকার বানিয়াচালার যুবক সামছুল পিতা আলাউদ্দিন, হেলাল পিতা আক্কেল আলী, হোটেল ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম, আলআমীন পিতা আমির উদ্দিন, কাজল, শিতলসহ ১৫/২০ জনকে সম্প্রতি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা থেকে এ দারোগাদ্বয় গ্রেফতার করে। পরে ইয়াবা মামালায় ফাঁসিয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়।
ভাওয়ালগড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী সালাউদ্দিন সরকার এসব ঘটনার সত্যতা শিকার করে বলেন, হোতাপাড়া ফাঁড়ির এই দুই পুলিশ কর্মকর্তার ইয়াবা ব্যবসার সম্পৃক্ততায় আমরা চরম আতংকে আছি।
তিনি আরো জানান, ইয়াবার নেশায় এলাকার যুব সমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। নেশার টাকা যোগাড় করতে এলাকার স্কুল-কলেজের অনেক শিক্ষার্থী বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এই নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।
এক প্রশ্ন উত্তরে তিনি জানান, যারা ইয়াবা বিক্রি করে পুলিশ তাদেরকেই মটর সাইকেলের পিছনে বসিয়ে এলাকায় ঘুরে বেড়ায়। পুলিশের সাথে ইয়াবা বিক্রেতাদের অবাধ উঠাবসা, চলাফেরা এবং গভীর সখ্যতা থেকেই বুঝা যায় এই ব্যবসার সাথে পুলিশ সরাসরি জড়িত। তবে দারোগাদ্বয় তাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এসকল বিষয়ে হোতপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক(এসআই) হারুনর রশিদেও সাথে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।